দুই মাসেও কোনও খবর নেই চুরি যাওয়া ২০ কেজি সোনার

0

সুন্দর সাহা॥ দুই মাসেও কোনও খবর নেই বেনাপোল কাস্টমসের লকার থেকে চুরি যাওয়া ২০ কেজি স্বর্ণের। এ ঘটনায় জড়িত কাউকে আটক বা চুরি হওয়া স্বর্ণ উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কাস্টমস সংশ্লিষ্টরাসহ ব্যবসায়ীরা। তবে পুলিশ বলছে, স্বর্ণ চুরির বিষয়টি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ বা সিআইডি তদন্ত করছে। তবে সোনা চুরির ঘটনায় শর্ষের মধ্যে ভূত থাকার অভিযোগ সব মহলের।
জানা যায়, বেনাপোল বন্দরে চোরাকারবারিদের কাছ থেকে জব্দ করা স্বর্ণসহ মূল্যবান সম্পদ জমা রাখা হয় কাস্টমস হাউজের লকারে। গত ৮ নভেম্বর সকালে লকার থেকে ২০ কেজি স্বর্ণ চুরির বিষয়টি জানাজানি হয়। তবে লকারে থাকা আরও স্বর্ণ, বৈদেশিক মুদ্রা ও অন্যান্য সম্পদ অক্ষত অবস্থায় ছিল। এ নিয়ে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ পোর্ট থানায় একটি মামলা করে। পুলিশ চোর সন্দেহে প্রথমে কাস্টমসের ছয় জনকে ধরলেও পরে তাদের ছেড়ে দেয়। মামলার কোনও অগ্রগতি না হওয়ায় ২৭ নভেম্বরে মামলা চলে যায় সিআইডিতে। তবে দুই মাস পরও স্বর্ণ চুরির রহস্য উন্মোচন হয়নি। জড়িতদের কাউকে শনাক্তও করতে পারেনি পুলিশ।
গত ৮ নভেম্বর সকালে বেনাপোল কাস্টমস অফিসে এসে কর্মকর্তারা দেখেন কে বা কারা কাস্টমসের লকার খুলে ২০ কেজি স্বর্ণ চুরি করে নিয়ে গেছে। তবে সেখানে আরো স্বর্ণ, ডলার ও মূল্যবান সম্পদ ছিল, সেগুলো অক্ষত ছিল। বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বলেন, ‘সিসি ক্যামেরার নিরাপত্তার মধ্যে চুরির ঘটনা ঘটেছে। এখন তথ্য-প্রযুক্তির সময় প্রশাসন যদি আন্তরিক হয়ে কাজ করে চোর ধরা কোনও কঠিন বিষয় হওয়ার কথা না। সদীর্ঘদিন পার হলেও এখনও কেন কাইকে আটক করা বা স্বর্ণ উদ্ধার করা যায়নি সেটায় বড় প্রশ্ন।’ আজমিরী ইন্টান্যমনালের মালিক সিএন্ডএফ ব্যবসায়ী ও আমদানিকারক আবু তাহের ভারত বলেন, ‘চাঞ্চল্যকর এই চুরির সাথে যারাই জড়িত থাক তাদের আইনের আমলে আনতে হবে। উদ্ধার করতে হবে খোয়া যাওয়া সোনা। কাস্টমসের স্বর্ণ চুরির ঘটনায় অপরাধীকে ধরতে ব্যর্থ হলে আগামীতে এমন ঘটনা আবারও ঘটবে।’ কাস্টমস সিএন্ডএফ ব্যবসায়ের সাথে জড়িত ক্ষতমাসীন দলের এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘বেনাপোলের সোনা চুরি শর্ষের মধ্যে ভূত থাকার সম্ভাবনা অনেক বেশি। আগে সেই বিষয়টির তদন্ত করে দেখা জরুরী।’ বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার বেলাল হোসাইন চৌধুরী মিডিয়াকে বলেন, ‘স্বর্ণ চুরির ঘটনা কাস্টমসের সব অর্জনকে যেন ম্লান করে দিয়েছে। চোরকে দ্রুত ধরা দরকার। যেন আর কেউ ভবিষ্যতে সরকারের কোনও সম্পদ চুরি করতে সাহস না পারে।’ তবে বেনাপোল কাস্টমসের অর্জন বলতে তিনি কি বুঝিয়েছেন সেটা সিএন্ডএফ ব্যবসায়ীদের কাছে অস্পষ্ঠ বলে জানা যায়। বেনাপোল পোর্ট থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন খান বলেন, ‘এখন পর্যন্ত স্বর্ণ উদ্ধার বা ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। তবে মামলাটি পোর্ট থানা থেকে সিআইডিতে হস্তান্তর করা হয়েছে। এখন তারা বিষয়টি দেখছেন।’ যশোর জেলা সিআইডির ইন্সপেক্টর জাকির হোসাইন বলেন, ‘উল্লেখযোগ্য কোনও অগ্রগতি নাই। তবে আমরা কিছু তথ্য পেয়েছি। তদন্তের স্বার্থে এগুলো প্রকাশ করা হচ্ছে না।’