পুলেরহাট-রাজগঞ্জ সড়কে বেহাল দশা ধানের চারা রোপণ করে প্রতিবাদ

0

মাসুদ রানা বাবু ॥ সড়কে কাদা জমে যান চলাচলের অনুপযোগী তাই, ধান লাগিয়ে প্রতিবাদ করলেন এলাকাবাসী। সংস্কারকাজ চলমান অবস্থায় যশোর শহরতলীর পুলেরহাট-রাজগঞ্জ সড়কে টানা বৃষ্টিতে কাদা জমে এমন বেহালদশা সৃষ্টি হয়েছে। সড়কে জমে থাকা কাদার কারণে চলাচলের সম্পূর্ণ অনুপযোগী হয়ে পড়ে। যে কারণে সড়কে জমে থাকা কাদায় ধানের চারা রোপণ করে প্রতিবাদ জানান তারা। স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষুব্ধ হয়ে সড়কে ধানের চারা রোপণ করেন। শুক্রবার শহরতলীর পুলেরহাট-রাজগঞ্জ সড়কে তপসীডাঙ্গা নামক স্থানে গিয়ে এমনটি দেখা যায়।
পুলেরহাট-রাজাগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কের দু পাশের বাসিন্দারা জানান, যশোর সদর উপজেলাসহ, কেশবপুর ও মনিরামপুরের একাংশ এবং সাতক্ষীরা জেলার একাংশের মানুষের যশোর শহরের সাথে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম এই সংযোগ সড়কটি। যাতায়াতে কম সময় লাগায় এ সড়কটি ব্যবহার করে থাকে ব্যস্ততম যাত্রী সাধারণেরা। এ ছাড়া পাইকগাছা, কেশবপুর ও সাতক্ষীরা থেকে ঢাকাগামী যানবাহন এবং সাতক্ষীরা ভোমরা স্থলবন্দরেরও পণ্যবাহী যানবাহন এই সড়ক দিয়ে চলাচল করে এ সড়ক দিয়ে। প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ হাজার মানুষ এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করে। দিনের শুরু যাত্রীবাহী বাস থেকে শুরু করে পণ্যবাহী এবং ছোট বড় ভারী যানবাহনও নিয়মিত চলাচল করে এ সড়কে। এটি আঞ্চলিক সড়ক হলেও দিনে-রাতে মহাসড়কের মতো গাড়ির চাপ থাকে।
কয়েক মাস আগে দীর্ঘ ৩২ কিলোমিটার সড়কটির সংস্কার কাজ শুরু হয়। এর মধ্যে সড়কের বেশ কিছু স্থানে কয়েক কিলোমিটার জুড়ে এস্কেভেটর মেশিন দিয়ে খুঁড়ে বালু ও খোয়া মিশিয়ে ভরাট করে রোলার করে রাখা হয়েছে। আর কয়েকটি স্থানে বক্স কালভার্ট ও একটি স্থানে ব্রিজ নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য স্থানে খোঁড়াখুঁড়ির কাজ চলমান রয়েছে। মূলত যে সব স্থানে রাস্তা খোঁড়ার কাজ সম্পন্ন হয়েছে সেই সব স্থানে কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে কাদা জমে। বিশেষ করে পলাশী কলেজ মোড় থেকে শুরু করে তপসীডাঙ্গা পর্যন্ত। এরমধ্যে গোয়ালদাহ, বাগেরহাট, মাহিদিয়া বাজার ছাড়া। কারণ এই তিন স্থানে কংক্রিটের ঢালাই রয়েছে। তবে কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে সবচেয়ে বেহাল অবস্থা সৃষ্টি হয় তপসীডাঙ্গা থেকে মাহিদিয়া বাজারের আগ পর্যন্ত। সড়কের এই অংশ এতটাই বেহাল অবস্থা সৃষ্টি হয়, যে সেখানে পায়ে হেটে চলাচলের মত অবস্থা নেই।
তপসীডাঙ্গার আনিছুর রহমান বলেন, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সড়কের এই অংশ খুঁড়ে রেখে বালু ও খোয়া মিশিয়ে রোলার করে রেখেছে। নিয়মিত পানি দেওয়া হয় না, যে কারণে রোদে ধুলায় আচ্ছন্ন থাকে। এখন রাস্তায় কাদায় আচ্ছন্ন। তিনি বলেন, রোলার করে রাখা রাস্তায় নিয়মিত পানি না দেওয়ার কারণে ধুলার আস্তরণ জমে গিয়েছিল। জমে থাকা ধুলার আস্তরণ বৃষ্টির পানিতে কাদায় পরিণত হয়েছে।
সেখানে দাঁড়িয়ে কথা হয় বাসচালক ওমর ফারুকের সাথে। তিনি বলেন, অনেক কষ্ট করে সড়ক দিয়ে চলাচল করছি। সেটা বলে বোঝাতে পারবো না। গাড়ির ইঞ্জিনে ব্যাপক চাপ পড়ছে। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান তাদের লোকজন দিয়ে সড়কের জমে থাকা কাদা সরিয়ে দিলে এমনটি হতো না। একটু স্বস্তিতে চলাচল করতে পারতাম।
দোদাড়িয়া গ্রামের রেজাউল ইসলাম বলেন, দোদাড়িয়া ব্রিজ থেকে তালতলা বাজার পর্যন্ত গত কয়েকদিন ধরে খোঁড়াখুঁড়ির কাজ শুরু করেছে। রাস্তার এক পাশে খুঁড়ে রেখে অপর পাশ দিয়ে দিয়ে যান চলাচল করছে। কিন্তু বৃষ্টির কারণে সড়কের এই স্থানটিতে পানি কাদা জমে গেছে। সড়কের অবস্থা এতটাই বেহাল মানুষ পায়ে হেটে চলাচলের মত কোনো অবস্থা নেই। অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে যান চলাচল করছে।
রোহিতা গ্রামের মোখলেছুর রহমান বলেন, সড়কের যে সব স্থানে এস্কেভেটর মেশিন দিয়ে খোঁড়ার পর বালি ও খোয়া মিশিয়ে ভরাট করে রোলার করে রাখা হয়েছে, সেই সব স্থানে খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির পানি জমে সেখানে বেহাল অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।
তবে সড়কের যে সব স্থানে কাজ চলমান, ওই স্থানে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বরত কাউকে পাওয়া যায়নি। কর্মরত শ্রমিকরা বলেন, আমাদের যেখানে যে কাজে লাগানো হচ্ছে। আমরা সেখানেই কাজ করছি।