ভোগ্যপণ্যের অস্বাভাবিক দাম!

0

 

মুকুরুল ইসলাম মিন্টু চৌগাছা (যশোর) ॥ চৌগাছায় ভোগ্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধিতে দিন দিন চরম অসহায় হয়ে পড়েছেন নিন্ম আয়ের মানুষ। নুন আনতে পানতা ফুরোই এমন পরিবারগুলোর অবস্থা বেজায় খারাপ। সামনে মাহে রমজান। এখনই বাজার অস্থির। আর রমজান শুরু হলে নিত্যপণ্যের দাম কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় সেই চিন্তায় ব্যাকুল অনেকে।
গতকাল চৌগাছার প্রধান সবজি বাজার থেকে শুরু করে মুরগী, মাছ বাজার, গোশ ও মুদি দোকান ঘুরে দেখা গেছে, ক্রেতার উপস্থিতি বহুলাংশে কম। ক্রেতা কম তাই বেচাকেনা নিয়েও অসন্তোষ ব্যবসায়ীদের মাঝে। এদিন বাজারে ১ কেজি গরুর গোশ বিক্রি হয়েছে ৭০০ থেকে ৭২০ টাকায়। আর খাশির গোশ ১ হাজার টাকা কেজি। অনুরুপভাবে ফার্মের ব্রয়লার মুরগীর কেজি ২৩০, সোনালী মুরগী ৩৪০, দেশি মুরগী ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। ডিমের হালি ৪৮ থেকে ৫০ টাকা। মাছের বাজারও অস্থির। দেশি প্রজাতির এক পোয়া মাছ আড়াইশ থেকে ৩শ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তেলাপিয়া ১২০ হতে ২০০ টাকা কেজি। ১ কেজি ওজনের রুই মাছ আড়াইশ থেকে ৩শ টাকা। কার্প জাতীয় মাছের কেজি ২০০ হতে সাড়ে ৩শ টাকা, আর ইলিশ মাছ মাঝারি সাইজের বিক্রি হচ্ছে ৭শ থেকে ১২শ টাকা কেজি দরে। সবজি বাজারের অবস্থা আরও নাজুক বলে ক্রেতা সাধারনের সাথে কথা বলে জানা গেছে। এদিন বাজারে একটি লাউ ৪৫ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এক আটি লাল শাক ১৫ টাকা, পুইশাক ৪০ টাকা, বাঁধাকপি প্রতি পিস ২৫ টাকা, বেগুনের কেজি ৫০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১৭০ টাকা কেজি। ১ কেজি উচ্ছে ১৪০ টাকা, টমেটো ৪০ টাকা, পটল ১০০ টাকা, পেঁয়াজ ৩০ টাকা আর রশুন কেজি ১১০ টাকা। মসলাসহ মুদি মালামালের দাম ছুটছে পাগলা ঘোড়ার মত। যৌক্তিক কোন কারণ ছাড়াই চড়া দাম হাকিয়ে এসব পণ্য বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। একাধিক ব্যবসায়ী জানান, পূর্বে ব্যবসা করে তারা লাভবান হয়েছেন। কিন্তু বর্তমান অস্থির বাজারে ব্যবসায়ীরা আগের মত আর ব্যবসা করতে পারছেনা। ব্যবসায়ীদের ধারণা, মানুষের কাছে টাকা নেই তাই বিক্রি কমেছে বহুলাংশে। পণ্যের দাম সাধারণের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাকলে ক্রেতার উপস্থিতির হার বেশি হওয়ার সাথে সাথে ব্যবসাও ভালো হবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।।
বাজার করতে আসা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বিনয় কুমার বলেন, দিন শেষে ৩ থেকে ৪শ টাকা রোজগার হয়। এই টাকায় সংসার চালানো বড়ই কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, দিনে ৩শ টাকা হাজিরায় বাস মালিক সমিতিতে কাজ করি। এই ৩শ টাকায় মাছ কিনলে টাকা শেষ। আর কিছুই কেনা হয়না। পরিবার নিয়ে এভাবে বেঁচে থাকা অসম্ভব হয়ে উঠেছে। গৃহবধূ সোনালী খাতুন বলেন, স্বামী ছোট একটি দোকানদার, তিনি যে রোজগার করেন তাতে সন্তানের পড়ার খরচ বাদ দিলে আর টাকা থাকেনা। সামনে রোজা, আমার মত দিন আনা দিন খাওয়া মানুষগুলো কিভাবে চালাবে সংসার? শহর থেকে গ্রামের সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের দুর্ভোগ আরও চরমে বলে জানা গেছে। গ্রামে এমনও পরিবার আছে, ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও দীর্ঘদিন খাশির গোষ, ইলিশ মাছ এমনকি দেশি মুরগীর স্বাদ নিতে পারেন নি। এক সময় কম দামে পাওয়া যেত ডিম এখন একটি ডিমের দাম ১২ টাকা। তাই অনেকেই ডিমও খেতে পারছেন না।