পরিত্যক্ত ঘোষণার পরও মনিরামপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজের জরাজীর্ণ ভবনে পাঠদান

0

মজনুর রহমান,মনিরামপুর (যশোর) ॥ মনিরামপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজের জরাজীর্ণ তিনতলা ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণার পরও পাঠদান চলছে। যে কোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা নিয়ে শিক্ষার্থীরা ক্লাস করছেন।

তাছাড়া ভবনের তিনতলায় এখনও চালু রয়েছে ছাত্রী নিবাস। কলেজ কর্তৃপক্ষ বলছে তারা চেষ্টা করছেন পরিত্যক্ত ভবনে পাঠদান বন্ধ করে এবং নিবাস থেকে ছাত্রীদের অন্যত্র সরিয়ে অস্থায়ীভাবে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা।

জানা যায়, মনিরামপুর পৌর শহরের মোহনপুরে ১৯৯৩ সালে তিনতলা একটি ভবন নির্মাণ করে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে মহিলা কলেজের যাত্রা শুরু হয়। এর পর দিন দিন কলেজের ঈর্ষণীয় ফলাফলে এক পর্যায়ে চালু করা হয় স্নাতক ও অনার্স (সমাজ বিজ্ঞান ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান) বিভাগ। বিদ্যমান রয়েছে এইচএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র। বর্তমানে কলেজে রয়েছে প্রায় সাড়ে ১১শ ছাত্রী। ১৯৯৯ সালে দুইতলা প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ করা হয়।

কিন্তু দিন দিন ছাত্রীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় পাঠাদানের কক্ষ সংকট দেখা দেয়। ফলে পুরাতন তিনতলা ভবনেও ছাত্রীদের পাঠদান চলছে।

ইতোমধ্যে ওই ভবনের একতলা এবং দুইতলার মেঝে, দেওয়াল,বিম ও ছাদে ফাটল দেখা দিয়েছে। তার পরও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাঠদান চলছে। এ ছাড়া ওই ভবনের তিন তলার কয়েকটি কক্ষ সংস্কার করে গড়ে তোলা হয়েছে আবাসিক (ছাত্রী নিবাস) ব্যবস্থা।

ইসলামী স্ট্যডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক বোরহান উদ্দিন জাকির বলেন, পরিত্যক্ত ভবনে আতঙ্কিত অবস্থায় পাঠদান করা হয়। জীব বিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আব্বাস উদ্দিন বলেন, কক্ষের অভাবে বাধ্য হয়েই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাঠদান করা হচ্ছে।

ছাত্রী নিবাসে থাকা বিজ্ঞান বিভাগের ২য় বর্ষের ছাত্রী তানহা সুলতানা, অহনা খাতুন জানান, পরিত্যক্ত ভবনে কখন কি হয় তা নিয়ে তাদের সব সময় আতঙ্কগ্রস্ত থাকতে হয়। ছাত্রী নিবাসের দায়িত্বে থাকা সহকারী অধ্যাপক মুহিবুল্লাহ মনু বলেন, ছাত্রী নিবাসে বর্তমান ৫০ জন ছাত্রী রয়েছে। কিন্তু এখানে তাদের রাখা সম্ভব নয়।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন অফিসার শাফায়েত হোসেন জানান, ইতোমধ্যে কলেজের পুরাতন ভবন পরিদর্শন করে ব্যবহার না করার জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী হাদিউজ্জামান বৃহস্পতিবার সরেজমিন এসে পরিদর্শন শেষে পুরাতন তিনতলা ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করেন।

কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) আফরোজা মাহমুদ রানী বলেন, এ মুহূর্তে পুরাতন ভবনের পরিবর্তে অস্থায়ীভাবে অন্যত্র বিশেষ ব্যবস্থায় পাঠদানের ব্যবস্থা জরুরি। তাছাড়া কক্ষ সংকটের দরুন আসন্ন এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া বেশ চ্যালেঞ্জ হবে।

গভর্নিংবডির সভাপতি উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট শহীদ ইকবাল হোসেন জানান, যেহেতু তিনতলা পুরাতন ভবন শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগ পরিদর্শন শেষে পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছেন। সেহেতু আমরা উদ্যোগ নিয়েছি কলেজ ক্যাম্পাসে অস্থায়ী টিনশেড নির্মাণ করে ছাত্রীদের পাঠদানের ব্যবস্থা করার।কিন্তু প্রয়োজনীয় অর্থাভাবে সেটি দ্রুত বাস্তবায়ন করা দুরুহ হয়ে পড়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিশাত তামান্না জানান, এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।