ছেলের লিভার প্রতিস্থাপন করেও বাঁচানো গেল না বিএনপি নেতা বজলুর রহমানকে,অনিন্দ্য ইসলাম অমিতসহ নেতৃবৃন্দের শোক

0

 

স্টাফ রিপোর্টার,মনিরামপুর (যশোর) ॥ একমাত্র ছেলের লিভার পিতার দেহে প্রতিস্থাপন করেও বাঁচানো গেল না মনিরামপুর উপজেলার চালুয়াহাটি ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক দুইবারের নির্বাচিত সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বজলুর রহমানকে। লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হয়ে ভারতের হায়দ্রাবাদ শহরে বিশেষায়িত একটি হাসপাতলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার ইন্তিকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। তার বয়স হয়েছিল ৫৪ বছর। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। ধারণা করা হচ্ছে হায়দ্রাবাদ থেকে তার মরদেহ আজ-কালের মধ্যে দেশে আনা হবে। চালুয়াহাটির জনপ্রিয় রাজনীতিক বজলুর রহমানের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তিনি থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মুছার ছোট ভাই।
বজলুর রহমানের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিএনপি কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগম।
মোহাম্মদ মুছা জানান, দীর্ঘদিন ধরে বজলুর রহমানকে দেশবরেণ্য চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে রেখে চিকিৎসা করানো হচ্ছিল। কিন্তু তার অবস্থার ক্রমেই অবনতি দেখা দেয়। এক পর্যায়ে তার লিভার নষ্ট হয়ে যায়। ফলে চিকিৎসকের পরামর্শে তাকে গত জুলাই মাসে ভর্তি করা হয় ভারতের হায়দ্রাবাদ শহরে বিশেষায়িত এআইজি হাসপাতালে। সেখানকার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শে বজলুর রহমানের একমাত্র ছেলে কলেজছাত্র ওয়াসিফ আহমেদ শুভর দেহে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে লিভারের ৭৫ ভাগ নিয়ে তার বাবার দেহে প্রতিস্থাপন করা হয়। কিছুদিনের মধ্যে ছেলে শুভ পুরোপুরি সুস্থ হয়। বজলুর রহমানের অবস্থাও দিন দিন উন্নতি হয়। কিন্তু হঠাৎ করেই কয়েকদিন ধরে বজলুর শারীরিক অবস্থার অবনতি দেখা দেয়।
অবশেষে বুধবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে তিনি ইন্তিকাল করেন। এদিকে চালুয়াহাটির দুইবারের সাবেক চেয়ারম্যান জনপ্রিয় নেতা বজলুর রহমানের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে তার গ্রামের বাড়ি আটঘরায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ছাড়াও হাজারো মানুষের ভিড় জমে।
বজলুর রহমানের মৃত্যুর খবর পেয়ে যশোর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগম, সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন, গোলাম রেজু দুলু, মনিরামপুর থানা বিএনপির আহ্বায়ক পৌরসভার সাবেক মেয়র অ্যাডভোকেট শহীদ ইকবাল হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মফিজুর রহমান, পৌর বিএনপির সভাপতি খায়রুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আবদুল হাই, আসাদুজ্জামান মিন্টু, জাহাঙ্গীর বিশ্বাসসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ বাড়িতে গিয়ে বজলুর রহমানের আত্মার মাগফিরাত কামনা ও শোকসন্তপ্ত পরিবারকে সান্ত¦না দিয়ে সমবেদনা জানান।
বজলুর রহমানের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক(খুলনা বিভাগ) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। এক শোক বার্তা তিনি বলেন, বজলুর রহমান শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের দর্শন ও আদর্শে গভীর আস্থাশীল ছিলেন। মনিরামপুরে বিএনপিকে একটি শক্তিশালী ভিত্তির ওপর দাঁড় করাতে তিনি বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেন। জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়ে বজলুর রহমান জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ থেকে সততা নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করে গেছেন। দোয়া করি মহান রাব্বুল আল আমিন যেন তাকে জান্নাতের সর্বোচ্চ মাকাম ও তার শোকাহত স্বজনদের ধৈর্য্য ধারণের ক্ষমতা দেন।