গভীর রাতে আটকের পর চারদিনের রিমান্ডে থানার নির্যাতনের কথা বলে আদালতে কাঁদলেন বিএনপি নেতা এ্যানি

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ নাশকতার অভিযোগে রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় দায়ের করা মামলায় বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানির চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।  বুধবার দুপুরে তাকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে সাতদিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহিদী হাসান।
শুনানিতে এ্যানি কিছু বলবেন কি না, বিচারক জানতে চাইলে তিনি বিচারকের সামনে কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, আমি রাজনীতি করি। কোনো অপরাধ করলে গ্রেফতার করবে। কিন্তু আমাকে থানায় নিয়ে পুলিশের উপস্থিতিতে অত্যাচার-নির্যাতন করা হয়েছে। আমরা কোন যুগে বসবাস করছি। আমি কি চোর, না ডাকাত। এ্যানি আরও বলেন, রাত তিনটার সময় তারা এসে আমার বাসার দরজা ভাঙছে। আমি বলেছি আমাদের বাসায় ছোট ছোট বাচ্চা আছে। আমাকে যদি গ্রেফতার করতেই হয় আপনারা অপেক্ষা করুন।
যেহেতু রাত ৩টা বেজে গেছে আমি ফজরের নামাজ পড়েই আপনাদের সঙ্গে যাবো। তারপরও তারা দরজা ভেঙেছে। ৫ মাস আগের মামলায় আমাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এতোদিন ধরে আমি রাস্তায়ই ছিলাম। কয়েকবার ডিএমপি কমিশনারের কার্যালয়ে গিয়েছি, মিটিং করেছি। তখন কেন ধরল না। রাত তিনটার সময় কেন আমাকে টেনে-হিচড়ে বাসা থেকে বের করে আনবে। আমি একজন হার্টের রোগী। আমি এর বিচার চাই।
শুনানিতে এ্যানির পক্ষে অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক ফারুকী, অ্যাডভোকেট মোসলেহ উদ্দিন জসিম, ইকবাল সহ অর্ধশত আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন।
পরে এডভোকেট ওমর ফারুক ফারুকী সাংবাদিকদের বলেন, আইনে সুস্পষ্টভাবে বলা আছে আসামিকে কখন আটক করা যাবে আর কখন করা যাবে না। অথচ আইনকে অবজ্ঞা করে পুলিশ মধ্য রাতে একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিকে তার বাসগৃহের দরজা ভেঙে আটক করেছে। এটা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। আমরা আদালতে এসব বিষয় তুলে ধরেছি। শুনানি শেষে আদালত তার চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে। তিনি বলেন, সরকার বিরোধী দলের আন্দোলনকে নস্যাৎ করতে গ্রেফতার ও রিমান্ডের মতো পথ বেছে নিয়েছে।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার রাতে ধানমন্ডির নিজের বাসা থেকে এ্যানিকে আটক করে পুলিশ। মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত ২৩ মে ২০২৩ ধানমন্ডি সিটি কলেজের সামনে বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের প্রায় ১০-১৫ হাজার নেতাকর্মী জড়ো হয়ে পদযাত্রার সমাপনী বক্তব্য শেষে চলে যাওয়ার প্রাক্কালে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র, লাঠিসোটা, ইট-পাটকেল ও ককটেল ইত্যাদি মারাত্মক অস্ত্রশস্ত্রসহ পুলিশের সরকারি কাজে বাধাদান, পুলিশের ওপর আক্রমণ, সরকারকে উৎখাত ও জনসাধারণের জানমালের ক্ষতিসাধন, গণপরিবহন ভাঙচুর করে ক্ষতিসাধন, ককটেল বিস্ফোরণ করে ত্রাস সৃষ্টি ও নাশকতামূলক কর্মকা- শুরু করে। এ সময় পুলিশ বাধা দিলে পুলিশের ওপর হামলা করে এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে পুলিশ অফিসার ও ফোর্স গুরুতর আহত হন। পরে সরকারি সম্পত্তি, জনসাধারণের জানমালের নিরাপত্তার জন্য বেআইনি সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করার জন্য আসামিদের ধাওয়া করলে আসামিরা ঘটনাস্থল থেকে বিভিন্নভাবে ছত্রভঙ্গ হয়ে বিভিন্ন দিকে দৌড়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ধানমন্ডি থানায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা করে।