সময়সীমা বাড়িয়েও ধান-চাল সংগ্রহে ব্যর্থ যশোর খাদ্য বিভাগ

0

আকরামুজ্জামান ॥ কয়েক দফা সংগ্রহের সময়সীমা বাড়িয়েও ধান-চাল সংগ্রহে কাক্সিক্ষত লক্ষ্য অর্জনে সফল হতে পারেনি যশোর খাদ্য বিভাগ। চলতি বোরো সংগ্রহের সময়সীমা রয়েছে আর মাত্র তিন দিন। অথচ এখন পর্যন্ত ধান সংগ্রহ হয়েছে লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে মাত্র ৩৩ দশমিক ৭৮ শতাংশ। তবে চাল সংগ্রহে সন্তোষজনক হলেও মিলারদের মধ্যে এ নিয়ে রয়েছে ব্যাপক অসন্তোষ।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলায় ২০২৩ সালে বোরো ধান-চাল সংগ্রহের শেষ দিন ছিলো ৩১ আগস্ট। ১৩ হাজার ৫৪০ মেট্রিক টন ধান ও ৩৮ হাজার ৫১৭ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে খাদ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে অনলাইনে সংগ্রহের প্রচারণা চালিয়েও নির্ধারিত সময়েরে মধ্যে কাক্সিক্ষত চাহিদাপূরণ সম্ভব হয়নি। যেকারণে খাদ্য বিভাগ আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১৫ দিন সময় বাড়িয়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের চেষ্টা চালায়।
রোববার জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিসে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, সংগ্রহ অভিযানের মাত্র ৩ দিন বাকি থাকলেও ওইদিন পর্যন্ত ১৩ হাজার ৫৪০ মেট্রিক টন ধানের বিপরীতে ৪৫৭৩ দশমিক ৯৬০ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ হয়েছে। আর ৩৮ হাজার ৫১৭ মেট্রিক টন চালের বিপরীতে অর্জন হয়েছে ৩৬৮৪৭ দশমিক ১৩০ মেট্রিক টন।
ধান সংগ্রহে হতাশাজনক চিত্র হলেও চাল সংগ্রহে অনেকটা স্বস্তিতে আছে বলে খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা জানান। এ বিষয়ে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক নিত্যানন্দ কু-ু জানান, বোরো মৌসুমে যশোর জেলায় ধান সংগ্রহে পিছিয়ে থাকলেও চাল সংগ্রহে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সফল হয়েছি। তিনি বলেন, খাদ্য বিভাগ মূলত মোটা ধান সংগ্রহ করে থাকে। কিন্তু যশোরের চাষিরা সাধারণত মোটা ধানের চাষ খুব একটা করেন না। তারা চিকন ধান উৎপাদন করেন। একারণে বাজারে সংগ্রহ মূল্যের চেয়ে চিকন ধানের দাম বেশি থাকায় ধান সংগ্রহে আগ্রহ থাকে না তাদের। তিনি বলেন, জেলার ৮ টি উপজেলার মধ্যে একমাত্র অভয়নগর উপজেলা বাদে বাকি সব উপজেলা থেকে অনলাইনের মাধ্যমে ধান ও চাল সংগ্রহ হয়েছে। ইতোমধ্যে লক্ষ্যমাত্রার ৯৫ শতাংশ সিদ্ধ চাল ও ৩৩ শতাংশ ধান সংগ্রহ হয়েছে বলে তিনি জানান।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার চুক্তিবদ্ধ ৯০ জন মিলার যশোর খাদ্যগুদামে চাল সংগ্রহ করছে। প্রতিকেজি চাল ৪৪ টাকা দরে দিলেও এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট মিল মালিকদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। তাদের দাবি বর্তমান বাজারমূল্যে অনুযায়ী ৪৪ টাকা কেজি দরে চাল দিয়ে কেজিতে ২ থেকে ৩ টাকা লোকসান হচ্ছে। তারপরও লাইসেন্স রক্ষার কারণে তারা চাল দিতে বাধ্য হচ্ছেন।
অ্যারেস্টো ফুড লিমিটেডের বিক্রয় প্রতিনিধি মো. মিলন হোসেন বলেন, বর্তমান বাজারে যে দামে চাল বিক্রি হচ্ছে সে অনুযায়ী সরকার নির্ধারিত মূল্যর সাথে সামঞ্জস্য হচ্ছে না। তারপরও আমরা যেহেতু সরকারের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়েছি সেকারণে চাল দিতে বাধ্য হচ্ছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক মিলার বলেন, খাদ্য বিভাগ অনেকটা চাপ দিয়েই আমাদের কাছ থেকে চাল নিচ্ছে। আমাদেরকে অতিরিক্ত বরাদ্দ দেবে বলেও আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। আমরা আবেদন করে রাখলেও এখনো সে বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।