দুই যুগে পা রাখলো বিএনপি নেতা গফুরের আয়োজনে সুবিধাবঞ্চিতদের মিলন মেলা

0

ওসমান গণি, রাজগঞ্জ (মণিরামপুর)॥ দুই যুগে পা রাখলো যশোরের মণিরামপুর উপজেলার মশ্মিমনগর ইউনিয়নের ভরতপুর গ্রামে অনুষ্ঠিত গরিব, অসহায় ও সুবিধা বঞ্চিতদের মিলন মেলা। উপজেলার পশ্চিমাঞ্চলের চারটি ইউনিয়নের বিশটি গ্রামের সাড়ে ছয় শ গরিব দুঃখী, অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিত নারী, পুরুষ ও শিশুদের নিয়ে প্রতি বছরের মতো এবারও ভিন্ন ধরনের ঈদ উদযাপন করলেন মশ্মিমনগর ইউনিয়নের বার-বার নির্বাচিত সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আইনজীবী সমিতির বার-বার নির্বাচিত সাবেক সাধারণ সম্পাদক বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট এম. এম গফুর।
মশ্মিমনগর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান দেওয়ান আনছার আলী ও উপজেলার বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী নুর মোহাম্মদ মোড়ল জানান, ২০০০ সালে মণিরামপুর উপজেলার মশ্মিমনগর ইউনিয়নে ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয়। ওই বন্যায় ইউনিয়নের কয়েক হাজার পরিবারকে সর্বস্বান্ত হতে হয়। ওই বছর কুরবানি ঈদের একদিন পর বন্যাকবলিত এ ইউনিয়নের ১২টি গ্রামের অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিত এবং পানিবন্দী মানুষদের নিয়ে সর্বপ্রথম এ মেলার আয়োজন করেন অ্যাডভোকেট এম.এ আব্দুল গফুর। বন্যাদুর্গত অঞ্চল হওয়ায় ওই আয়োজনটির ধারাবাহিকতা বজায় রাখা হয়েছে টানা ২৪ বছর ধরে। তারই ধারাবাহিকতায় মিলন মেলার দুই যুগ পূর্তি উপলক্ষে এবারে আয়োজন করা হয় ঈদের দ্বিতীয় দিন ১২ জুলাই মঙ্গলবার দুপুরে।
অ্যাডভোকেট এম.এ.গফুর তার ভরতপুর গ্রামস্থ নিজ বাড়িতে এ আয়োজন করেন। এত বছর ধরে ঈদ-উল আজহার পরপরই এই ব্যতিক্রম ধর্মী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে আসছেন তিনি। যে কোনো অনুষ্ঠানে সাধারণত সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিদেরকে আমন্ত্রণ করা হয়। কিন্তুু এম.এ গফুর তার মশ্মিমনগর ইউনিয়নসহ পার্শ্ববর্তী ঝাঁপা, চালুয়াহাটি ও হরিহরনগর ইউনিয়নের বিশটি গ্রামের গরিব, অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিতদের তালিকা তৈরি করান ইউপি সদস্যদের মাধ্যমে। এ বছর তালিকাভুক্ত আড়াইশ নারী ও আড়াইশ পুরুষ এবং দেড়শ পথ শিশুকে তার গ্রামের বাড়িতে ১২ জুলাই মঙ্গলবার দুপুরে খাওয়ার জন্য পত্র দিয়ে আমন্ত্রণ জানান।
তাদেরকে দুপুরে এম.এ গফুর নিজ হাতে মাছ, মাংস ও ভাত খেতে দেন। আমন্ত্রিত অতিথিদের খাওয়া শেষে পুরুষদের একটি করে লুঙ্গি গেঞ্জি ও নারীদের একটি করে শাড়ি এবং পথ শিশুদের টি শার্ট ও প্যান্ট উপহার দেন। এ ব্যতিক্রম ধর্মী আয়োজন দেখতে যশোর ও সাতক্ষীরা জেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়াম্যান, শীর্ষ রাজনৈতিক নেতা ও সাংবাদিকরা পর্যন্ত ওই বাড়িতে হাজির হন। ঈদের পর নতুন লুঙ্গি গেঞ্জি ও শাড়ি এবং শিশুদের টি শার্ট পেয়ে তারা খুবই আনন্দিত হয়েছেন।
দাওয়াত খেতে আসা বন্যাকবলিত মশ্মিমনগর ইউনিয়নের পারখাজুরা গ্রামের হত দরিদ্র আলী বকস (৮০), শমশের বাগ গ্রামের আহম্মদ আলী (৭৫), চাকলা গ্রামের আতিয়ার রহমান (৭০), ঝাঁপা গ্রামের খোরশেদ আলী (৭০), বিধবা শাহিদা বেগম (৬৫), চালুয়াহাটি ইউনিয়নের মোহাম্মদ আলী গাজী (৮৫), নিছারুন বেগম (৮০) ও হরিহরনগর ইউনিয়নের আয়শা বেগম (৬০) জানান, দীর্ঘদিন তারা ভালো মানের খাবার খেতে পারিনি। ‘আজকে পেটভরে অনেক ভালো মানের খাদ্যখাবার খেতে পেরে অনেক খুশি হয়েছি’। তারা আরো জানান,তাদের অঞ্চলের কোনো অনুষ্ঠানে তাদেরকে কেউ দাওয়াত করে না। তাদের কথা চিন্তা করে প্রতি বছরই এম.এ গফুর এ সকল হত দরিদ্রদের দাওয়াত দিয়ে নিজ হাতে মনভরে খেতে দেয় এবং পরনে কাপড় দেয়। একারণে তারা এম.এ গফুরের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করেন বলে জানান।
আয়োজক ও বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট এম.এ গফুর জানান, এ ধরনের আয়োজন করতে পেরে তিনি খুশি, এভাবে সবার মাঝে ঈদ আনন্দ ছড়িয়ে দেওয়া যায়।