এবারো সিন্ডিকেটের প্রভাবে ছিট কাপড়ের দাম বেশি

0

মাসুদ রানা বাবু ॥ রমজানের দ্বিতীয় দশকের শুরুতে ধীরে ধীরে জমে উঠছে যশোরের ঈদ বাজার। এসময় ছিট কাপড়ের দোকানে ভিড় বেশি। যারা দর্জির কাজ থেকে পোশাক তৈরি করিয়ে পরতে পছন্দ করেন তাদের হাতে সময় নেই। তাই ছিট কাপড়ের দোকানে তাদেরই ভিড়।

ক্রেতাদের অভিযোগ গত বছরের তুলনায় কাপড়ের দাম অনেক বেশি। বিক্রেতারাও বিষয়টি স্বীকার করে বলছেন, বিগত সরকারের সময় যে সিন্ডিকেট এ ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতো তারা এবার আরো বেশি সক্রিয়। যার কারণে দাম অনেক বেড়ে গেছে।

যশোর শহরের এইচ এম রোডের প্রসিদ্ধ কয়েকটি দোকান ঘুরে দেখা যায়, মানভেদে দেশি পাঞ্জাবির কাপড়ের প্রতি গজের মূল্য হাকানো হয়েছে ১৬০ থেকে ৪০০ এবং ৪৫০ টাকার বেশি। আবার পাঞ্জাবির ভারতীয় কাপড়ের প্রতি গজের মূল্য হাঁকানো হয়েছে ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা। মহিলাদের (ম্যাচিং করা) এক সেট দেশিয় ওড়ান, স্যালোয়ারসহ কামিজের মূল্য এক হাজার ৬০০ থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত। আবার সেখানে ভারতীয় কাপড়ের মূল্য সর্বনিম্ন ৩ হাজার টাকা।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, রমজানের ঈদে পাঞ্জাবি কিংবা মহিলাদের থ্রি পিসের ছিট কাপড়ের সাথে শার্ট ও প্যান্টের ছিট কাপড়ও বিক্রি হচ্ছে। শার্ট এবং প্যান্টে কাপড়ের মুল্য অনেক চড়া। যেখানে দেশি একটি শার্টের ছিট কাপড়ের মূল্য প্রতি পিস ৪০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২৫শ টাকা। আবার ভারতীয় একটি শার্টের কাপড়ের পিসের মূল্য সর্বনিম্ন ১২শ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত। আবার প্যান্টের পিসের মূল্য সাড়ে ৫শ টাকা থেকে শুরু করে ৭০০ টাকা, আবার ২ হাজার টাকা থেকে আড়াই হাজার টাকা পর্যন্ত।

এইচ এম এম রোডে পাঞ্জাবির কাপড় কিনতে আসা কলেজ শিক্ষক প্রভাষক ফরিদ হোসেন জানান, ছিট কাপড়ের তৈরি পাঞ্জারিব প্রতি আমার একটা অন্য রকম আকর্ষণ কাজ করে। যে কারণে প্রতি রমজানের ঈদে ছিট কাপড় কিনে পাঞ্জাবি তৈরি করি। কিন্ত গত বছরের চেয়ে এবার ৩০০ টাকা বেশি দিয়ে পাঞ্জারি কাপড় কিনলাম।

ঈদের বেচা কেনা নিয়ে কথা হয় মামুন ট্রেডার্সের সত্ত্বাধিকারী জিসান শাহরিয়ারের সাথে। তিনি বলেন, গত বছরের চেয়ে কাপড়ের দাম অনেক বেশি। গত বছরে দেশি যে থ্রি পিসের কাপড় ১৪শ টাকায় বিক্রি করেছি। একই কাপড় এবার দোকানে পর্যন্ত আনতে খরচ হয়েছে ১৪শ টাকা।

তিনি বলেন, গেল বারের তুলনায় এবার বেচাবিক্রি ভালো। যদিও এবার একটু দেরিতে ছিট কাপড় বেচাবিক্রি শুরু হয়েছে। যেখানে বিগত দুই থেকে তিন বছর আগে রমজান শুরু ৪ থেকে ৫ দিন আগে ছিট কাপড় বেচা বিক্রি শুরু হতো। কিন্তু এবার সেখানে রমজান শুরু হওয়ার পর বেচা বিক্রি শুরু হয়েছে। বিগত বছরের চেয়ে এবার বেচাবিক্রির পরিমাণ অনেক ভালো।

বিশ্বাস টেক্সটাইলের সত্ত্বাধিকারী আব্বাস বিশ্বাস এবারের ঈদের বেচাবিক্রি নিয়ে কিছুটা হাতাশা ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, এমন সময়ে রমজানের আগেই ছিট কাপড় বিক্রি হতো। কিন্ত গেল বছর সেই অবস্থার বেশ ছন্দ পতন হয়। গেল বছর এই সময়ে বেচাবিক্রি ছিল না বললেই চলে। তবে দাম বৃদ্ধির হলেও গতবারের তুলনায় এবারের বেচাবিক্রি ভালো। দাম বৃদ্ধির জন্য তিনি সিন্ডিকেটকে দায়ী করেন।

তিনি বিগত ১৬ বছর আওয়ামী লীগের একটি সিন্ডিকেটের হাতে ব্যবসায়ীরা জিম্মি ছিল। পরিবর্তিত পরিস্থিতির পরও সেই সিন্ডিকেট রয়ে গেছে।