চৌগাছায় বাজারে প্রচুর কাঁঠাল কিন্তু দাম কম

0

মুকুরুল ইসলাম মিন্টু, চৌগাছা (যশোর) ॥ যশোরের চৌগাছার হাট -বাজারে কিছুটা দেরিতে হলেও ব্যাপকভাবে আসতে শুরু করেছে জাতীয় ফল কাঁঠাল। মৌসুমের অন্যতম এই ফলের কদর যেন হঠাৎ করেই কমে গেছে। জেলার বাইরের ব্যবসায়ীদের আগমন কম, কাঁঠাল চাষিরা পাচ্ছেন না কাংখিত দাম আর ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ব্যবসায় দেখা দিয়েছে মন্দা। আম, জাম, পেঁয়ারা, ড্রাগনসহ সকল ধরনের ফলের সমারোহ ঘটায় দাম কম বলে মনে করছেন অনেকে।
ফলের রাজধানী হিসেবে খ্যাত যশোরের চৌগাছার হাট- বাজারগুলোতে আসতে শুরু করেছে রসালো ও মাজাদার ফল কাঁঠাল। উপজেলার বিভিন্ন ছোট হাটে বেশ আগেভাগেই দেখা মিলছে কাঁঠালের। স্থানীয়রা ওই সকল হাট থেকে কাঁঠাল কিনে তার স্বাদ বেশ আগেই নিয়েছেন। চৌগাছার প্রধান কাঁঠালের হাটে সমরোহ ঘটছে কাঁঠালের। কিন্তু দাম কম থাকায় চরম হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন কাঁঠাল চাষিসহ মৌসুমী ব্যবসায়ীরা।
সোমবার চৌগাছার প্রধান কাঁঠালের হাটে (কংশারীপুর) দেখা যায়, গত কয়েক বছরের তুলনায় সমারোহ কম। যেসব চাষি ও মৌসুমী ব্যবসায়ী গ্রাম হতে কাঁঠাল সংগ্রহ করে হাটে এসেছেন তারা ব্যাপারীর অভাবে অলস বসে আছেন। অনেকে পানির দরে কাঁঠাল বিক্রি করে এক বুক হতাশা নিয়ে ফিরছেন বাড়িতে। প্রধান পাইকারি বাজারে কাঁঠালের দাম কম হলেও বাজারের বিভিন্ন খুচরো দোকানে চড়া দরে এই ফল বিক্রি হতে দেখা গেছে।
প্রধান পাইকারি বাজারে কাঁঠাল বিক্রি করতে আসা উপজেলার চাঁদপাড়া গ্রামের কাঁঠাল চাষি কামরুজ্জামান বলেন, চলতি বছরে কাঁঠালের চাহিদা নেই বললেই চলে। গত কয়েক হাট ঘুরে ঘুরে সোমবার হাটে কাঁঠাল নিয়ে এসেছি। আশা ছিল কাংখিত দামে বিক্রি করতে পারবো। কিন্তু হয়নি। ক্রেতার বড়ই অভাব। যার কারণে ১০ হাজার টাকার একশ কাঁঠাল মাত্র ৬ হাজার টাকা বিক্রি করেছি। পাশের মহেশপুর উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামের চাষি রেজাউল ইসলাম বলেন, কৃষকের কষ্ট কেউ বোঝেনা। একটি ফল বা ফসল উৎপাদনে আমাদের মত প্রান্তিক চাষিদের কতই না পরিশ্রম করতে হয়। যখন বিক্রির উপযোগী হয় তখন আকাশসম স্বপ্ন দেখতে শুরু করে চাষিরা। কিন্তু বাজারে আনার পর যে দামে বিক্রি হয় তাতে সব স্বপ্ন মলিন হয়ে যায়। তিনি বলেন, ১শ কাঁঠাল বিক্রি করেছি ৫ হাজার টাকায়। ক্রেতা নেই। তাই পানির দরে বিক্রি করলাম।
মৌসুমী ব্যবসায়ী আড়পাড়া গ্রামের মো. মুন্না, জামাল হোসেন, কান্দি গ্রামের সাইফুল ইসলাম, অসিম কুমার বলেন, প্রতি বছর আমরা উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম হতে কাঁঠাল কিনে বাজারে বিক্রি করি। এ বছর সেইভাবে ব্যবসা হচ্ছে না। গ্রামে কাঁঠাল চাষিরা দাম চাচ্ছেন বেশি। চড়া দরে কিনে তা বাজারে পৌঁছানো পর্যন্ত একটি খরচ আছে। সেই কাঁঠাল যদি বিক্রি না হয় তাহলে আমরা টিকে থাকবো কীভাবে। প্রতি বছর যশোরসহ সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, বরিশাল, ঝালকাটি, পিরোজপুর ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা হতে ব্যাপারি আসতেন। কিন্তু এ বছর বাগেরহাট ছাড়া অন্য কোন জেলার ব্যাপারির আগমন ঘটেনি। ফলে কাঁঠালের দাম খুবই কম।
বাগেরহাট জেলা হতে কাঁঠাল কিনতে আসা ব্যবসায়ী ইউছুফ সর্দার ও হাবিবুর রহমান বলেন, প্রচন্ড খরার কারণে সব এলাকাতে কাঁঠারের চাহিদা কম। যার কারণে ব্যবসায়ীরা আসছেন না। যদি একটানা বৃষ্টি হতো তাহলে কাঁঠারের চাহিদা বেড়ে যেত।