চালে ও তেলে সংকটে বাজার

0

শেখ আব্দুল্লাহ হুসাইন ।। সরকার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটার প্রতি ৮ টাকা বাড়ানোর পরও যশোরে তেল পাওয়া যাচ্ছে না। তবে ক্রেতাদের বেশি দামের খোলা সয়াবিন তেল পেতে সমস্যা হচ্ছে না। এদিকে আমনের ভরা মৌসুমেও দাম কমার পরিবর্তে চালের দাম বেড়েছে। বাজারে আলুর দাম স্থির থাকলেও ক্রমশই পেঁয়াজের দাম কমছে। সবজি বাজারে সরবরাহ বেড়ে দামও খানিকটা কমে এসেছে। শুক্রবার যশোরের বড় বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।
ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে গত ৯ ডিসেম্বর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বোতলজাত সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ৮টাকা বাড়িয়ে ১৭৫ টাকা ও খোলা সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ৮ টাকা বাড়িয়ে ১৫৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। যশোর বাজারে নতুন দামের সয়াবিন তেলের সরবরাহ স্বাভাবিক না হওয়ায় ক্রেতাদের বেশি দামে খোলা সয়াবিন তেল কিনতে হচ্ছে। খোলা সয়াবিন বাজারে বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১৮৫ টাকা।
গতকাল শুক্রবার বড় বাজার ঘুরে দেখা যায় খুব কম সংখ্যক দোকানে নতুন দামের বোতলজাত সয়াবিন তেল সরবরাহ করা হয়েছে। বাজারে এক লিটারের নতুন দামের সয়াবিন তেলের বোতল ১৭৫ টাকা ও ২ লিটারের বোতল ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মেঘনা গ্রুপের ফ্রেশ ফর্টিফাইড সয়াবিন তেল কোম্পানির যশোরের টেরিটোরি ম্যানেজার রবিউল ইসলাম জানান, নতুন দামের বোতলজাত সয়াবিন তেল তারা ইতোমধ্যে কিছু দোকানে সরবরাহ করেছেন। তবে আজকালের মধ্যে তারা সরবরাহ বাড়িয়ে বাজারে স্বাভাবিক পর্যায়ে আনতে পারবেন বলে তিনি আশা করেন। তবে বাজার করতে আসা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী শফিকুর রহমান জানান, ‘খোলা সয়াবিন তেল দোকানগুলোতে চাহিদামত কিনতে পারা যাচ্ছে। কারণ দোকানিদের খোলা তেল বিক্রি করে অধিক লাভ হচ্ছে।’
এদিকে আমনের ভরা মৌসুমে চালের দাম কমার পরিবর্তে এ সপ্তাহে আরও বেড়েছে। দাম বেড়েছে বাংলামতি, বিআর-২৮ ও বিআর-৬৩ চালে। বাংলামতি চালে গত সপ্তাহের থেকে কেজিতে ২ টাকা বেড়ে শুক্রবার বিক্রি হয়েছে মানভেদে ৮২ থেকে ৮৮ টাকা, বিআর-২৮ চালে ২ টাকা বেড়ে বিক্রি হয়েছে ৫৮ থেকে ৬৪ টাকা ও বিআর-৬৩ চালে ৮ টাকা বেড়ে বিক্রি হয়েছে ৭৬ থেকে ৮৪ টাকা। বড় বাজারের খুচরা চাল বিক্রেতা সাখাওয়াত হোসেন জানান, এবার প্রাকৃতিক দুর্যোগে আমন আবাদে প্রচুর ক্ষতি হয়েছে, যে কারণে বাজারে নতুন চালের সরবরাহ খুব কম। দামও কমে আসার সুযোগ হচ্ছে না।
বাজারে আলুর দাম ৮০ টাকা কেজিতে স্থির হয়ে আছে। নতুন আলু বাজারে ওঠায় ক্রেতাদের কাছে আমদানি করা ভারতীয় আলুর চাহিদা কমে গেছে। নতুন আলুও প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। তবে বাজারে পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমেছে। শুক্রবার দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৯০ টাকা, আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ ৭৫ টাকা। বড় বাজার কালীবাড়ি এলাকার ‘জম জম ভাণ্ডার’ আড়তের স্বত্বাধিকারী সাদ্দাম হোসেন জানান, বাজারে নতুন মুড়িকাটা পেঁয়াজ উঠতে শুরু করেছে। তিনি শুক্রবার তার আড়তে পাইকারি দরে প্রতি কেজি মুড়িকাটা পেঁয়াজ বিক্রি করেছেন ৬০ টাকায়। তিনি আশা করছেন আগামী ১০/১২ দিনের মধ্যে বাজারে নতুন মুড়িকাটা পেঁয়াজের সরবরাহ বেড়ে দাম আরও কমে আসবে।
বাজারে শীতকালীন সবজির সরবরাহ বেড়েছে। দামও গত সপ্তাহের থেকে কমে এসেছে। গত সপ্তাহের থেকে কেজিতে ৪০ টাকা কমে গাজর বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা, কেজিতে ২০ টাকা কমে শিম বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা, টমেটোতে ২০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা, বেগুনে ২০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা। তাছাড়া ফুলকপি প্রতি কেজি ৪০ টাকা, মুলা ২০ টাকা, বাঁধাকপি ২০ টাকা, পালংশাক ২০ টাকা ও লাউ প্রতিটি ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
তাছাড়া বাজারে মুরগির ডিম প্রতি পিস সাড়ে ১১ টাকা, খামারের ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১৮০ টাকা, সোনালি মুরগি ২৮০ টাকা ও গরুর মাংস প্রতি কেজি ৭০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।