সাকিবের আচরণে হতবাক, বিব্রত প্রবাসীরা

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ ক্রিকেট নিয়ে বাঙালির আবেগ বরাবরই বেশি। প্রবাসীদের তা আরো বেশি। সেই আবেগের টানে ক্রিকেটারদের সঙ্গে নৈশ ভোজের আয়োজন করেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার ব্রিসবেনের প্রবাসী বাংলাদেশিরা। আয়োজক ছিল বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন ইন ব্রিসবেন (ব্যাব)। কিন্তু সৌজন্যের সেই অনুষ্ঠানে ক্রিকেটার ও সমর্থকদের মাঝে ছড়িয়েছে তিক্ততা।
আয়োজকদের অভিযোগ, ব্রিসবেনের ভিক্টোরি চার্চ বেলবার্ড পার্কের সেই অনুষ্ঠানে এসে ক্রিকেটারদের কেউ কেউ রীতিমতো অপমান করে গেছেন তাদের। অভিযোগের তীরটা সাকিবের দিকেই ছুঁড়েছেন আয়োজকরা। তার এমন আচরণে হতবাক ও বিব্রত তারা।
ব্যাবের সভাপতি শেখ বাশার উদ্দিন বলেছেন, ‘প্রবাসীদের সামনে আমাদের জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়কের আচরণ ছিল হতাশাজনক।’
দেশের একটি শীর্ষ গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা গেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ দল ব্রিসবেনে থাকার সময় তাদের সংবর্ধনা দিতে এ রকম একটা অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশের দূতাবাস এবং বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) অনুমোদন নেওয়া ছিল বলে দাবি ব্যাব কর্মকর্তাদের। কিন্তু অনুষ্ঠান শেষে পরিস্থিতিটা হয়ে দাঁড়িয়েছে বিব্রতকর।
আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, দলীয় ও আলাদাভাবে ক্রিকেটারদের স্বাক্ষর নেওয়ার জন্য অনুষ্ঠানে অটোগ্রাফ ব্যাট রাখা হয়েছিল। কিন্তু দলের অন্য সবাই ব্যাটে সই করলেও সাকিব কোনো ব্যাটেই সই করেননি। আলোচনা পর্বেও শুধুমাত্র ‘ধন্যবাদ’ বলে একবাক্যে নিজের বক্তব্য শেষ করেছেন তিনি। টাইগার অধিনায়কের এমন আচরণে অপমানিত বোধ করছেন আয়োজকরা।
ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাংলাদেশ কমিউনিটি প্রতিনিধি যিশু দাস গুপ্ত বলেছেন, ‘আমরা দূরে থাকায় ক্রিকেটারদের প্রতি আমাদের একটা আবেগ কাজ করে। ওনাদের উচিত ছিল সেটাকে মূল্যায়ন করা। আমাদের তরুণ প্রজন্মও সেখানে ছিল। তারা কিন্তু দেখেছে একটা লিডারশিপ কেমন হয়।’
আরেক সংগঠক ফারুক রেজার কথা, ‘ক্রিকেট দলের কাছ থেকে যে আচরণ পেয়েছি সেটা দুঃখজনক। আমরা ক্রিকেট দলের কাছে আরও স্বতঃস্ফূর্ততা আশা করেছিলাম। কিন্তু সেটা পাইনি।’ তিনি অবশ্য যোগ করেছেন, ‘তারপরও জিতলে বা হারলেও আমরা ক্রিকেট দলের পক্ষে আছি।’
বিষয়টি স্বীকার করে নিলেও বক্তব্য ভিন্ন বাংলাদেশ দলের। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের এক কর্মকর্তা বলেছেন, ‘অনুষ্ঠানের আগে আয়োজকরা তাদের কর্মসূচির বিষয়ে দলকে এর কিছুই জানানো হয়নি। হুট করে এসব করতে বলায় ক্রিকেটাররা বিব্রত বোধ করেন। কাল মেলবোর্ন হয়ে হোবার্টে আসবেন ক্রিকেটাররা। তার আগের দিন এত কিছু করার মানসিক অবস্থা ছিল না তাদের। এ ছাড়া অনুষ্ঠানের জন্য প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাছ থেকে চাঁদা তোলার বিষয়টিও দলের জানা ছিল না। ক্রিকেটাররা এটিও ভালোভাবে নেননি।’
জানা গেছে, বাংলাদেশ দলের সঙ্গে নৈশভোজে অংশগ্রহণের জন্য ৬ থেকে ১২ বছরের শিশুদের চাঁদা ছিল ২০ অস্ট্রেলিয়ান ডলার করে ও প্রাপ্তবয়স্কদের কাছ থেকে চাঁদা নেওয়া হয় ৪০ ডলার করে। প্রায় দেড়শ প্রবাসী সেখানে উপস্থিত হয়েছিলেন।
আয়োজকদের একটি সূত্র জানিয়েছে, বিসিবির শীর্ষ পর্যায় থেকে এই অনুষ্ঠানের অনুমতি নিয়েছেন তারা। দলের কারও কারও অনুষ্ঠানে যেতে আপত্তি থাকলেও পরে তাই সাকিবসহ সবাইকে যেতে হয়েছে।