ভেঙে গেল সব স্বপ্ন

0

আসিফ কাজল, ঝিনাইদহ॥ ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার ভান্ডারীপাড়া গ্রামের বাতাস যেন আজ ভারী হয়ে আছে। এই গ্রামে শেষ হয়েছে এক মেধাবী কিশোরীর স্বপ্নযাত্রা। নন্দিনী রানি সরকার ওরফে তুলির মাত্র আঠারো বছর বয়সেই জীবনপ্রদীপ নিভে গেছে।

তুলির জন্ম মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার গিলোন্দ গ্রামে। ছোটবেলায় বাবাকে হারানোর পর থেকে দুই বোনের বেড়ে ওঠার স্বপ্ন ছিল অনিশ্চয়তায় ভরা। সহজ ছিল না জীবনের গল্প। তুলির চাচা গণেষ সরকার দুই বোনের দায় কাঁধে তুলে নেন। কত কষ্ট আর ত্যাগের বিনিময়ে মেয়েটিকে পড়াশোনার পথে এগিয়ে দেওয়া হয়েছিল।

কারণ সবার একটাই স্বপ্ন তুলি একদিন ডাক্তার হবে। মানুষের সেবা করবে। পরিবারের ভাগ্য বদলাবে। স্বপ্ন পূরণের পথে এক ধাপ এগিয়েও ছিলেন তিনি। ভর্তি হয়েছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজে। মেডিকেল কলেজের প্রথম বর্ষের পরীক্ষায় তিনি বাজিমাত করে প্রথমও হন। কিন্তু সেই স্বপ্ন আজ রূপান্তরিত হয়েছে শোক আর বিষাদে।

দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে ২৯ সেপ্টেম্বর নন্দিনী নানার বাড়ি ভান্ডারীপাড়ায় বেড়াতে আসেন। সপ্তমী, অষ্টমী, নবমীর আনন্দ ভাগাভাগি করে নিলেও দশমীর দিনটা ছিল তার আন্ন্দ ভাগাভাগির শেষ দিন। বান্ধবীদের সাথে বেড়াতে গিয়ে তিনি মদ পান করেন বলে তার নিকটজনরা জানান।

এরপরই শুরু হয় তার মৃত্যু যন্ত্রণা। প্রথমে তাকে শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। কিন্তু অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকদের সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে ৫ সেপ্টেম্বর ভোরে চলে যান না ফেরার দেশে।

তুলির নানা সঞ্জয় কুমার সরকার জানান, কত আশা করে মেয়েটিকে ডাক্তার বানাতে চেয়েছিলাম। অথচ সবকিছু শেষ হয়ে গেল।