লালদীঘিতে দুর্গা প্রতিমা নিরঞ্জন অনুষ্ঠানে অনিন্দ্য ইসলাম অমিত সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সহনশীলতা যশোরের রাজনৈতিক সৌন্দর্য্য

0

 

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোরে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেছেন, আনন্দঘন পরিবেশে শারদীয় দুর্গোৎসবের সমাপ্তির কৃতিত্ব এককভাবে কোন রাজনৈতিক দল কিংবা সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের নয়। এই কৃতিত্ব সমগ্র যশোরবাসীর, এটিই হচ্ছে যশোরের রাজনৈতিক সৌন্দর্য্য। একতাবদ্ধ যশোরবাসী এ সৌন্দর্য প্রকাশের সুযোগ পেয়েছেন ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তন পর। এই একতাবদ্ধ শক্তির মাধ্যমে আমরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এবং রাজনৈতিক সহনশীলতার ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি। যে ঐতিহ্যের মধ্যে আমরা এই যশোরে জন্মেছি এবং বড় হয়েছি। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য বিগত ১৫ বছর সেই সংস্কৃতি পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করা হয়েছে।
রোববার সন্ধ্যায় যশোর লালদীঘি পাড়ে পৌর এলাকার দুর্গা প্রতিমা নিরঞ্জন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে অনিন্দ্য ইসলাম অমিত আরও বলেন, এই আনন্দঘনপূর্ণ পরিবেশে থাকতে পেরে আমার নিজের খুব ভালো লাগছে। এটি যেমন সনাতন ধর্মাবলম্বী ভাইবোনদের জন্য আনন্দের, ঠিক আমাদের জন্য স্বস্তির। সনাতন ধর্মাবলম্বী ভাই বোনরা তাদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসবটি নির্বিঘ্নে এবং আনন্দঘন পরিবেশে যাতে পালন করতে পারে তার জন্য আমাদের দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি। সে কারণে বিএনপির নেতাকর্মীরা মহালয়ের পূর্বেই জেলা থেকে শুরু করে উপজেলা পৌর এবং ইউনিয়ন পূজা উদ্যাপন পরিষদের সাথে দফায় দফায় বৈঠক করে। এরই ধারাবাহিকতায় জেলার সাড়ে ছয় শতাধিক পূজা ম-পের সভাপতি সাধারণ সম্পাদকদের সাথে আমাদের নেতাকর্মীরা সমন্বয় সাধন করে। তিনি লালদীঘিপাড়ে উপস্থিত পুণ্যার্থী এবং দর্শনার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ২০০৪ সালের আগ পর্যন্ত নীলগঞ্জ মহাশশ্মানে প্রতিমা নিরঞ্জন করা হতো। ছোট জায়গায় প্রতিমা নিরঞ্জন করতে গিয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে এক ধরণের অনৈক্য সৃষ্টি হয়। এমনকি তারা অনেক সময় মুখোমুখি হয়েছেন। বিষয়টি অনুধাবন করতে পেরে তৎকালীন মন্ত্রী, বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমাদের অভিভাবক তরিকুল ইসলাম লালদীঘিতে প্রতিমা নিরঞ্জনের ব্যবস্থা করেন। সেই থেকে আজ অবধি প্রতিবছর আনন্দঘন পরিবেশে প্রতিমা নিরঞ্জন করা হচ্ছে। কিন্ত বিগত ১৫ বছর এই মঞ্চে আমাদের ওঠার কোন সৌভাগ্য হয়নি। তারপরও আমরা আপনাদের (সনাতন ধর্মাবলম্বী) পাশ থেকে ন্যূনতম সময়ের জন্য বিচ্যুতি হইনি। সামাজিক ও রাজনৈতিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে দর্শনার্থীদের সাথে দাঁড়িয়ে এই অনুষ্ঠান নির্বিঘ্নে সম্পন্নের কাজ করেছি।
অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া মহান জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন এই বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ এখানে বসবাসকারী সকল ধর্মের মানুষের । এই দেশে সমতলে কিংবা পাহাড়ে বসবাসকারীদের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। এই দেশে ধনী-গরীবের মধ্যে সীমারেখা টানবার কোন সুযোগ নেই। এখানে বসবাসকারী সকলের একটি পরিচয় আমরা বাংলাদেশী। সেই আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে আমরা রাজনীতি করি। সকলকে সাথে নিয়ে পথ চলার চেষ্টা করি। এখানে কার কি রাজনৈতিক দর্শন কিংবা ধর্মীয় মূল্যবোধ সেটি আমাদের কাছে কোন বিবেচ্য বিষয় না।
জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি দীপংকার দাস রতনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাড. সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, যুগ্ম-আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন, সদস্য গোলাম রেজা দুলু, মিজানুর রহমান খান, এ কে শরফুদ্দৌলা ছোটলু, মুনির আহমেদ সিদ্দিকী বাচ্চু, অ্যাড. হাজী আনিছুর রহমান মুকুল, সিরাজুল ইসলাম, প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, জেলা পূজা উদ্ডযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক তপন কুমার ঘোষ প্রমুখ।