যশোর পৌর আওয়ামী লীগের নবগঠিত কমিটি মানতে নারাজ জেলা সভাপতি

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জেলা শ্রমিকলীগের পর এবার পৌর আওয়ামী লীগের কমিটি নিয়ে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছে যশোর আওয়ামী লীগ। গত সোমবার রাতে যশোর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাড. আসাদুজ্জামান আসাদ ও সাধারণ সম্পাদক এসএম মাহমুদ হাসান বিপু স্বাক্ষরিত ৭১ সদস্য বিশিষ্ট একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুলিপি বিভিন্ন সংবাদপত্রে সরবরাহ করা হয়। নবগঠিত এই কমিটিই অনুমোদনের জন্য কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে বলেও জানা যায়। তবে এই কমিটি অনুমোদিত নয় বলে দাবি করেছেন খোদ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন।
এ বিষয়ে শহিদুল ইসলাম মিলন বলেন, ‘যশোর পৌর আওয়ামীলীগের ৭২ সদস্য বিশিষ্ট যে কমিটি গঠন করা হয়েছে তা মোটেও বিধিসম্মত হয়নি। এটি শতভাগ মনগড়া। কোনো এক নেতার ইন্ধনে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক এ কমিটি করে কেন্দ্রে পাঠিয়েছেন। যা আমরা কেউই জানিনা।’
যশোর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক কর্তৃক সংবাদপত্রে প্রেরিত প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২৭ ফেব্রুয়ারি কমিটির অনুমোদনের জন্য জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদকের নিকট জমা দেওয়া হয়। এই কমিটির সহ-সভাপতি হলেন যথাক্রমে রফিকুল ইসলাম, দেলোয়ার হোসেন, আলাউদ্দীন, আজিজুল হক, শামীম আহমেদ রনি, ফয়জুল কবির কচি, জাহাঙ্গীর আলম বাবলু, রবিউল ইসলাম শাহীন ও বাবলু কুমার নাথ। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী শহিদুল হক শাহীন, শেখ জাহিদ হোসেন মিলন ও এসএম ইউসুফ শাহিদ। আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাড. মাহবুব সরকার লাল্টু, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক সেলিম কবীর, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক রবিউল ইসলাম রবি, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আরিফুজ্জামান বাদল, দপ্তর সম্পাদক শফিকুল ইসলাম, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক উজ্জ্বল হোসেন, প্রচার সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বাবু, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক রবিউল ইসলাম রবি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন সবুজ, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ফারজানা ইযাসমিন, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা লুৎফর রহমান, যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক তৌহিদুজ্জামান ওয়াসেল, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আশিকুর রহমান বাঁধন, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক আলী হোসেন নয়ন, সাংস্কৃতিক সম্পাদক হুমায়ুন কবীর, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক নাজমুল সিদ্দিকী পলাশ, সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ শাহাজান কবির শিপলু ও জাকির হোসেন রাজীব, সহ-দপ্তর সম্পাদক শাহীনুর রহমান শাহিন, সহ-প্রচার সম্পাদক শেখ আলমগীর হোসেন এবং কোষাধ্যক্ষ হাজী হাসান। এছাড়া সদস্য পদে ৩৫ জনকে রাখা হয়েছে। এরা হলেন-শেখ সাদেক আলী, হালিমুল হক ফরহাদ, ইমাম হাসান বাবলু, ফারুক হোসেন সিরু, সুলতান মাহমুদ পরান, খলিলুর রহমান, মফিজুর রহমান নান্টু, তোতা মোল্যা, ইদ্রিস আলী বাদল, কাজী রবিউল ইসলাম রবু, ফরহাদ হোসেন, মনিরুজ্জামান মনি, নওয়াব আলী, আলী হাসান তুষার, মফিজুর রহমান মধু, ইকবাল মুনাফ দিলু, সৈয়দ নাজমুল হক পিকুল, শেখ মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম, পিয়ার মোহাম্মদ পিয়ারু, সিরাজুল ইসলাম সিরাজ, আলী হোসেন, ইজ্জাক হোসেন, গোলাম রসুল ডাব্লু, নূর ইসলাম নুরু, ওহিদুল আলম টুটুল, মাহফুজুর রহমান শান্টু, আসাদুজ্জামান আসাদ, গোলাম রব্বানী, ফিরোজ শেখ, শেখ শাহাজাহান শান্ত, জুলফিকার আলী, এনামুল, রবি মোল্যা, তৌফিকুর রহমান সুমন ও মিরাজ আলম।
জেলা আওয়ামীলীগের একাধিক নেতাকর্মীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, কমিটিতে যাদের জায়গা দেয়া হয়েছে তাদের প্রায় সবাই জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারের অনুসারী। কমিটিতে সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদের লোকজন জায়গা পাননি।
বিষয়টি নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার রাতে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি এই কমিটিকে ‘মনগড়া কমিটি’ বলে আখ্যায়িত করেন। তিনি বলেন, কেন্দ্রের নির্দেশনা ছিলো স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামীলীগের নেতাদের সাথে বসে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে কমিটি দেওয়ার। কিন্তু এক্ষেত্রে পৌর আওয়ামী লীগের দুই নেতা কোনটিই অনুসরণ করেননি। তারা এক নেতার নির্দেশনায় মনগড়া কমিটি দিয়েছেন। যা কেন্দ্র বা জেলা কোনো জায়গা থেকে অনুমোদন পাওয়ার সুযোগ নেই।