জাপানে একদিনে ১৫৫ বার ভূমিকম্প

0

 

লোকসমাজ ডেস্ক ॥ জাপানে একদিনে ১৫৫ বার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। এতে নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ১৩ জন । সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ওয়াজিমা বন্দরে নিহত হয়েছেন ৭ জন। ইংরেজি বর্ষ শুরুর দিন অর্থাৎ ১লা জানুয়ারি তীব্র শক্তিশালী ৭.৫ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে জাপানের হোনশু দ্বীপের ইশিকাওয়া প্রিফেকচারে। এতে এক মিটারের বেশি উচ্চতার সুনামি দেখা দেয়। উপড়ে পড়ে ভবন। একটি বড় বন্দরে আগুন ধরে যায়। রাস্তাঘাট ভেঙেচুরে দুমড়ে মুচড়ে যায়।
রাত থাকতেই এ ঘটনায় সেখানে ভীতি দেখা দেয়। দিনের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে বেরিয়ে আসে ভয়াবহতা। দেখা যায়, ভবনগুলো কাত হয়ে আছে। ক্ষতবিক্ষত জানালা। মাছধরা বোট ডুবে গেছে না হয় তীরে ভাসিয়ে এনেছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক এক মিটিংয়ের পর প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা বলেছেন, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি নিশ্চিত হওয়া গেছে। বহু মানুষ আহত হয়েছেন। ভবন ধসে পড়েছে। আগুন ধরে গেছে। এর শিকারে পরিণত হয়েছেন যেসব মানুষ সময়ের সঙ্গে লড়াই করে আমরা তাদের সন্ধান ও উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছি।
আকাশপথে ওয়াজিমা বন্দরে ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে । সেখানে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একটি সাততলা ভবন ধসে পড়েছে। ওই এলাকায় কমপক্ষে ৪৫ হাজার বাড়িঘরে বিদ্যুত নেই। রাতে সেখানে তাপমাত্রা ছিল হিমাংকে। বহু শহরে পানি সরবরাহ ছিল না। যুক্তরাষ্ট্রের জিওলোজিক্যাল সার্ভে (ইউএসজিএস) বলেছে, এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭.৫। কিন্তু জাপানের আবহাওয়া বিভাগ বলছে এই মাত্রা ৭.৬। মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত পুরো অঞ্চলে কমপক্ষে ১৫০ টি কম্পন অনুভূত হয়েছে। খুব সকালে বেশ কিছু শক্তিশালী কম্পন অনুভূত হয়। এর একটির মাত্রা ছিল শতকরা ৫.৬ ভাগ।

সোমবার কমপক্ষে ১.২ মিটার উঁচু ঢেউ আছড়ে পড়ে ওয়াজিমায়। অন্য স্থানগুলোতে ধারাবাহিকভাবে ছোট ছোট জলোচ্ছ্বাস হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে এর আগে আরো ভয়াবহ যে সুনামি সতর্কতা দেয়া হয়েছিল, তেমনটা দেখা যায়নি। মঙ্গলবার সব রকম সুনামির সতর্কতা প্রত্যাহার করেছে জাপান। স্থানীয় মিডিয়ার খবরে দেখা যাচ্ছে, ইশিকাওয়াতে গাড়ি ও বাড়িঘরগুলো ভয়াবহভাবে কাঁপছে। ভয়ার্ত মানুষ দোকান ও ট্রেন স্টেশনে জড়ো হচ্ছেন। বাড়িঘর ধসে পড়েছে। রাস্তায় রাস্তায় বিশাল সব ফাটল দেখা দিয়েছে। ওয়াজিমায় বাণিজ্যিক একটি বিশাল ভবন ধসে পড়েছে। তার ভিতর দিয়ে হামাগুঁড়ি দিয়ে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে একটি উদ্ধারকারী দল।

কমপক্ষে ৬২ হাজার মানুষকে উদ্ধার করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মিনোরু কিহারা বলেছেন, একটি সামরিক ঘাঁটিতে অবস্থান করছেন প্রায় এক হাজার সেনা সদস্য। তারা ওই অঞ্চলে মোতায়েনের জন্য প্রস্তুত। ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের জন্য প্রায় ২০টি সামরিক বিমান মোতায়েন করা হয়েছে। (সূত্র:বার্তা সংস্থা এএফপি)