ট্রেনে সবজি পরিবহন নিশ্চিতে স্টেশনের কাছে খাজনামুক্ত হাটের পরিকল্পনা

0

আকরামুজ্জামনা ॥ কৃষিপণ্য পরিবহন স্পেশাল ট্রেনে সবজি সরবরাহ নিশ্চিতে খাজনামুক্ত সবজি হাট চালুর বিষয়ে ভাবছে যশোর জেলা প্রশাসন। যশোর রেলস্টেশন সংলগ্ন এলাকায় সপ্তাহে একদিন এ হাট বসতে পারে। বুধবার জেলা প্রশাসক মো. আজহারুল ইসলাম সদ্য যোগদানকারী সিনিয়র বিপণন কর্মকর্তা কিশোর কুমার সাহাকে এ সংক্রান্ত পরিকল্পনার কথা জানান। একই সাথে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।
দেশের ১৫টি উৎপাদক অঞ্চল থেকে কৃষিপণ্য সংগ্রহ করে দেশব্যাপী সরবরাহ নিশ্চিতের উদ্যোগ গ্রহণ করে বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চল কর্তৃপক্ষ।
সপ্তাহে এক দিন নির্দিষ্ট বগিতে সবজি নিয়ে খুলনা থেকে ছেড়ে আসা ট্রেনটি যশোর ছাড়াও মুন্সী মেহেরুল্লাহ স্টেশন, ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন, বারবাজার, মোবারকগঞ্জ, কোটচাঁদপুর, সফদারপুর, আনসারবাড়িয়া, উথলি, দর্শনা প্রভৃতি স্টেশনে থেমে সবজি উত্তোলন পূর্বক ঢাকার বিমানবন্দর, তেজগাঁ ও কমলাপুর স্টেশনে পৌঁছানোর কথা থাকলেও গত ২২ ও ২৯ অক্টোবর পরপর দুই দিনে কোনো সবজি ছাড়াই ঢাকায় যায় স্পেশাল এ ট্রেন। যা নিয়ে ইতোমধ্যে বিভিন্ন সমালোচনার ঝড় ওঠে।
এ পরিস্থিতিতে স্পেশাল ট্রেনে সবজি পাঠাতে কৃষককে উদ্বুদ্ধ করতে জেলা প্রশাসক খাজনামুক্ত সবজি বাজার চালুর পরিকল্পনা করছেন।
জেলা প্রশাসক আজহারুল ইসলাম জানান, কৃষক বা ব্যবসায়ীরা প্রতি কেজি সবজি বা পণ্য ১ টাকা ৪০ পয়সা ভাড়ায় ঢাকায় নিতে পারবেন। সাশ্রয়ী ভাড়া হিসেবে ট্রেনকে ব্যবহারে কৃষক ও ব্যবসায়ীদের আগ্রহ বাড়াতে স্টেশন সংলগ্ন কোনো নির্দিষ্ট স্থানে খাজনামুক্ত সবজিহাট চালুর বিষয়টি ভাবা হচ্ছে। তিনি বলেন, কোনো কর্মসূচি পুরোপুরি ব্যর্থ হতে পারেনা। এজন্য বিকল্প কিছু ভাবা উচিৎ। যশোর সবজি জোন হিসেবে পরিচিত, এ এলাকা এখান থেকে ট্রেনে সহজ উপায়ে কম খরচে সবজি পাঠাতে কৃষক ও ব্যবসায়ীরা অভ্যস্ত হয়ে উঠলে জেলার কৃষি অর্থনীতি আরও শক্তিশালী হবে। এ বিষয়ে কৃষি বিপণন কর্মকর্তাকে ভেবে দেখার পরামর্শ দেন তিনি।
বুধবার রাতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোরের সিনিয়র কৃষি বিপণন কর্মকর্তা কিশোর কুমার সাহা বলেন, কৃষিপণ্য পরিবহন স্পেশাল ট্রেন চালুর বিষয়ে জেলা প্রশাসকের ভাবনাকে গুরুত্বের সাথে দেখা হবে। তিনি বলেন, জেলায় নতুন যোগদান করায় সব জায়গার সাথে পরিচিত নন। এজন্য যশোর অংশে সবজি জোন এলাকা দিয়ে ট্রেন চলাচলের জায়গাগুলো দেখে যেখানে অপেক্ষাকৃত খালি জায়গা আছে বা বাজার গড়ে তোলার উপযুক্ত সেটি চিহ্নিত করে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলবেন। প্রয়োজনে সেখানে অস্থায়ীভাবে শুধুমাত্র সবজি তোলার জন্য কিছু সময় ট্রেন দাঁড় করানো যায় কীনা সে বিষয়ে উদ্যোগ নেবেন।
এদিকে কৃষকদের সাথে কথা বলে জানাগেছে, তিন কারনে তারা সবজি পরিবহনে ট্রেন ব্যবহার করছেন না। সেগুলো হলো- এ বছর জুলাইয়ের শেষ থেকে অক্টোবরের মাঝপর্যন্ত অতি বৃষ্টিপাতে সবজি উৎপাদন কম হয়েছে, যশোরের যেসব ক্ষেতে সবজি রয়েছে কৃষকরা সেখান থেকেই বিক্রি করে দিচ্ছেন এবং সবজি ক্ষেত থেকে স্টেশন পর্যন্ত আনতে মাধ্যম (ভ্যান, নসিমন, করিমন ইত্যাদির ভাড়া, ে ইত্যাদি) খরচের কারণে আগ্রহ হারিয়েছেন। তবে চুড়ামনকাটি-বারীনগর, সাতমাইল এলাকার কাছাকাছি কোথাও ট্রেন দাঁড়ালে সবজি সরবরাহ সহজ হবে বলে কৃষক জানান।