মহাসমারোহে ঝাড়খন্ডের মুখ্যমন্ত্রীর শপথ

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ ঝাড়খন্ডের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন আঞ্চলিক দল জেএমএম-এর নেতা হেমন্ত সরেন। রাহুল গান্ধী ও মমতা বন্দোপাধ্যায়সহ বেশ কিছু জাতীয় নেতার উপস্থিতিতে মহাসমারোহে শপথ নেন তিনি। কংগ্রেস-আরজেডির সঙ্গে জোট করে দ্বিতীয়বারের মতো রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী হলেন রাজ্যটির আঞ্চলিক দলনেতা হেমন্ত।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ঝাড়খন্ডের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে হেমন্ত সরেনের আজকের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে বিরোধীদলগুলোর একতা প্রদর্শিত হল। রাঁচির মোরাবাদি ময়দানে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন রাজ্যপাল দ্রৌপদী মুর্মূ। রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রীর দফতর আজকের দিনটিকে ‘সংকল্প দিবস’ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে।
ঝাড়খন্ডের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে হেমন্ত সরেনের শপথে ভারতীয় নেতাদের ছোটখাটো এক সমাবেশও হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরি, আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব এবং ডিএমকের এমকে স্তালিনসহ অনেকে।
রোববার হেমন্ত সরেনের সঙ্গে রাজ্য মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন কংগ্রেসের আলমগীর আলম ও রামেশ্বর ওরাও এবং আরজেডির সত্যানন্দ ভোক্তা। মহারাষ্ট্রে কংগ্রেসের জোটসঙ্গী ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টির (এনসিপির) প্রধান শরদ পাওয়ার এবং কংগ্রেস দলীয় সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি টুইট করে নতুন মুখ্যমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানান।
শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের পর কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী এক টুইট বার্তায় লেখেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সরেন এবং কংগ্রেস দলীয় মন্ত্রীদের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলাম আজ। আমি আত্মবিশ্বাসী ঝাড়খন্ডের নতুন সরকার মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করে রাজ্যকে শান্তি ও উন্নতির পথে নিয়ে যাবে।’
শপথগ্রহণের আগে টুইটারে এক ভিডিও বার্তায় হেমন্ত সরেন বলেন, ‘নতুন সরকারের কাছে আপনাদের প্রত্যাশা সম্পর্কে আমি অবহিত। আমি আপনাদের সবাইকে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।’ গত সোমবার ঘোষিত ফলাফলে ৮১ আসনের বিধানসভার ৪৭টি আসন দখল করে জেএমএম-কংগ্রেস-আরজেডি জোট।
নির্বাচনে ভরাডুবি হয় বিজেপির। তারা পায় মাত্র ২৫টি আসন। যেখানে গতবারের চেয়ে ২২ আসন বেশি পেয়ে কংগ্রেস-জেএমএম-আরজেডি জোট ৪৭ আসনে জয়ী হয়েছে সেখানে ৭৫ আসনে জয়ের লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নামা মোদি-অমিতের বিজেপি ১২টি খুঁইয়েছে। মোদি নিজে প্রচারণা চালিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি।
ঝাঢ়খন্ডে দুবারের মুখ্যমন্ত্রী শিবু সরেনের পুত্র হেমন্ত সরেন অল্প বয়সে রাজনীতিতে আসেন। ২০০৯ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী অর্জুন মুন্ডার সরকারে উপ-মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। বিজেপির সঙ্গে সরকার গড়েছিল দলটি। পরে ২০১৩ সালে জেএমএম সরকার থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করলে রাজ্যটিতে কেন্দ্রীয় শাসন জারি হয়।
ওই বছরের জুলাইয়ে হেমন্ত সরেন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। মাত্র ৩৮ বছর বয়সে শপথ নিয়ে ভারতের সর্বকনিষ্ঠ মুখ্যমন্ত্রী হন তিনি। তবে ওই মেয়াদে মাত্র ১৭ মাস মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন তিনি। ২০০০ সালে গঠিত হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত নয়টি সরকার পেয়েছে ঝাড়খন্ডের মানুষ। তিনবার সেখানে রাষ্ট্রপতির শাসন জারি হয়েছে।
গত ৩০ নভেম্বর থেকে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাঁচ দফায় ঝাড়খন্ড বিধানসভার ভোটগ্রহণ হয়। সোমবার ফল ঘোষণা করা হয়। অবশ্য আগেই বুথফেরত জরিপে জেএমএম-কংগ্রেস-আরজেডি জোট ক্ষমতায় আসছে বলে ইঙ্গিত দেয়া হয়েছিল। তবে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়েরও ইঙ্গিত ছিল বুথফেরত জরিপে।
২০০০ সালে গঠিত হওয়ার পর ঝাড়খন্ডের চতুর্থ বিধানসভা নির্বাচন এটি। সম্প্রতি মহারাষ্ট্রে অনেক নাটকের পর শিবসেনা নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস জোটের কাছে হেরে রাজ্যের ক্ষমতা হারিয়েছে বিজেপি। তাই আয়তনে ছোট হলেও পশ্চিমবঙ্গ লাগোয়ো ঝাড়খন্ডের দিকে নজর ছিল