চৌগাছায় কপোতাক্ষ খননে এলাকাবাসীর প্রশ্ন

0

 

স্টাফ রিপোর্টার, চৌগাছা (যশোর) ॥ চৌগাছায় কপোতাক্ষ নদ খনন নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। প্রায় তিন বছর ধরে যত্রতত্র ভাবে চলছে খনন কাজ। যে ভাবে খনন হচ্ছে তাতে নদ যেন ছোট খালে পরিণত হচ্ছে। নদের পাড়ে বহু স্থাপনা রক্ষা করে চলছে কার্যক্রম। এ ভাবে নদ খনন হলে এটি সরু খালে পরিণত হবে বলে মনে করছেন অনেকে। খননকার্য পরিদর্শনে সংশ্লিষ্ট দফতরের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে কপোতাক্ষ নদ খননের উদ্যোগ গ্রহণ করে সরকার। উপজেলার হাকিমপুর ইউনিয়নের তাহেরপুর ব্রিজ সংলগ্ন হতে যশোরের মণিরামপুর উপজেলা পর্যন্ত প্রায় ৭৯ কিলোমিটার খনন করা হবে। যার ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৭০ থেকে ৮০ কোটি টাকা। শুরুর বছরে নদের অল্প কিছু এলাকা খনন করে বৃষ্টির কারণে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ২০২১-২০২২ অর্থ বছরের ফের্রুয়ারি মাসে পুনরায় কাজ শুরু করে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানগুলো। ওই বছরে বেশ কিছু কাজ করার পর আবারও বৃষ্টির কারণে বন্ধ হয় কাজ। চলতি অর্থ বছরে নদের পানি কিছুটা কমে যাওয়ায় গত এক সপ্তাহ ধরে আবারও শুরু হয়েছে খনন কাজ। কিন্তু এই খনন নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। বিশেষ করে নদের তলদেশের কাদা অক্সিমিটারের মাধ্যমে তুলে তা পাড়ে স্তূপ করা হচ্ছে। অল্প বৃষ্টিতে এই কাদা মাটি পুনরায় নদে পড়ে আবারও ভরাট হচ্ছে। নদে থাকা পানি আর পট কচুড়ির মধ্য হতে তোলা হচ্ছে কাদা। যে পরিমাপে খনন হওয়ার কথা তা আদৌ হচ্ছে কিনা তা নিয়েও সৃষ্টি হয়েছে সংশয়। গত অর্থ বছরে যেখানে যতটুকু খনন হয়েছে সেখানে এবছর আজও কাজ শুরু হয়নি। এ ছাড়া নদের পাড়ে অবৈধ স্থাপনা রেখে খনন কাজ চলছে বলে অভিযোগ রয়েছে। নদ খনের আগে এলাকায় ব্যাপক প্রচার ছিলো অবৈধ দখলদারদের কবল থেকে নদের জমি উদ্ধার করে খনন কাজ সম্পন্ন হবে। কিন্তু খননকাজ শুরু হলে এর বিপরীত দৃশ্য দেখেন এ জনপদের বাসিন্দারা। শনিবার ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, নতুন নির্মিত চৌগাছা সেতুর উত্তর পাশে দুইটি অক্সিমিটার দিয়ে চলছে খনন কাজ। ওই স্থানে নদের পূর্ব পাড়ে রয়েছে বেশ কিছু বসতি ঘর আর পশ্চিম পাশে আছে এক ব্যক্তির বাড়ি। তিনি নদের জমিতে টিনশেডের ঘর তৈরি করে নদের জমি দখলে রাখার চেষ্টা করছেন। টিনশেডের ঘরের দুই পাশেই নদ খননের কাদামাটি জমা করা হলেও অজ্ঞত কারণে ঘরটি রয়েছে অক্ষত। স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, নদের জমি যারা দখলে রেখেছেন তারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে সরকারি দলের সাথে সম্পৃক্ত। ওই সব ব্যক্তি নানা ভাবে দেন দরবার করে তাদের স্থাপনা রক্ষার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। এই ভাবে যদি নদ খনন করে কাজ সম্পন্ন করা হয় তাহলে সরকারের এই উদ্যোগ কোনভাবেইে সফল হবে না। লাভবান হবে ঠিকাদার আর নদ পাড়ে যাদের জমি আছে ওই ব্যক্তিবর্গ। নদের কাদা মাটি তুলে যে স্থানে ফেলা হচ্ছে এক সময় ওই স্থানের উপরে যাদের জমি আছে তারাই সমুদয় জায়গা দখলে নিবে। পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কপোতাক্ষ খননকাজ সরেজমিন পরিদর্শন করে সব ধরনের অনিয়মের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।