৫৪ দিন ধরে ওসি শূন্য বেনাপোল পোর্ট থানা

0

বেনাপোল (যশোর) সংবাদদাতা॥ যশোরের সীমান্তঘেঁষা গুরুত্বপূর্ণ এলাকা বেনাপোল পোর্ট থানায় টানা ৫৪ দিন ধরে ওসি নেই। ১৯ সেপ্টেম্বর আগের অফিসার ইনচার্জ রাসেল মিয়া বদলি হওয়ার পর নতুন কাউকে নিয়োগ না দেওয়ায় সীমান্তের এই থানাটি কার্যত অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে। এছাড়াও নেই পরিদর্শক (তদন্ত)। ফলে বাড়ছে চুরি, ছিনতাই, প্রতারণা, মাদক ও চোরাচালান।

থানা সূত্রে জানা যায়, বেনাপোল পোর্ট থানায় দীর্ঘ সাত বছর ধরে পরিদর্শক (তদন্ত) পদটি শূন্য। ফলে ছোটখাটো মামলার তদন্তও নিয়মিতভাবে সম্পন্ন করা যাচ্ছে না। বর্তমানে থানার এসআই মানিক কুমার সাহা ভারপ্রাপ্ত ওসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করলেও তিনি স্বীকার করেছেন, কবে নাগাদ নতুন ওসি আসবেন তা আমি বলতে পারবো না। তবে আমরা সাধ্যমতো কাজ করছি।

ওসি ও পরিদর্শক (তদন্ত) শূন্য অবস্থায় বেনাপোলের মানুষ এখন কার্যত অপরাধীদের দয়ার ওপর নির্ভরশীল। গত এক মাসেই সংঘটিত হয়েছে একাধিক উল্লেখযোগ্য অপরাধ। গত ২৭ অক্টোবর বেনাপোল বাজারের কাপড় ব্যবসায়ী নূরুল ইসলামের দোকান ভেঙে প্রায় ৩ লাখ টাকার মালামাল চুরি হয়। তার আগে ২ নভেম্বর বেনাপোল চেকপোস্ট এলাকায় খুলনা থেকে আসা এক যাত্রীর কাছ থেকে ৬০ হাজার টাকা ছিনতাই হয়। ৫ নভেম্বর রাতে পুটখালী ইউনিয়নের গাতিপাড়া গ্রামে দুই বাড়িতে ডাকাতির চেষ্টা হয়। স্থানীয়রা ধাওয়া দিলে ডাকাতরা পালিয়ে যায়। ৮ নভেম্বর চেকপোস্ট সড়কের পাশে ফেনসিডিল বোঝাই এক মোটরসাইকেলসহ দুই পাচারকারীকে স্থানীয়রা ধরে পুলিশের হাতে তুলে দিলেও মামলার অগ্রগতি নেই। ৯ নভেম্বর বেনাপোল রেলস্টেশন এলাকায় দুই দালাল চক্রের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত তিনজন আহত হন।

ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছাতে বিলম্ব হয়। এছাড়াও বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তদন্ত বা মামলা প্রক্রিয়া অগ্রসর হয়নি। কারণ থানায় সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতাসম্পন্ন কর্মকর্তার অনুপস্থিতি।

নাম না প্রকাশের শর্তে স্থানীয় এক রাজনৈতিক নেতা বলেন, ওসি না থাকায় কেউ ভয় পায় না। পাচারকারীরা এখন খোলামেলাভাবে কাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।

ওসির দায়িত্বে থাকা এসআই মানিক কুমার সাহা বলেন, আমি ভারপ্রাপ্ত ওসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় টহল জোরদার করেছি। অপরাধ ঘটলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করছি। তবে নতুন ওসি কবে আসবেন, সেটা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বলতে পারবেন।

যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) আবুল বাশার বলেন, বেনাপোল পোর্ট থানায় ওসি নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে। খুব দ্রুতই নতুন কর্মকর্তা পাঠানো হবে। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত টহল ও গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। কোনো অপরাধী ছাড় পাবে না।