কেশবপুরে আগাম সবজি চাষে ব্যস্ত কৃষক

0

জয়দেব চক্রবর্তী, কেশবপুর (যশোর)॥ কেশবপুরে আগাম জাতের ফুলকপি ও বাঁধাকপি চাষে কৃষকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। চাষ করছেন অন্যন্য সবজিও। শেষ মুহূর্তে বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় আগাম জাতের কপির যেমন ভালো ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, তেমন অন্যান্য জাতের সবজিরও ভালো ফলনের সম্ভাবনা আশা করছেন তারা। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠে মাঠে গিয়ে ভালো ফলনের জন্যে কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছেন।

উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, খরিপ-২ মওসুমে এ উপজেলায় ৬৩২ হেক্টর জমিতে সবজি আবাদ করা হয়। এছাড়াও ঘেরের বেঁড়িবাধে প্রায় ১৫০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন প্রজাতির সবজির আবাদ হয়েছে। এরমধ্যে বাঁধাকপি, ফুলকপি, লাউ, মিষ্টি কুমড়া, চাল কুমড়া, টমেটো, মরিচ, ঢেঁড়শ, পুইশাক, বেগুন, ধুন্দল, কুশিসহ হরেক রকমের সবজি চাষ হয়েছে। গেল বছর কৃষকরা আগাম জাতের বাঁধাকপি, ফুলকপি ও মুলার আবাদ করে ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হয়। চলতি বছর ভালো দামের আশায় কৃষকরা আবারও আশায় বুক বেঁধে আগাম জাতের এসব সবজি চাষে শ্রম দিচ্ছেন। বেগুনের দাম বরাবরই ভালো হওয়ায় কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন বলে জানা গেছে। আবহাওয়াও অনুকূলে রয়েছে। ফলে সবজির ফলন ভালো হবে।

মির্জাপুর গ্রামের কৃষক আবুল হোসেন বলেন, এ বছর তিনি আগাম জাতের বাঁধাকপি ও ফুলকপির আবাদ করেছেন। ভালো ফলনের আশায় দিনরাত শ্রম দিচ্ছেন। আর কিছুদিন গেলেই কপি বাজারে বিক্রি শুরু করবো।
একই গ্রামের অপর কৃষক আব্দুল করিম বলেন, তিনি ২০ শতক জমিতে নাবি(আগাম) জাতের বাঁধাকপি ও ফুলকপির চাষ করেছেন। নিজে টেইলার্সের কাজের ফাঁকে ফাঁকে শ্রম দিচ্ছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ভালো ফলন হবে বলে তিনি আশাবাদী।

সারুটিয়া গ্রামের মাছচাষি মো. শহীদ জানান, বিলের শ শ মাছের ঘেরের বেড়িবাঁধে পেঁপে, শিম, উচ্ছে, বরবটি ও ও মাচায় লাউ-মিষ্ট কুমড়া, তরমুজসহ হরেক রকমের সবজি আবাদ করা হয়েছে। আগাম বৃষ্টিতে ঘেরের বেড়ি তলিয়ে গিয়ে সবজি নষ্ট হয়। বৃষ্টির পানি কমে যাওয়ার পর আবারও সবজির আবাদ করা হয়েছে। তিনি সবজির ন্যায্যমূল্য নিয়ে শঙ্কায় আছেন।

মজিদপুর ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা নাজমুল আলম বলেন, তার ইউনিয়নে আগাম জাতের বাঁধাকপি ৩.৫ বিঘা ও ফুলকপি ৩ বিঘা জমিতে আবাদ হয়েছে। এছাড়া এ ইউনিয়নে ১০ বিঘা জমিতে বিভিন্ন জাতের শীতকালীন সবজিসহ ৭ বিঘা জমিতে ফুলকপি ও বাঁধাকপির চাষ হয়েছে। মাঠে গিয়ে কৃষকদের মরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কৃষকরা ভালো ফলন পাবেন বলে তিনি আশাবাদী।

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, এ উপজেলায় হরেক রকমের সবজির আবাদ হয়ে থাকে। শীতকালীন সবজির ১৩ হাজার ২৭২ মেট্রিকটন ফলন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। গত বছর আলুর দাম বেশি হওয়ায় কৃষকরা কোমর বেঁধে আলুর চাষ করে। বাজারে পর্যাপ্ত আলু মজুদ থাকায় দাম না পেয়ে কৃষকরা হতাশ হন।