চৌগাছায় কমলা চাষে আমির হামজার সাফল্য

0

 

মুকুরুল ইসলাম মিন্টু, চৌগাছা (যশোর) ॥ যশোরের চৌগাছায় চায়না কমলা লেবুর চাষ করে সাফল্য পেয়েছেন ফল বিক্রেতা থেকে ফলচাষি বনে যাওয়া আমির হামজা মিলন। মাত্র দেড় বিঘা জমিতে কমলা চাষ করে প্রথম বছরেই ৫ লাখ টাকা বিক্রি করেছেন। চলতি মৌসুমে তিনি ১০ লাখ টাকার ফল বিক্রি করবেন বলে আশা করছেন। তার এই সাফল্যে স্থানীয় অনেকে কমলা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। কমলা বাগান দেখতে প্রতিদিনই মানুষ ভিড় করছেন।
চৌগাছায় ধান, পাট, আখ, ভুট্টা, কলাই, সবজি কুল, পেয়ারা, ড্রাগনসহ এমন কোন ফসল বা ফল নেই যা চাষ হয়না। এবার চাষ হচ্ছে বিভিন্ন জাতের কমলা ও মাল্টা লেবুর। চৌগাছার বেকার যুবক, ব্যবসায়ী এমনকি প্রতিষ্ঠিত চাষিরা নতুন নতুন ফসল উৎপাদন করে যেমন সাফল্য পাচ্ছেন তেমন অর্থনীতিতে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।
উপজেলার হাকিমপুর গ্রামের হায়দার আলীর ছেলে (ফল বিক্রেতা) বর্তমানে সফল ফল চাষি আমির হামজা মিলন। এক সময় তিনি ফল বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। কিন্তু নিজেই এখন হয়েছেন সফল ফলচাষি। নিজ গ্রামের মাঠে দেড় বিঘা জমিতে চায়না জাতের কমলা লেবুর চাষ করে পেয়েছেন ব্যাপক সাফল্য। ফল আসার পর প্রথমে ৫ লাখ টাকার ফল বিক্রি করেছেন। এবার টার্গেট ১০ লাখ টাকা। তার টার্গেট হয়ত শতভাগ হয়ে যাবে কারণ প্রতিটি গাছে যে পরিমাণ লেবু ধরেছে তাতে মনে হচ্ছে বাদুর ঝুলছে গাছে।
সরেজমিনে কৃষক আমির হামজা মিলনের কমলা ক্ষেতে গিয়ে দেখা যায়, তিনি জমি পরিচর্জা করছেন। এ সময় কথা হয় সফল ফলচাষি মিলনের সাথে। তিনি জানান, প্রায় চার বছর আগে এক আত্মীয়ের মাধ্যমে ভারত থেকে ৩০টি চায়না লেবুর চারা সংগ্রহ করেন। এরপর ওই চারা হতে নিজে কলম তৈরি করে দেড় বিঘা জমিতে ২৭০ টি চারা রোপণ করেন। চারা রোপণের মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় ৫ লাখ টাকার লেবু বিক্রি করেন। এবার তার লক্ষ্য ১০ লাখ টাকার লেবু বিক্রি হবে। ইতোমধ্যে লেবু বিক্রি শুরু হয়েছে। চৌগাছা, যশোর এমনকি খুলনা হতে ক্রেতারা এসে লেবু নিয়ে যাচ্ছেন। ১ কেজি লেবু ১২০ হতে ১৪০ টাকায় পাইকারি বিক্রি করছেন তিনি। তিনি বলেন, খুবই সহজ ও লাভজনক চাষ হচ্ছে চায়না লেবু চাষ। চারা ছোট থাকা অবস্থায় কিছুটা সার কীটনাশক ব্যবহার করা হয়। তবে গাছে ফল এসে গেলে সার কীটনাশকের ব্যবহার কমে যায়। কিছু নিয়ম মেনে চললে এই ফল চাষে প্রত্যেক চাষিই সাফল্য পাবেন এতে কোনই সন্দেহ নেই। নিজ বাগান হতে চারা তৈরি করে বর্তমানে ৭ বিঘা জমিতে চায়না লেবুর চাষ করেছেন। নিজ এলাকা ছাড়াও বিভিন্ন জায়গা হতে অনেকে তার নিকট হতে চারা নিতে আসছেন। চারা বিক্রি করেও তিনি বেশ লাভবান হচ্ছেন।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা কামরুজ্জামান বলেন, হাকিমপুর ইউনিয়নের দায়িত্বে আমি আছি। সে কারণে প্রায় দিনই আমার ওই ক্ষেতে যাওয়া পড়ে। নিঃসন্দেহে একটি ভাল চাষ হচ্ছে কমলা চাষ। ফলচাষি মিলন ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুসাব্বির হুসাইন বলেন, চৌগাছায় ধান, পাট, সবজির পাশাপাশি ফল চাষে কৃষক ব্যাপক সাফল্য অর্জন করছেন। আমরা কৃষকদের নতুন নতুন ফসল উৎপাদনে পরামর্শ অব্যাহত রেখেছি।