ঝিকরগাছার রঘুনাথনগর বিদ্যালয়ের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে চাকরিপ্রত্যাশীর মামলা

0

 

মাসুদ রানা বাবু ॥ যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার রঘুনাথনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি আহমেদ ফারুক শান্তির বিরুদ্ধে নিয়োগে অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছেন সানজিদা আক্তার নামের এক চাকরিপ্রত্যাশী। একই অভিযোগে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাসানুল পান্নাকে আসামি করা হয়েছে। গত ১৫ মে সানজিদা আক্তার ঝিকারগাছা সহকারী জজ আদালতে মামলা দায়ের করেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, রঘুনাথনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের আয়া, নৈশপ্রহরী এবং অফিস সহায়ক পদে ২০২২ সালের ১৪ ডিসেম্বর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বাদী সানজিদা আক্তার ওই বছরের ২৮ ডিসেম্বর আয়া পদে আবেদন করেন। কিন্ত অজ্ঞাতকারণে বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদ নিয়োগ দিতে ব্যর্থ হয়ে দ্বিতীয়বারের মত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। দ্বিতীয় বার প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী সভাপতি এবং প্রধান শিক্ষকের নিয়োগ বাণিজ্যের কারণে তারা নির্ধারিত সময়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হন।
এরপর ২০২৩ সালের ৩ অক্টোবর তৃতীয়বারের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তিমতে নৈশপ্রহরী পদে সজল হোসেন আবেদন করলে তার কাছে ওই পদে নিয়োগের জন্য ১০ লাখ টাকা বিদ্যালয়ের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক দাবি করেন। এরপর সজল হোসেনের পিতা ও বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য মামলা দায়ের করেন। আদালত নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিতাদেশ দেন।
অভিযোগ রযেছে ৩টি পদের বিপরীতে নিয়োগ বাণিজ্য সম্পন্ন করতে আয়া পদে মোছা. নাছিমার কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা, নৈশপ্রহরী পদে মোস্তাকের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা, এবং অফিস সহায়ক পদে তুহিনের কাছ থেকে ৮ লাখ টাকা বিদ্যালয়ের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক হাতিয়ে নেন। বর্তমান সভাপতির মেয়াদকাল আগামী চলতি বছরের ২৮ জুলাই পর্যন্ত। অভিযোগ রয়েছে সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক গোপনে বোর্ড বসিয়ে তাদের নিয়োগ দেওয়ার জন্য পাঁয়তারা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এর মধ্যে চলতি বছর ২০ এপ্রিল লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে উল্লেখ করে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের স্বাক্ষরিত পরীক্ষার প্রবেশপত্র সানজিদা আক্তারকে দেওয়া হয়। কিন্তু ওই দিন তিনি পরীক্ষার স্থানে গিয়ে দেখতে পান নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। পরে ১৩ মে বিদ্যালয়ের সভাপতি আহমেদ ফারুক শান্তি এবং প্রধান শিক্ষকের সাথে নিয়োগ সংক্রান্ত ব্যাপারে যোগাযোগ করেন। অভিযোগ করা হয় সভাপতি এবং প্রধান শিক্ষক তাকে আয়া পদে নিয়োগ দিতে ১০ লাখ টাকা দাবি করেন। এ ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে মামলা করেন। এদিকে বিদ্যালয়ের সভাপতি আহমেদ ফারুক শান্তি ও চাকরিপ্রার্থীর মধ্যে টাকা লেনদেন সংক্রান্ত একটি অডিও রয়েছে বাদী পক্ষের স্বজনদের কাছে।
ঝিকরগাছা-চৌগাছা আসনের সংসদ সদস্য এমন অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন না করার জন্য বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন এমনটি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাসানুল বান্নার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের সভাপতি আহমেদ ফারুক শান্তি বলেন, আমি শুনেছি সানজিদা আক্তার নামে কেউ বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছে। একটি কুচক্রি মহল আমার বিরুদ্ধে এমন মিথ্যা ভিত্তিহীন অভিযোগ এনে ইতঃপূর্বে মামলা দায়ের করেছিল, আদালত সেই মামলা খারিজ করে দিয়েছে। আমি ৫টি প্রতিষ্ঠানে জমিদাতা সামান্য দুই এক টাকা চুরি করতে যাব কেন?