বিশেষ সংস্থার অর্ডারে যশোরের সেই লেদে অস্ত্র তৈরি হতো !

0

 

 

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোরের বারান্দীপাড়া রাঙ্গামাটি গ্যারেজ এলাকার সেই লেদে বিশেষ একটি সংস্থার অর্ডারে অস্ত্র তৈরি করা হতো বলে অভিযোগ রয়েছে। এর আগে অপর একটি সংস্থার কতিপয় কর্মকর্তার অর্ডারে অস্ত্র তৈরি করে দেয়া হতো । অস্ত্র তৈরির মূল কারিগর আটক আব্দুল আজিজ।
প্রায় ৪ বছর আগে সদর উপজেলার ভাতুড়িয়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাদকবিরোধী অভিযানে অবৈধ অস্ত্র তৈরির একটি কারখানা আবিষ্কার হয়েছিলো। আটক হয়েছিলো এক দম্পতি। ‘পুুলিশের জন্য অস্ত্র তৈরি করতেন’ তারা এমন দাবি করার পর সেই সময় ঘটনাটি হইচই ফেলে দিয়েছিলো।
গত বৃহস্পতিবার রাতে ডিবি পুলিশের এসআই মো. শাহিনুর রহমানের নেতৃত্বে একটি টিম বারান্দীপাড়া রাঙ্গামাটি গ্যারেজ এলাকার নিউ বিসমিল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ নামে একটি লেদে অভিযান চালিয়ে নির্মিত ২টি ওয়ান শ্যুটারগান এবং বিদেশের আদলে অসম্পূর্ণ তৈরি ৩টি পিস্তল, ৫ রাউন্ড গুলিসহ অস্ত্র তৈরির বিপুল সরঞ্জাম উদ্ধার করে। এ সময় লেদ মালিক কুদ্দুস আলীসহ কর্মচারী আব্দুল আজিজ ও সুমন হোসেনকে আটক করা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র জানায়, লেদে অস্ত্র তৈরির মূল কারিগর আব্দুল আজিজ। তার বাড়ি শহরের বেজপাড়া আকবরের মোড় এলাকায়। তিনি দীর্ঘদিন ধরে লেদে অবৈধ অস্ত্র তৈরি করে আসছেন। ২ বছর আগে কুদ্দুস আলীর লেদে কাজ নেন আব্দুল আজিজ। এরআগে অন্য একটি লেদে কাজ করতেন। কিন্তু তিনি লেদে মূলত অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র তৈরি করতেন। বিশেষ একটি সংস্থার অর্ডারে তিনি অস্ত্র তৈরি করে দিতেন বলে অভিযোগ রয়েছে। একটি অস্ত্র তিনি ৭ থেকে ৮ হাজার টাকায় বিক্রি করতেন।
অপরদিকে জেলা পুলিশের মিডিয়া সেল থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, আটক ব্যক্তিরা দীর্ঘদিন ধরে ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপের আড়ালে আগ্নেয়াস্ত্র,গুলি প্রস্তুত করে যশোরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করে আসছিলেন। তবে কাদের কাছে সরবরাহ করা হতো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ নেই। বিষয়টি জানতে ডিবি পুলিশের ওসি রুপণ কুমার সরকারের মোবাইল ফোন নম্বরে কল দেয়া হলে তিনি রিসিভ না করায় তার বক্তব্য জানা যায়নি।
এদিকে আটক ৩ জনের বিরুদ্ধে কোতয়ালি থানায় অস্ত্র আইনে মামলা দায়েরের পর শুক্রবার আদালতের মাধ্যমে তাদেরকে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।
২০১৯ সালের জানুয়ারি মাঝামাঝিতে সদর উপজেলার ভাতুড়িয়া গ্রামে মাদকবিরোধী অভিযান চালাতে গিয়ে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির কারখানা আবিষ্কার করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। জেলা প্রশাসনের তৎকালীন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জামশেদুল আলম ও মোহাম্মদ হাফিজুল হকের নেতৃত্বে পরিচালিত সেই ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে অস্ত্র তৈরির কারিগর একই গ্রামের কামরুল ইসলাম ও তার স্ত্রী রাবেয়া খাতুনসহ ৩ জনকে আটক করা হয়েছিলো। আটক কামরুল ইসলাম ও তার স্ত্রী রাবেয়া খাতুন দাবি করেছিলেন, তারা পুলিশের জন্য অস্ত্র বানাতেন। তাদের এই দাবি সেদিন হইচই ফেলে দিয়েছিলো। অবশ্য যশোরের তৎকলীন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনসার উদ্দিন সেই সময় বলেছিলেন, আটক অস্ত্র কারবারি দম্পতি চতুর প্রকৃতির। তারা ঘটনার সাথে পুলিশকে জড়িয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়ে নিজেদের বাঁচানোর চেষ্টা করছে।