ঝাঁপা গ্রামে বিশ কি.মি কাঁচা রাস্তায় ৩০ হাজার মানুষের ভোগান্তি

0

ওসমান গণি. রাজগঞ্জ (যশোর) ॥ যশোরের মনিরামপুর উপজেলার ঝাঁপা ইউনিয়নে স্বাধীনতার ৫২ বছরেও উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। এ ইউনিয়নের তিনটি ওয়ার্ড নিয়ে ঝাঁপা গ্রাম। ঝাঁপা বাঁওড় ও কপোতাক্ষ নদের পাড়ের এই গ্রামটিকে অনেকেই দ্বীপ বলে থাকেন। এই দ্বীপ নামের গ্রামটিতে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ হাজার মানুষ বসবাস করেন।
এই তিনটি ওয়ার্ডের আশপাশের গ্রামগুলোতে যোগাযোগের উন্নতি ঘটলেও ঝাঁপা দ্বীপের মানুষ বঞ্চিত। গ্রামবাসীর ভোগান্তি ২০ কিলোমিটারের ৬টি কাঁচা সড়ক। বিকল্প কোনও সড়ক ব্যবস্থা না থাকায় এই ৬টি কাঁচা সড়ক দ্বীপ নামের এ গ্রামবাসীর জীবনযাত্রাকে দুর্বিষহ করে তুলেছে।
ভুক্তভোগী গ্রামবাসীর অভিযোগ, দেশ স্বাধীনের পর থেকে স্থানীয় অনেক জনপ্রতিনিধি গেছে। কিন্তু দ্বীপ নামের এ গ্রামটির ৬টি কাঁচা সড়কের উন্নয়নে তেমন সুদৃষ্টি দেয়নি কেউ। সরজমিনে দেখা যায়, দুটি ভাসমান সেতুর উত্তর, দক্ষিণ ও পশ্চিম পাশের প্রায় ২০ কিলোমিটারের ৬টি কাঁচা সড়কের বেহাল দশা। এখন বর্ষা মৌসুম। এই মৌসুমে কাঁচা সড়কগুলোতে বৃষ্টির পানি জমে মারাত্মক কাদার সৃষ্টি হয়। যাতায়াতের বিকল্প কোনও সড়ক না থাকায় কাদায় ভরা এই সড়কের ওপর তারা নির্ভরশীল থাকতে হচ্ছে গ্রামবাসীকে।
ঝাঁপা গ্রামের বাসিন্দা হুমায়ন কবির বলেন, কাঁচা এ সড়কগুলো দিয়ে প্রতিদিন কর্মজীবীসহ শ শত মানুষ ও স্কুল কলেজের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা যাতায়াত করে। একটু বৃষ্টিতেই দ্বীপ নামের গ্রামের সড়কগুলো কাদাপানিতে চলাচলের সম্পূর্ণ অনুপযোগী হয়ে পড়ে। সেই সাথে রিকশাভ্যান, বাইসাইকেল ও মোটরসাইকেল চলাচলও কঠিন হয়ে পড়ে। পাশাপাশি পায়ে হেঁটে চলাচল করতেও মারাত্মক কষ্ট হয় বয়োবৃদ্ধসহ স্কুল কলেজপড়–য়া শিক্ষার্থীদের।
ঝাঁপা গ্রামের কৃষক মোশারফ হোসেন জানান, কাঁচা রাস্তায় কাদার কারণে জরুরি রোগীসহ তাদের উৎপাদিত ধান,পাট ও শাক-সবজি নিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। এছাড়া কাঁচা রাস্তাগুলো চলাচলের সম্পূর্ণ অনুপযোগী হয়ে পড়ায় কোমলমতি শিক্ষার্থীরাও বিদ্যালয়ে যেতে অনীহা প্রকাশ করে বলে জানান এ কৃষক।
ঝাঁপা ইউনিয়নের ২নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মোহাম্মদ মুছা জানান, স্বাধীনতার পর থেকে এ কাঁচা সড়কে কোনও কাজ হতে দেখেনি। বৃহত্তর এ ইউনিয়নের প্রায় সব রাস্তায় পাকা। কিন্তুু দ্বীপ নামের এ গ্রামটির কোনও রাস্তাই আজ পর্যন্ত পাঁকা হয়নি। ফলে কাঁচা রাস্তা দিয়ে তাদের উৎপাদিত ফসল নিয়ে চলাচল করতে অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয় বলে দাবি করেন এ জনপ্রতিনিধি।
এ ব্যাপারে ঝাঁপা ইউপি চেয়ারম্যান শামছুল হক মন্টু জানান, বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কাঁচা রাস্তাগুলো পাঁকাকরণের আশ্বাসও দিয়েছেন। ফলে বর্ষা মৌসুম শেষেই দ্বীপ নামের এ গ্রামের কাঁচা রাস্তাগুলো পাকাকরণের কাজ শুরু হবে বলে জানান এ জনপ্রতিনিধি।
মনিরামপুর উপজেলা প্রকৌশলী বিদ্যুৎ কুমার জানান, সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধিদের কাছে কাঁচা রাস্তাগুলোর একটি তালিকা চাওয়া হয়েছে। তালিকাটা হাতে পেলেই পাকাকরণের কাজ শুরু হবে বলে।