দুই কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যশোরে মামলা সার কারখানা মালিকের

0

 

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বহুজাতিক কোম্পানি সিনজেনটার কাছ থেকে সুবিধা নিয়ে স্থানীয় সার উৎপাদকের বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের অভিযোগে দুই কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যশোর আদালতে মামলা হয়েছে। স্থানীয় উৎপাদক মেসার্স এ আর অ্যাগ্রোর মালিক রাজু আহমেদ মামলাটি করেছেন। মামলায় বিবাদী করা হয়েছে- কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর ঢাকার উপ-পরিচালক (সার ব্যবস্থাপনা ও সরেজমিন উইং) মো. আমিনুল ইসলাম এবং যশোর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হাসান আলীকে। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. গোলাম কিবরিয়া অভিযোগের তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সিআইডি যশোর জোনের বিশেষ পুলিশ সুপারকে আদেশ দিয়েছেন।
মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, বিভিন্ন প্রকার সার উৎপাদনের জন্য তার বৈধ সনদ রয়েছে। তার কারখানায় মানসম্মত সার উৎপাদন করা হয়। কারখানায় উৎপাদিত প্রতি কেজি জিংক ফসফেট ১৬০ টাকা এবং ম্যাগনেশিয়াম সালফেট প্রতি কেজি ৩০ টাকা। অপরদিকে বহুজাতিক কোম্পানি সিনজেনটা উৎপাদিত জিংক ফসফেট গ্রোজিন ৩৩০ টাকা এবং ম্যাগনেশিয়াম সালফেট ম্যাগমা প্রতি কেজি ১৫০ টাকা। এ কারণে মূল্য কম হওয়ায় কৃষকদের মাঝে মেসার্স এ আর অ্যাগ্রো কেমিক্যালে উৎপাদিত সারের চাহিদা বেশি। এ জন্য সিনজেনটা কোম্পানি মেসার্স এ আর অ্যাগ্রো কেমিক্যালের কারখানাটি বন্ধ করতে উল্লিখিত দুই কৃষি কর্মকর্তাকে অনৈতিকভাবে প্রভাবিত করে। এর প্রেক্ষিতে সিনজেনটা কোম্পানির প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে হেলমেট পরিহিত কিছু লোকজনের সহায়তায় ২০২৩ সালের ১৪ ডিসেম্বর গভীর রাতে মেসার্স এ আর অ্যাগ্রো কেমিক্যালের কারখানা এবং গুদামের তালা ভেঙে ভেতরে ঢোকেন কৃষি কর্মকর্তারা। তারা উৎপাদিত সারের নমুনা না সংগ্রহ করে সার প্রক্রিয়া করণের নমুনা নিয়ম বহির্ভুতভাবে সংগ্রহ করেন এবং কারখানা সিল করে দেন। পরবর্তীতে কৃষি কর্মকর্তাদ্বয় সার প্রক্রিয়া করণের নমুনা গবেষণাগারে পাঠান। এই নমুনা পাঠানোর কারণে পরীক্ষাগার থেকে রিপোর্ট দেওয়া হয় যে, সার মানসম্মত নয়। এর প্রেক্ষিতে যশোর সদর কৃষি কর্মকর্তা হাসান আলী সার ব্যবস্থাপনা আইনে মেসার্স এ আর অ্যাগ্রো কেমিক্যালের স্বত্বাধিকারী রাজু আহমেদের বিরুদ্ধে কোতয়ালি থানায় মামলা করেন। এরপর রাজু আহমেদ আদালতে আবেদন করেন, কারখানা থেকে নয় বাজার থেকে তার উৎপাদিত সারের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করার জন্য। আদালত তার আবেদন মঞ্জুর করেন এবং তদন্ত কর্মকর্তাকে আদেশ দেওয়া হয়, বাজার থেকে রাজু আহমেদের সারের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষাগারে পাঠানোর জন্য। পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদালতের আদেশে বাজার থেকে সারের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষাগারে পাঠালে সেখান থেকে রিপোর্ট দেওয়া হয়, সার মানসম্মত। এই রিপোর্টের প্রেক্ষিতে তদন্ত কর্মকর্তা ২০২৪ সালের ২৫ মার্চ আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।