মহম্মদপুরে স্বামী হত্যার অভিযোগে স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা

0

মহম্মদপুর (মাগুরা) সংবাদদাতা॥ পিতাকে হত্যার অভিযোগে মায়ের নামে মামলা করেছেন পুত্র। বাদী এ মামলায় তার আপন মামাসহ ৫ জনকে আসামি করেছেন। অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে আরও ৪/৫ জনকে। এ মামলাটি করেছেন মাগুরার মহম্মদপুরের বড়রিয়া গ্রামের সদ্য প্রয়াত আবু বক্কার শেখের ছেলে সিজান মাহমুদ সাগর। পিতা মারা যাওয়ার ১০ দিন পর গত মঙ্গলবার মাগুরা আদালতে মামলাটি রুজু করেন। বুধবার মহম্মদপুর আমলী আদালত মাগুরার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মু. হাবীবুর রহমান অভিযোগকে মামলা হিসেবে গণ্য করে পুলিশ রিপোর্ট দাখিলের জন্য মহম্মদপুর থানার অফিসার ইনচার্জকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছেন। মামলার খবর পেয়ে আসামিরা আত্মগোপন করেছেন। আসামিদের বাড়িতে গিয়ে এবং তাদের মুঠোফোনে যোগাযোগ করেও কাউকে পাওয়া যায় নি। অভিযোগে ছেলে সিজান মাহমুদ সাগর উল্লেখ করেছেন, গত ২ অক্টোবর ভোরে মারা যান আবু বক্কার শেখ। তিনি দীর্ঘ প্রায় ৩০ বছর সৌদিআরবে ছিলেন। সেখানে তিনি ব্যবসা করতেন। এই কারণে এলাকায় তিনি ‘ধনী বক্কার’ নামে পরিচিত। তিনি সৌদিতে থাকার সুযোগে তার স্ত্রী স্থানীয় জনৈক রকিবুল ইসলাম হিরকের সাথে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। বহুবার তাকে অনৈতিক পথ থেকে ফিরে আসার কথা বললেও তিনি তা শোনেন নি। একমাস আগে তার স্ত্রী কথিত ওই প্রেমিকের সাথে নিরুদ্দেশ হন। এক সপ্তাহ্ পর বাড়িতে ফিরে আসলে তার স্বামীসহ কয়েকজন তার নিরুদ্দেশ হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং বেশি বাড়াবাড়ি করলে স্বামীকে খুন করার হুমকি দেন। ঘটনার একদিন আগে মামলার বাদির আপন মামা মাছুদুর রহমানের বাড়িতে আসামিরা বসে আবু বক্কার শেখকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। সে মোতাবেক ঘটনার দিন ২ অক্টোবর ভোর রাতে আবু বক্কারকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করার পর বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। এরপর আসামিরা তড়িঘড়ি করে বক্কার শেখের লাশ দাফন করে দেয়।বাদীর আরজি অনুযায়ী, এরপর বিশ্বস্ত কয়েকজনের কাছে পিতার মারা যাওয়ার রহস্য জানতে পারেন।
বক্কার শেখ মারা যাওয়ার ১০ দিন পর গত মঙ্গলবার তার বড় ছেলে সিজান মাহমুদ সাগর বাদী হয়ে মাগুরা আদালতে মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় বাদীর মায়ের কথিত প্রেমিক রকিবুল ইসলাম হিরককে প্রধান আসামি করা হয়েছে। ২ নম্বর আসামি করা হয়েছে তার মা সিমা পারভীনকে। ৫ নম্বর আসামি করেছেন আপন মামা মাছুদুর রহমানকে। এই মামলায় ৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাত রয়েছে আরও ৪/৫ জন। মৃতের লাশ উত্তোলন করে ময়না তদন্তের কথাও বলা হয়েছে মামলায়। বাদীর দরখাস্তটি আমলে নিয়ে গত বুধবার মাগুরার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মু. হাবীবুর রহমান দরখাস্তটিকে এফআইআর হিসেবে গণ্য করে পুলিশ রিপোর্ট দাখিলের জন্য মহম্মদপুর থানার অফিসার ইনচার্জকে নির্দেশ দিয়েছেন। এদিকে মামলার খবর পেয়ে আসামিরা আত্মগোপন করেছেন। আসামিদের বাড়িতে গিয়ে এবং তাদের মুঠোফোনে যোগাযোগ করেও কাউকে পাওয়া যায়নি।অপরদিকে পিতাকে হত্যার অভিযোগে মায়ের নামে পুত্রের মামলা দায়েরের বিষয়টি এলাকায় ব্যাপক আলোচিত হয়েছে। শুরু হয়েছে নানান আলোচনা ও গুঞ্জন।এ বিষয়ে মামলার বাদী সিজান মাহমুদ সাগর বলেন, আসামিরা পরস্পরে যোগসাজস করে ঠান্ডা মাথায় পরিকল্পিতভাবে আমার পিতাকে খুন করেছে। আমি ন্যায় বিচার প্রার্থণা করছি।মহম্মদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ অসিত কুমার রায় বলেন, ‘বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশনা হাতে পেলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’