সড়ক নয়, যেন খণ্ড-খণ্ড জলাশয়

0

স্টাফ রিপোর্টার॥ যশোর শহরতলীর পালবাড়ী থেকে শিক্ষা বোর্ড হয়ে মনিহার মোড় পর্যন্ত প্রায় সাড়ে চার কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটি এখন চলাচলের সম্পূর্ণ অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। মানসী সিনেমা হলের সামনে থেকে শুরু করে মার্কাস মসজিদ হয়ে শিক্ষাবোর্ড পর্যন্ত রাস্তার বিভিন্ন অংশে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। গর্তে পানি জমে গিয়ে রাস্তার চেহারা-ই পাল্টে গেছে। কয়েক দিনে থেমে থেমে বৃষ্টিতেই এই গর্তগুলো জলাশয়ে পরিণত হয়েছে।

উল্লিখিত সড়কটি যশোরসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১০ জেলার সঙ্গে সরাসরি সংযুক্ত। প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী ও শ শ যানবাহন এই পথে চলাচল করে। কিন্তু বারংবার যেনতেনভাবে সংস্কারের কারণে অল্প বৃষ্টিতেই রাস্তার বেহাল অবস্থা। প্রায় দুর্ঘটনা ঘটে। বিশেষ করে মোটরসাইকেল, রিকশা ও সিএনজিচালিত যানবাহন গর্তে পড়ে বিকল হয়ে যাচ্ছে। পানি জমে থাকায় যানবাহনের চাকা গর্তে আটকে গিয়ে তৈরি হচ্ছে যানজট।

উপশহরের বাবলাতলা এলাকার বাসিন্দা শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে এই রাস্তায় স্থায়ী কোনো সংস্কার হয়নি। বিভিন্ন সময় জনপ্রতিনিধিরা পরিদর্শনে এসে আশ্বাস দিলেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। প্রতিদিন যাতায়াত করতে গিয়ে মনে হয় যেন ডোবা পার হচ্ছি।’

একই অভিযোগ ট্রাকচালক মমিনুর রহমানেরও। তিনি বলেন, ‘এই রুট দিয়ে মাগুরা, ফরিদপুর, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, মেহেরপুরসহ আশপাশের জেলা থেকে ঢাকাগামী অসংখ্য গাড়ি যাতায়াত করে। অথচ রাস্তার করুণদশার কারণে প্রতিদিন আমাদের গাড়ির যন্ত্রাংশ নষ্ট হচ্ছে। সংস্কারে কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।’

এই সড়কের পাশেই রয়েছে যশোর শিক্ষা বোর্ড, সরকারি মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটসহ বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। প্রতিদিন শত শত শিক্ষার্থী এই সড়কে যাতায়াত করে। ফলে অভিভাবকরাও রয়েছেন চরম উদ্বেগে। রফিকুল ইসলাম নামে এক অভিভাবক জানান, ‘রাস্তাটির অবস্থার কারণে সন্তানকে পাঠিয়ে সারাক্ষণ দুশ্চিন্তায় থাকি।’

যশোর পৌরসভা এবং সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের আওতায় থাকা এই সড়কটির দিকে দীর্ঘদিন ধরে কার্যকর কোনো সংস্কার করা হয়নি। সর্বশেষ গত ঈদুল ফিতরের আগে ইট-খোয়া দিয়ে তাৎক্ষণিক চলাচলের উপযোগী করেছিল সড়ক ও জনপথ বিভাগ। এ কারণে বৃষ্টির পানিতে অল্প প্রলেপ দেওয়া পিচ উঠে বেরিয়ে এসেছে ইট-খোয়া এবং যানবাহনের চলাচলের চাপে উঠে আসছে সেগুলো। তৈরি হচ্ছে গর্ত। আর গর্তে জমে থাকা পানি রাস্তার অবস্থা আরও ভয়াবহ করে তোলে। কোথাও কোথাও পানি জমে এতটাই গভীর হয় যে বড় ধরনের দুর্ঘটনার ঝুঁকি থেকে যায়।

যশোর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘সড়কটি সংস্কারে সাড়ে ১৪ কোটি টাকার টেন্ডার হয়েছে। তবে কাজ শুরু করতে এখনো ঠিকাদার নিয়োগের অনুমোদন প্রয়োজন। অনুমোদন পেতে দুই থেকে তিন মাস সময় লাগতে পারে। এছাড়া, বৃষ্টির কারণে আপদকালীন সংস্কার কাজও সম্ভব হচ্ছে না বলে তিনি জানান।’