এক ভিসা নীতিতেই সরকারের লাফালাফি শেষ : মির্জা ফখরুল

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, কয়েকদিন আগে সরকার খুব লাফালাফি করে ছিল। এখন কিন্তু থেমে গেছে। তারা এখন বলছে আমরা সংঘাত চাই না। আলোচনায় বসতে চাই। এক ভিসা নীতিতেই সরকারের লাফালাফি শেষ হয়ে গেছে।
সোমবার (২৯ মে) শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ৪২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার ইনিস্টিউটে আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, স্বাধীনতার ঘোষক, আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার, বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। তিনি জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। তার ঘোষণায় আমরা একটি স্বাধীন দেশ ও পতাকা পেয়েছি। এই মহান ব্যক্তির শাহাদৎ বার্ষিকীতে তার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছি।
শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের জানাজার স্মৃতি স্মরণ করে তিনি বলেন, যেদিন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এর মরদেহ চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় আনা হয়েছিল। গার্ড দেয়ার জন্য সেনা সদস্যরা দাড়িয়ে ছিল কিন্তু তার কফিন দেখে সেই সুশৃংখল বাহিনী তার লাইন ভেঙে কান্নায় ভেংগে পড়েছিল। তার জানাজায় ইমাম সাহেব দোয়ায় বলেছিলেন, এ আল্লাহ বাংলাদেশ তাকে হেফাজত করো। তারা একটাই কথা বলেছিল, এমন প্রেসিডেন্ট পাবো কিনা জানি না। যতই তাকে খলনায়ক বানায়োর চেষ্টা করুক না কেন, কিন্তু তাকে মানুষের মন থেকে মুছে ফেলা যায়নি, যাবে না। এটা ধ্রুব তারা মতো স্পষ্ট।
তিনি আরো বলেন, দেশের কঠিন সময়ে এই জাতির সামনে ত্রাণ কর্তা হাজির হয়েছেন জিয়াউর রহমান। যতই যা লেখেন না কেন? তাকে কারো মন থেকে মুছে ফেলা যাবে না। যেখানে ভবিষৎ নেই , সেখানে তিনি আশার আলো তৈরি করেছিলেন।
মহাসচিব বলেন, তিনি খাল কেটে কৃষিতে সেচ কাজ করে ছিলেন, উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান বীজ এনে ছিলেন জিয়াউর রহমান। বিদ্যুৎতের উন্নতি কে করেছিলেন? জিয়াউর রহমান। আওয়ামী লীগ সব রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করে বাকশাল কায়েম করেছিল। আর জিয়াউর রহমান বাকশাল বাতিল করে গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতির প্রসঙ্গ তুলে ধরেন মির্জা ফখরুল বলেন, কয়েকদিন আগে সরকার খুব লাফালাফি করে ছিল। এখন কিন্তু থেমে গেছে। তারা এখন বলছে আমরা সংঘাত চাই না। আলোচনা বসতে চাই।
তিনি বলেন, আমরা লড়াই করছি, আমরা সংগ্রাম করছি। আমাদের নেতা তারেক রহমান নেতৃত্বে আমাদের সংগ্রাম সন্নিকটে নিয়ে গেছি। আমরা খুব পরিষ্কার করে বলতে চাই, শান্তিপূর্ন পরিবেশ চাই, আমাদের ভোটের অধিকার ফিরে পেতে চাই, মানুষ তার প্রতিনিধি নির্বাচিত করতে চায়।
সরকার বলছে এখন নাকি আমেরিকা থেকে রেমিটেন্স বেশি আসছে। কি এমন যাদু পেলো? আমেরিকা গেলে সবাই বাড়ি ভিটা বিক্রি করে যায়। তারা আবার টাকা কোথায় পাবে এমন মন্তব্য করে মহাসচিব বলেন, ওরা চোর, এই চোরেরা টাকা পাচার করে এখন সেই টাকা ফিরে আনছে এখন। কারণ সরকার বলছে এদের নাকি আবার আড়াই পার্সেন্ট ইন্টেন্সিপ দিবে।
নেতাকর্মীদের সতর্ক করে দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার আমাদের কে সব সময় ট্র্যাপে ফেলতে চায়, তারই আমাদেরকে সব সময় সাবধান থাকতে হবে। এরা আগুন লাগিয়ে আমাদের দোষ দিবে। এরা আগেও দিয়েছিল। এখন দিবে। তাই কোন ট্র্যাপে পা দেয়া যাবে না।
প্রধান অতিথি বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড মোশাররফ হোসেন বলেন, জিয়াউর রহমান জীবনে তিনটি সফল ব্যাক্তিত্বের অধিকারী ছিলেন, এক সৈনিক জীবন, রাজনৈতিক জীবন, রাষ্ট্র প্রধান হিসেবে তিনি সফল।
তিনি বলেন, সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতির নামে লুঠপাট হচ্ছিল, সে জন্য তিনি সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি বাতিল করে মুক্ত অর্থনীতি চালু করেছিলেন। এই আওয়ামী লীগ সব দল নিষিদ্ধ করে বাকশাল করেছিল। আর জিয়াউর রহমান সুযোগ পেয়ে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে গিয়েছেন। সে কারনে রাজনৈতিকবিদ হিসেবে সফল। এ কারণে বর্তমান সরকার শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে ভয় পায়। সরকার বলে জিয়াউর রহমান নাকি মুক্তিযোদ্ধা নন, তিনি নাকি যুদ্ধ করেননি। এরা জিয়াউর রহমানের নামে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে প্রজন্মের কাছে। কিন্তু কোন লাভ হবে না।
শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন তৎকালিন মুক্তিযুদ্ধের অনেক বই থেকে কোড তুলে ধরেন। বাংলাদেশ, ভারত সামরিক বাহিনীর সুম্মুখ মুক্তিযোদ্ধাদের লেখা বইয়ের লেখনী তুলে ধরেন ড মোশাররফ।

তিনি বলেন, আজকে সারা বিশ্বে যে ব্লু অর্থনীতি নিয়ে কথা বার্তা হছে। অথচ সেই চিন্তা কিন্তু জিয়াউর রহমান ৪২ বছর আগে করেছিলেন। নীল অর্থনীতি ভাবনায় তিনি দেশের সুনামধন্য শিক্ষার্থী, বিজ্ঞানীদের কাছে উপস্থান করে গিয়েছিলেন। সরকার বলছে, এটা নাকি তার প্রমোদ করার জন্য করেছিলেন। এয়ার পোর্ট থেকে জিয়ার নাম মুছে ফেলা যাবে কিন্তু জনগণের মন থেকে তার নাম মুছে ফেলা যাবে না।
বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে দলটির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান ওমর বীর উত্তম, অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন, শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, বিএনপি নেতা ফজলুল হক মিলন, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।