বেনাপোল বন্দরে ক্রেন ও ফরক্লিপ সমস্যার সমাধান হয়নি

0

মনিরুল ইসলাম মনি, শার্শা (যশোর)॥ বাংলাদেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর বেনাপোল বন্দরে এখনও ক্রেন ও ফরক্লিপ সমস্যার সমাধান হয়নি। কথা দিয়ে কথা রাখেননি বন্দর পরিচালক মামুন তরফদার। যে কারণে ভারত থেকে আমদানিকৃত পণ্য লোড আনলোড চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। এমন অবস্থা চলতে থাকলে বেনাপোল স্থলবন্দল থেকে আমদানিকারকরা অন্যত্র চলে যাওয়ার আশংকা করছে বেনাপোলের সিএন্ডএফ ব্যবসায়ীরা।
সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর বেনাপোল স্থলবন্দর। এ বন্দর দিয়ে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার পণ্য ভারত থেকে আমদানি হয়। বন্দর দিয়ে কোটি কোটি টাকার পণ্য বাংলাদেশ থেকে ভারতে রফতানি হয়। এ জন্য প্রতিদিন ভোর থেকে রাত পর্যন্ত শ শ পণ্য বোঝাই ট্রাক এ সীমান্ত দিয়ে চলাচল করে।
আন্তর্জাতিক মানের স্থলবন্দর হলেও বেনাপোল স্থলবন্দরে আজও আধুনিক বন্ধরের কোন ছোয়া পড়েনি। বন্দর পরিচালনায় ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। প্রতিবাদে বন্দর ব্যবহারকারী সংগঠন সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, ট্রান্সপোর্ট, স্টাফ অ্যাসোসিয়েশন প্রতিবাদসভা সমাবেশ করলেও কোন কর্ণপাত করেনি কর্তৃপক্ষ। ফলে পরিবর্তন হয়নি সমস্যার। এখনও ক্রেন ও ফরক্লিপের অচল অবস্থা সচল হয়নি। বেনাপোল বন্দরে থাকা নষ্ট ক্রেন ও ফরক্লিপ মেরামতের অভাবে সকল কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
বেনাপোল স্থলবন্দরে লোড আনলোড পরিচালনার জন্য ৪টি ৬০, ৫০, ৩৫ ও ২৫ টন বহনকারী ক্রেন রয়েছে। অপরদিকে ফরক্লিপ রয়েছে ৬/৭টি। এর মধ্যে ৬০ টন বহনকারী ক্রেনটি ৫/৭ টন ওজনের বেশি কোন ভারী পণ্য উত্তোলন করতে পারেনা। আরও ৩টি ক্রেনের একই অবস্থা। যে কারনে খালাসকৃত ভারী পণ্য পরিবহনে চরম সমস্যা রয়েছে এ বন্দরে। তা ছাড়া একটি ক্রেন ৩ ঘন্টা কাজ করলে আরও ৩ ঘন্টা বন্ধ রাখতে হয়। তা না হলে কাজ করে না। অভিযোগ রয়েছে, একটি ক্রেন নষ্ট হলে তা মেরামত করতে প্রায় ২/৩ সময় লাগে। কারণ ক্রেনের কোন যন্ত্রাংশ বেনাপোল, যশোর, ঢাকাতে পাওয়া যায় না। প্রয়োজনীয় ক্রেনের সকল যন্ত্রাংশ চট্রগ্রাম থেকে আনতে হয়। যা সময়ের প্রয়োজন। সচল ৪টি ক্রেনের সবগুলোই পুরনো । একটি ক্রেনের গেয়ার দড়ি দিয়ে বাঁধা। যা কাজে চরম ঝুকিপূর্ণ। ফরক্লিপের অবস্থাও একই।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ৮৯১ শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি আক্তারুজ্জামান বলেন, বন্দরে কাজ করতে অনেক সমস্যা হচ্ছে। তিনি বলেন, বন্দরে যেসব ক্রেন ও ফরক্লিপ রয়েছে তা সবই পুরানো। কাজ করা যায় না। ক্রেনের রশি নেই। এই মুহূর্তে নতুন ৭টি ক্রেন ও ৭টি ফরক্লিপ হলে বন্দরে কাজ করা সম্ভব।
বেনাপোল স্থল বন্দরের ট্রান্সপোর্ট সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আজিম উদ্দিন গাজী বলেন,বেনাপোল বন্দরের অবস্থা খুবই খারাপ। বন্দরে পণ্য পরিবহনের ক্রেন ও ফরক্লিপ নিয়ে দিন দিন চরম জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে। প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করেও ক্রেন সিরিয়াল পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি বলেন বন্দরের পরিচালক মামুন কবির তরফদারের অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে বন্দরে কোন সমস্যার সমাধান হচ্ছে না।
বেনাপোল সিএন্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের ভারত বলেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর বেনাপোল স্থলবন্দরে আমদানি ও রফতানি আরও বেড়ে যাবে। সে জন্যে আন্তর্জাতিক মানের বন্দর হিসেবে এ বন্দরে উন্নয়নে আধুনিক সরঞ্জাম প্রয়োজন।
এ ব্যাপারে জানার জন্য মামুন কবির তরফদারের অফিসে গিয়ে না পেয়ে তাকে তার ফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি তা রিসিভ করেন নি।