যবিপ্রবি শিক্ষার্থী ও গ্রামবাসীর সংঘর্ষে রাতে রণক্ষেত্র বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, আহত ২৫

0

যবিপ্রবি সংবাদদাতা ।। যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) শিক্ষার্থীদের সাথে গতকাল সন্ধ্যায় সংঘর্ষ বাধে স্থানীয় আমবটতলা বাজারের ব্যবসায়ীসহ গ্রামবাসীদের। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৫ জন শিক্ষার্থী আহত হন।

এদিকে এ ঘটনায় আইন-শৃঙ্খলা বাহি-নীর দেরিতে উপস্থিতির প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ে মেডিকেল সেন্টারে উপাচার্য ও ট্রেজারারকে অবরুদ্ধ করেন শিক্ষার্থীরা।

রাত ১১টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তারা অবরুদ্ধ ছিলেন। ঘটনাস্থলে ছিল সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

প্রত্যক্ষদর্শীসূত্রে জানা যায়, একজন নারী শিক্ষার্থী আটবটতলা বাজারে এক দোকানে মোবাইল ফোন মেরামত করতে গেলে সেই দোকানি তাকে উত্ত্যক্ত করেন। এ নিয়ে ওই নারী শিক্ষার্থী তার সহপাঠীদের জানালে কয়েকজন শিক্ষার্থী সেই দোকানে এসে প্রতিবাদ জানান।

এক পর্যায়ে দোকানিকে মারধর করা হয়। এসময় বাজারের অন্যান্য ব্যবসায়ী ও স্থানীয় গ্রামবাসী শিক্ষার্থীদের ধরে মারধর করে। পরবর্তীতে এই ঘটনা সংঘর্ষে রূপ নেয়।

এসময় বিশ্বিবদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে স্থানীয়দের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। গ্রামবাসী রাস্তা অবরোধ করে এবং বিভিন্ন দ্রব্য দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমিকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থীরা জানান, আমাদের এক জুনিয়র মেয়ে জানায় যে, মোবাইল ঠিক করতে গেলে মোবাইল দোকানদার তাকে নানাভাবে উত্ত্যক্ত করে। এটা শোনার পর আমরা দোকানদারকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গেলে, আশেপাশের স্থানীয়রা মিলে আমাদের উপর হামলা চালানো শুরু করে। আমাদের সমানে কিল ঘুষি দিতে থাকে। পরে আমরা কোনো রকম দৌড়ে পালিয়ে আসলে তারা পিছন থেকে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে।

এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্ট্ররিয়াল বডি চেষ্টা করেও তারা ব্যর্থ হন। পরবর্তীতে এ সংঘর্ষ ব্যাপক আকার ধারণ করে। সংঘর্ষের তিন ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও কোন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত না হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করেন শিক্ষার্থীরা।

সংঘর্ষের এক পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. আব্দুল মজিদ, কোষাধ্যক্ষ, প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেন। পরবর্তীতে রাত ৯ টার পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এরপর আহত শিক্ষার্থীদের দেখতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে যান উপাচার্য, ট্রেজারারসহ আরো অনেকে। এদিকে ঘটনার তিন ঘণ্টা হয়ে গেলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত করতে না পারায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগের দাবিতে তদেরকে অবরুদ্ধ করেন শিক্ষার্থীরা।

প্রক্টর ড. মো: ওমর ফারুক বলেন, একটি ছাত্রীকে ইভটিজিং করাকে কেন্দ্র করে এই সংঘর্ষ ঘটে। আমাদের প্রক্টরিয়াল বডিসহ অনেকে শিক্ষক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেছি কিন্তু আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী আসতে দেরি করায় পরিস্থিতি ঘোলাটে হয়ে যায়। সংঘর্ষে আমাদের বেশ কিছু শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। এখন শিক্ষার্থীদের একাংশ ভিসি স্যারকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে।