আমদানি বাড়লেও দাম কমেনি ইলিশের কাঠেরপুলে গরুর মাংস এখনও ৭৫০ টাকা

0

শেখ আব্দুল্লাহ হুসাইন ॥ বাজারে আবারও বেড়েছে আলুর দাম। কমেনি ইলিশ মাছ, সবজি, গরুর মাংসের দাম। তবে,বাজারে পণ্যের সরবরাহ বাড়লেও উচ্চমূল্যের কারণে মানুষ ক্রয়ক্ষমতা হারিয়ে ফেলছে। ফলে বাজারে ক্রেতার অভাব দেখা দিয়েছে। শুক্রবার যশোরের বড়বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।
সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার বড়বাজারে প্রচুর সংখ্যক মানুষ কাঁচাবাজার করতে আসেন। মানুষের ভিড়ে এদিন বাজার গমগম করে। কিন্তু  বাজারের চিত্র ছিল অন্যান্য দিনের মতো স্বাভাবিক। স্বভাবতই বন্ধের এ দিন বাজারে পণ্যের সরবরাহও বাড়তি থাকে। আশানুরুপ ক্রেতার অভাবে দোকানিদের বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসে থাকতে দেখা যায়।
খাতা-কলমে বর্ষাকাল (আষাঢ়-শ্রাবণ) চলে গেছে। এসেছে শরৎকাল (ভাদ্র-আশ্বিন)। কালেভদ্রে ভারী বৃষ্টি হলেও মৌসুমের পর্যাপ্ত বৃষ্টি এখনও হয়নি। এ কারণে নদীতে কাক্সিক্ষত ইলিশ মাছ ধরা পড়ছে না। বাজারে এখন সিংহভাগ ইলিশ মিলছে সাগরের। যার স্বাদ ও ঘ্রাণ নদীর মিঠাপানির তলানিতে। তারপরও বাধ্য হয়ে মানুষ সাগরের ইলিশ কিনে নিয়ে বাড়ি ফিরছেন নদীর মাছ মনে করে। কারণ অধিকাংশ খুচরা মাছ বিক্রেতারা ক্রেতাদের কাছে সাগরের ইলিশ পরিচয় গোপন রাখছেন।
আড়তে পাইকারি বাজারে নদীর ইলিশ থেকে সাগরের ইলিশের দাম কম। কিন্তু খুচরা বিক্রেতারা ক্রেতাদের কাছে নদীর ইলিশ বলে সাগরের ইলিশ বিক্রি করে অধিক মুনাফা লুটে নিচ্ছেন। এমনই অভিযোগ করলেন জনৈক ক্রেতা আব্দুল হালিম। তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, গত সপ্তাহে বড়বাজার মাছবাজার থেকে নদীর ইলিশ বলে কিনে নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু রান্নার পর খেয়ে তৃপ্তি না পাওয়ায় তিনি বুঝেছেন বিক্রেতা তাকে ঠকিয়েছেন।
কয়েকদিনে বড়বাজার মাছবাজারে সাগরের ইলিশের সরবরাহ যথেষ্ট বেড়েছে। তবে অত্যধিক দামের কারণে মানুষ দোকানের ধারে কাছে যাচ্ছেন না।  শুক্রবার এক কেজি ২০০ গ্রাম সাইজের ইলিশ ১৭শ টাকা, ৮০০/৯০০/গ্রাম সাইজের ইলিশের কেজি ১৪শ টাকা, ২টায় কেজি ১০৫০ টাকা ও ৫/৬ টায় কেজি ইলিশ ৫০০/৬০০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
এদিকে এ সপ্তাহে বাজারে আলুর দাম বেড়েছে। খুচরা বিক্রেতাদের ৪০ টাকার আলু শুক্রবার ৪৫ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়। সবজির দামও কমেনি। গতকালও শিম প্রতি কেজি ২০০/২২০ টাকা, গাজর ১৮০ টাকা, টমেটো ১০০ টাকা, বরবটি ৮০/১০০ টাকা, বেগুন ৮০/৯০ টাকা, উচ্ছে ৮০ টাকা, ওল ৮০ টাকা, মুখিকচু ৭০/৮০ টাকা, শসা ৫০/৬০ টাকা ও জিঙে ৫০/৬০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। তবে কাঁচা মরিচের দাম কিছুটা কমেছে। শুক্রবার ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৮০ টাকা।
বড়বাজার কাঠেরপুলে গতকালও প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭৫০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। অথচ এই শহরেই গত এক সপ্তাহ ধওে ধর্মতলার বিক্রেতারা মানুষকে ৬৫০ টাকা কেজিতে উৎকৃষ্টমানের গরুর মাংস দিচ্ছেন। ক্রেতা গফুর বিশ^াস জানান, ধর্মতলার মাংস বিক্রেতারা যদি ৬৫০ টাকায় মাংস দিতে পারে, তাহলে বুঝতে হবে কাঠেরপুলের বিক্রেতারা একটা গরুতেই কাড়ি কাড়ি টাকা লাভ করে। সময় এসেছে এদিকে প্রশাসনের নজর দেওয়া।