ইয়াসিনরা জনগন ও পুলিশের শত্রু

0

যশোরে পুলিশ পরিচয়ে ব্যবসায়ী অপহরণ, মুক্তিপণ আদায়, মোটরসাইকেল, টাকা ছিনতাই, মাদক পাচারসহ নানাবিধ অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে সংবাদপত্রে হরহামেশাই খরব হয়। বিষয়টি নিয়ে আইন-শৃঙ্খলা সভায় আলোচনা হয়েছে বহুবার। জেলা পুলিশ কর্তারা সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলেই প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছেন বারবার। তবে, তাদের উত্তর হয়েছে পুলিশের কেউ এমন কাজে জড়িত নয়। অপরদিকে, ধরার চেষ্টা চলছে। আটক হলেই সব প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে। এটি একটি চক্র বলেও পুলিশ কর্তারা জানিয়েছেন সব সময়। সংবাদ মাধ্যম কর্মীরাও একই রকম ধারণা করে তাই বিশেষ কিছু লেখা থেকে বিরত থাকেন। অবশেষে পুলিশের বক্তব্য সত্য হয়েছে। তারা পুলিশ পরিচয়ে পুলিশের সরঞ্জাম নিয়ে মাদক পাচারে জড়িত থাকা এক যুবককে আটক করেছে। তার কাছ থেকে পুলিশ লেখা একটি মোটরসাইকেল, একটি হাতকড়া ও পুলিশ লেখা ব্যাগ উদ্ধার করেছে। ইয়াছিন আরাফাত নামের ওই যুবক পুলিশ না হলেও এক পুলিশ অফিসারের গাড়ির চালক ও পুলিশের সোর্স ছিল। সঙ্গত কারণে তার সাথে কোনো পুলিশের যোগসূত্র থাকতে পারে বলে সন্দেহ করা অমূলক নয়। এ কারণে আমরা মনে করি, ইয়াছিন আরাফাতকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করে পুরো গ্যাং খাঁচায় বন্দি করা।
লোকসমাজে সোমবার প্রকাশিত হ্যান্ডকাপ, ফেনসিডিল ও মোটরসাইকেলসহ ‘যশোরে আটক পুলিশ কর্তার গাড়িচালক’ শীর্ষক খবরে বলা হয় শনিবার বিকেলে যশোর-চৌগাছা সড়কের আব্দালপুর বাজারে ডিবি এসআই সোলাইমান আক্কাস অভিযান চালান। এ সময় ‘পুলিশ’ লেখা মোটরসাইকেল, ব্যাগ ও হ্যান্ডকাপসহ হাজির হয় ইয়াসিন আরাফাত। সে নিজেকে পুলিশ বলে পরিচয়ও দেয়। কিন্তু ডিবি এসআই আক্কাস সন্দিহান হয়ে তার কাছে পরিচয়পত্র চান। পরিস্থিতি বিরূপ দেখে ইয়াছিন সত্য প্রকাশ করে। সে জানায়, যশোর কোতয়ালির সিভিল টিমের বহুল আলোচিত ও বিতর্কিত এসআই হাসানুর রহমান হাসানের প্রাইভেট চালক ছিলেন। হাসানের বদলির পর পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ করে। ডিবি অফিসার প্রতারক নিশ্চিত হয়ে তল্লাশি চালান এবং ৫০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করেন। ইয়াসিন জানিয়েছে, তার বাড়ি খিতিবদিয়া গ্রামে। ডিবি পুলিশ রোববার তাকে রিমান্ড আবেদন জানিয়ে আদালতে প্রেরণ করে। আমরা মনে করি, বছরাধিককাল ধরে যশোরে পুলিশ পরিচয়ে অপরাধের পর অপরাধ করে পুলিশ বিভাগের বদনাম করা চক্র ধরতে ইয়াসিন আরাফাতকে অন্যতম একটি অস্ত্র হতে পারে। ইয়াসিনের কাছ থেকেই জানা যেতে পারে এই চক্রের প্রকৃত পুলিশের কে কে আছে। কারণ, ইয়াসিন যেহেতু এসআই হাসানের বহু বিতর্কিত কর্মের সাথী এবং পুলিশের সোর্স ছিল, সেহেতু তার পক্ষে অনেক কিছুই জানা সম্ভব। আমাদের ধারণা, হ্যান্ডকাপের পেছনেও কোন পুলিশের ভূমিকা থাকতে পারে। থাকতে পারে ইয়াসিনের নেতৃত্বে পুলিশ পরিচয়ে অপরাধী চক্র। অস্ত্র থাকাও অস্বাভাবিক নয়। সবচেয়ে বড় কথা পুলিশের বদনামকারীদের সন্ধান পাওয়া সম্ভব। আমরা তাই আশা করবো, পুলিশ তার নিজের প্রয়োজনেই ইয়াসিনের আদ্যপান্ত উদ্ঘাটন করবে। আমরা মনে করি, ইয়াসিনরা পুলিশ ও জনগণের শত্রু। এদের বিচার হওয়া প্রয়োজন।