যশোর-৩ আসনের সবখানে আচরণবিধি লঙ্ঘন

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে যশোর-৩ আসনের ‘ফ্রি স্টাইলে’ চলছে আচরণবিধি লঙ্ঘন। কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা করছেন না প্রার্থী- তাদের সমর্থকরা। প্রার্থীদের গণসংযোগ থেকে পোস্টারিং কিংবা মাইকিং সব ক্ষেত্রেই আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটছে।
এ ব্যাপারে নির্বাচন অফিস সংশ্লিষ্টরা যেন এক রকম নির্বিকার। যদিও নির্বাচনের মাঠে সুশৃঙ্খল-শান্তিপূর্ণ পরিবেশে আয়োজনে সার্বিক তদারকিতে মাঠে জেলা রিটার্নিং অফিসারের পক্ষে ম্যাজিস্ট্রেটরা সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছেন। আচরণবিধি লঙ্ঘণের অভিযোগে মণিরামপুরের পৌরমেয়রকে জরিমানা আদায় করা ছাড়া বাকি অনিয়মের বিষয়ে তেমন কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যাচ্ছেনা।
জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার দফতর সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনী পরিবেশ সুরক্ষার জন্যে নির্বাচন কমিশন একটি সুস্পষ্ট আচরণবিধি প্রণয়ন করেছে। এই আচরণবিধি অনুযায়ী সিটি কর্পোরেশন এবং পৌর এলাকায় অবস্থিত দালান, দেয়াল, গাছ, বেড়া, বিদ্যুৎ ও টেলিফোনের খুঁটি বা অন্য কোন দন্ডায়মান বস্তুতে; সরকারি বা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের স্থাপনাসমূহে পোস্টার, লিফলেট বা হ্যান্ডবিল ঝুলাতে বা টাঙাতে যাবেনা।
এ ছাড়া কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর পোস্টার, লিফলেট, হ্যান্ডবিল ছেঁড়া বা অন্য কোন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর পোস্টার, লিফলেট, হ্যান্ডবিল ইত্যাদি লাগানোসহ পোস্টার, লিফলেট ও হ্যান্ডবিল ইত্যাদির কোন প্রকার ক্ষতিসাধন তথা বিকৃতি বা বিনষ্ট করা যাবেনা বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।
অথচ এসব আইন যশোরে কোথাও মানা হচ্ছেনা। বরং বিধি ভেঙে যশোর পৌর এলাকায় বিদ্যুত ও টেলিফোনের খুঁটিতে পোস্টার টানিয়ে সয়লাব করে দিয়েছে প্রার্থীরা। যশোর শহরের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে বিদ্যুতের খুঁটির সাথে অতি ঝুঁকি নিয়ে টানানো হয়েছে নৌকা প্রতীকের পোস্টার। কোথাও এসব পোস্টার বিদ্যুতের তার ঘেঁষে যাওয়ায় সাধারণ মহলে ভীতি সঞ্চার হচ্ছে। এরমধ্যে যশোর মুজিব সড়ক এলাকায় এই প্রবণতা বেশি লক্ষ্য করা গেছে। ‘পোস্টারের আয়তন ২৩ / ১৮ এর অধিক হইতে পারবেনা এবং প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী পোস্টারে তাহার প্রতীক ও নিজের ছবি ব্যতীত অন্য কোন ব্যক্তির ছবি বা প্রতীক ছাপাতে পারবেনা’ বলে আচরণবিধিতে উল্লেখ করা থাকলেও কোথাও কোথাও বড় সাইজের পোস্টার টানিয়েও ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে। যশোর শহরের প্রাণকেন্দ্র দড়াটানা মোড়ে ট্রাফিক পুলিশের একটি আইল্যান্ড দখল করে বিশাল আকৃতির কাপড়ের তৈরি নৌকা টানিয়ে রাখা হয়েছে। যা সম্পূর্ণ নির্বাচনী আচরণবিধি বিরোধী বলে স্থানীয়রা দাবি করেছেন।
এদিকে সোমবার জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘণ করে যশোর সদর আসনের স্বতন্ত্রপ্রার্থী মোহিত কুমার নাথের সমর্থকদের বিরুদ্ধে নৌকা প্রতীক ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ এনে নৌকার প্রার্থী কাজী নাবিল আহমেদের প্রধান নির্বাচনী সমন্বয়ক লিখিত আবেদন করেছেন। একই দিনে যশোর-১ শার্শা আসনের স্বতন্ত্রপ্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আশরাফুল আলম লিটনের বিরুদ্ধে নৌকার ভোটারদের ভয়ভীতি দেয়ার অভিযোগ এনে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে নৌকার সমর্থকরা।
এ বিষয়ে জেলা সিনিয়র নির্বাচন অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার মো. আনিছুর রহমান বলেন, অভিযোগের বিষয়টি তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি বলেন, প্রার্থীদের অবশ্যই নির্বাচনী আচরণবিধি মানতে হবে। এর ব্যত্যয় ঘটলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।