ছবির মতো শহর মারিওপোলের যে হাল করেছে রুশ সেনারা

0

 

প্রায় সাত সপ্তাহ অবরুদ্ধ থাকার পর ধুলায় মিশে গেল মারিওপোল। যদিও ইউক্রেনের দাবি, রাশিয়ার বোমাবর্ষণে গুঁড়িয়ে গেলেও এখনো পতন হয়নি শহরটির। শহরটির বেঁচে থাকা প্রতিরোধ যোদ্ধারা এখনো আত্মসমর্পণ করেনি।
ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলের বন্দর-শহর মারিওপোলের পতন হয়নি বটে। তবে সে শহরের অস্তিত্ব মুছে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন সে দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্র কুলেবা। তিনি বলেন, ‘এ শহরের আর কোনও অস্তিত্ব নেই’।
রুশ বিমানসেনাদের বোমাবর্ষণ এড়াতে মারিওপোলের একটি ইস্পাত কারখানায় হাজারখানেক বাসিন্দা আশ্রয় নিয়েছেন। সোমবার সংবাদমাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছেন শহর কর্তৃপক্ষ।
মারিওপোলে বোমাবর্ষণের মাঝেই শিশু ও নারীসহ শহরের ওই বাসিন্দারা আজোভস্টাল ইস্পাত কারখানায় আশ্রয় নেন। টেলিগ্রামে একটি বার্তায় এ দাবি করেছে শহর কর্তৃপক্ষ। তাতে আরও বলা হয়েছে, ‘আশ্রিতদের মধ্যে বেশির ভাগই শিশু ও নারী। এমনকি, বয়স্করাও তাতে ঠাঁই নিয়েছেন’।
আজোভস্টাল ইস্পাত কারখানায়, আশ্রয় নেওয়াদের পাশাপাশি অন্তত আড়াই হাজার ইউক্রেনীয় সেনাও রয়েছে বলে মনে করেছিল রাশিয়ার সেনারা।
সংবাদমাধ্যমের দাবি, মারিওপোল ধ্বংসের আগে ওই বিশাল কারখানাই ছিল শহরের শেষ আশ্রয়। রবিবার পর্যন্ত মারিওপোলকে আত্মসমর্পণের প্রস্তাব দিয়েছিল ভøাদিমির পুতিন সরকার। তাতে রাজি হয়নি মারিওপোল। তার ফল যে ভাল হয়নি, তার চিহ্ন চোখে পড়ছে শহর জুড়ে।
গত এক সপ্তাহ ধরে মারিওপোলে আক্রমণ ক্রমাগত বাড়িয়েই গিয়েছে রুশবাহিনী। তার পাল্টা হিসেবে ইউক্রেনীয় সেনাদের পাশাপাশি প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে আমজনতাও।


শহর জুড়ে রুশ হামলার চিহ্ন বহন করছে অট্টালিকার কঙ্কালগুলো। গায়ে বোমাবর্ষণের কালো দাগ। আশপাশের উঁচু গাছগুলোর ডালপালায় সবুজের ছোঁয়া গায়েব।
রবিবারের আগে থেকেই রুশ আক্রমণে শহরের পরিকাঠামো ভেঙে পড়েছিল বলে দাবি মারিওপোলের মেয়র বাদিম বয়চেঙ্কোর। তার দাবি ছিল, মারিওপোলের পরিকাঠামোর ৯০ শতাংশ ধ্বংস করে দিয়েছে রুশ সেনাবাহিনী।
রবিবারের হামলার পর ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ডেনিস শ্মিহাল ঘোষণা করেছেন, ‘রুশ বাহিনীর বোমায় গুঁড়িয়ে গিয়েছে মারিওপোল, কিন্তু পতন ঘটেনি!’
একই প্রতিক্রিয়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্র কুলেবার। আমেরিকান সংবাদ সংস্থার কাছে এক সাক্ষাৎকারে কুলেবা বলেছেন, ‘মারিওপোলের শোচনীয় অবস্থার মাঝেই স্বল্প সংখ্যক সেনা বেঁচে গিয়েছেন। সাধারণ মানুষদের অনেকেই অবশ্য প্রাণে বেঁচে রয়েছেন। কিন্তু তাদেরও চার দিক থেকে ঘিরে ফেলেছে রুশ সেনাবাহিনী’।
তার দাবি, ‘বাঁচার জন্য প্রতি দিন লড়াই করছে মারিওপোল’। তার অভিযোগ, ‘রাশিয়ার আচরণে বোঝা যাচ্ছে, যে কোনও মূল্যে এ শহরকে গুঁড়িয়ে দিতে চায় রাশিয়া। সে সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়ে গিয়েছে’।