স্টাফ রিপোর্টার,ঝিনাইদহ ॥ ঝিনাইদহের সদর উপজেলার হলিধানী ইউনিয়নে চিরকুট লিখে আত্মহত্যাকারী সিরাজুল ইসলাম সুরুজের স্ত্রীর দায়ের করা মামলার চার আসামির অন্যতম তরিকুল ইসলাম শনিবার গ্রেফতার হয়েছে। এর আগে চিরকুট লিখে পাওনাদারদের নির্যাতনে আত্মহত্যা করেন হলিধানী ইউনিয়নের সিরাজুল ইলসলাম সুরুজ নামে এক চা দোকানি।
পরে আত্মহনণকারী সিরাজুল ইসলাম সুরুজের স্ত্রী সফুরা খাতুন থানায় আত্মহত্যার প্ররোচণার মামলা করেন। মামলায় চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার হাসনাহাটি গ্রামের শহর আলী মুন্সির ছেলে তরিকুল ইসলামসহ সদর থানার হলিধানী ইউনিয়নের কুখ্যাত সুদি ব্যবসায়ী কোলা গ্রামের আবু বক্কর মাস্টারের ছেলে ফারুক ডাক্তার, হলিধানী বাজারের লুৎফর রহমানের ছেলে আনিছুর রহমান আনিছ ও সোনারদাইড় গ্রামের সৈয়দ আলী মেম্বারের ছেলে মতিয়ার রহমানসহ ৪ জনকে আসামি করেন। সফুরা খাতুন তার এজাহারে উল্লেখ করেন, তার স্বামী সুরুজের হলিধানী বাজারে চায়ের দোকান আছে। ব্যবসায়িক প্রয়োজনে বিভিন্ন সময় উল্লিখিত আসামিদের কাছ থেকে সুদে টাকা ধার করে ব্যবসা করতেন। ধারের এই টাকা পরিশোধও করে দেন।
কিন্তু হঠাৎ একদিন আসামিরা জোটবদ্ধ হয়ে বাদীর বাড়িতে প্রবেশ করে তার ছেলে সাজেদুল ইসলাম শাকিলের হাতে একটি লিগ্যাল নোটিশ ধরিয়ে দেন। তখন আমার স্বামী ও ছেলে ধারের টাকা সম্পূর্ণ পরিশোধ করার কথা জানালে আসামিরা আমার বাড়ির উঠানে দাড়িয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এতে আমার স্বামী সুরুজ মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে এবং গত ৮ সেপ্টেম্বর বাড়িতে গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যা করেন। সফুরা খাতুনের অভিযোগ আমার স্বামীর আত্মহত্যার পেছনে আসামিদের প্রকাশ্যে হাত রয়েছে। তাদের প্ররোচণায় আমার স্বামী আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে।
আত্মহত্যার সময় সুরুজের পকেটে পাওয়া চিরকুটে উল্লেখ ছিল ‘সুদখোরদের অত্যাচারে বাঁচতে পারলাম না, আমার জায়গা-জমি বাড়ি সব বিক্রি করে দিয়েছি। একেকজনের কাছ থেকে যে টাকা নেওয়া তার আট-দশগুণ পরিমাণ টাকা দিয়েও রেহাই দিলো না তারা। কেউ কেস করেছে কেউ অপমান অপদস্ত করেছে আমি আর সহ্য করতে পারছি না তাই বিদায় নিলাম। আমার জানাজা হবে কিনা জানি না। যদি হয় তখন সব সুদখোররা টাকা চাইতে এলে আমার শরীরটাকে কেটে ওদেরকে দিয়ে দিবেন। এই সুদখোরদের বিচার আল্লাহ করবে। সুদখোরদের নাম বললাম না কিন্তু তারা সবাই টাকার জন্য আসবে। তখন বুঝতে পারবেন তারা কারা আমি ক্ষমার অযোগ্য তবু ক্ষমা করে দিবেন।’