৩০ বছর উন্নয়ন বঞ্চিত রেজাকাটি শহীদ জিয়াউর রহমান মাধ্য. বিদ্যালয়

0

 

জয়দেব চক্রবর্ত্তী, কেশবপুর (যশোর)॥ প্রতিষ্ঠার পর দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে উন্নয়ন বঞ্চিত যশোরের কেশবপুরে রেজাকাটি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়। জানালা, দরজাবিহীন ভবনের দেয়ালে ফাটল ধরায় তা ধসে পড়ার আশংকা করা হচ্ছে। রয়েছে শ্রেণিকক্ষ, চেয়ার-বেঞ্চ, সুপেয় পানি, টয়লেটসহ নানাবিধ সংকট। ভবন বরাদ্দের দাবি জানিয়ে ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেও কোন প্রতিকার মেলেনি। শিক্ষকদের অভিযোগ, ওই প্রতিষ্ঠানের নামে দুইবার ভবন বরাদ্দ হলেও জিয়াউর রহমানের নামে হওয়ায় শেষ সময়ে তা বাতিল হয়ে যায়।
বিদ্যালয়ের সূত্র জানায়, ১৯৯৩ সালে রেজাকাটি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। বিদ্যালয়ের ১৫২ জন ছাত্র-ছাত্রীর লেখাপড়ায় ৭ জন শিক্ষক ও ৫ জন কর্মচারী রয়েছেন। প্রতিষ্ঠালগ্নে শিক্ষকদের অর্থায়নে ৫ কক্ষ বিশিষ্ট দুটি টিনের চালার আধাপাকা ঘর নির্মাণ করা হয়। এর অফিস রুমে যেনতেনভাবে দরজা, জানালা লাগানো হলেও শ্রেণিকক্ষের কোন জানালা, দরজা না থাকায় অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে আছে। প্রতিষ্ঠানের চালের টিন নষ্ট হলেও তা অর্থাভাবে আজও সংস্কার সম্ভব হয়নি। বহু আগেই আধাপাকা ঘর দুটি পরিত্যাক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। এরই মধ্যে চলছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান। ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত ৭টি শ্রেণিকক্ষের প্রয়োজন থাকলেও রয়েছে মাত্র ৪টি।
বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী নাসরিন সুলতানা বলেন, তীব্র কক্ষ সংকটের কারণে অনেক সময় সব শ্রেণির পাঠদান সম্ভব হয় না। মাঝে মধ্যে মেঝে ও খেলার মাঠে পাঠদান করতে হয়। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের একই টয়লেট ব্যবহার করতে হয়। তাও জরাজীর্ণ। সুন্দর ভবন না থাকায় অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদের এ স্কুলে ভর্তি করাতে চান না।
দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ঐশী তাহাসিনা জানায়, বেঞ্চ ও শ্রেণিকক্ষ সংকটে ক্লাসে গাদাগাদি করে বসতে হয়। প্রচন্ড গরমে আমাদের খুব কষ্ট হয়। বর্ষা মৌসুমে সামান্য বৃষ্টিতে পানি পড়ে বই খাতাপত্র ভিজে যাওয়ার উপক্রম হয়। বিদ্যালয়ে সুপেয় পানির কোন ব্যবস্থা না থাকায় দূর থেকে খাওয়ার পানি আনতে হয়। তাদের ওয়াসরুমসহ কোন কমনরুম, টয়লেট নেই।
প্রধান শিক্ষিকা জাহানারা খাতুন বলেন, প্রতিষ্ঠানের সমস্যার কথা বলে শেষ করা যাবে না। এ প্রতিষ্ঠানের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো, এ মুহূর্তে একটি পাকা ভবন। ভবনের দেয়ালগুলো ফাটল ধরে ধসে পড়ার হুমকিতে রয়েছে। ভবন চেয়ে শিক্ষা অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে একাধিক বার আবেদন করা হয়েছে। আশপাশে এমন কোন স্কুল নেই যে তার ভবন হয়নি। শুধু ব্যতিক্রম এ স্কুল। কারণ প্রতিষ্ঠানটির নাম জিয়াউর রহমানের নামে হওয়ায় সবাই এর উন্নয়ন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। এক সাথে সকল শিক্ষার্থীর পাঠদান করানোর মত পর্যাপ্ত জায়গা আমাদের নেই। জায়গার অভাবে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের অতিরিক্ত পাঠদান সম্ভব হয় না।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জিল্লুর রশিদ বলেন, আমি এ উপজেলায় নতুন যোগদান করেছি। ওই প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে আমার তেমন কিছুই জানা নেই। এ বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।