কেশবপুরে ওএমএসএর ডিলারের দোকানে দীর্ঘ হচ্ছে ক্রেতার সারি

0

জয়দেব চক্রবর্ত্তী, কেশবপুর (যশোর)॥ প্রতিদিন ওএমএসএর দোকালে লাইন দীর্ঘ হচ্ছে। বাজারে চাল আটার দাম অনেক। তাই যশোরের কেশবপুরে নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতির সাথে তাল মেলাতে বেসামাল নি¤œবিত্ত ও মধ্যবিত্তরা। সরকার পরিচালিত ওএমএসএর দোকানের চাল, আটার আশায় ভোর থেকে দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষা করেন তারা। তবে কিছু অসাধু লোক একাধিক বার চাল, আটা উত্তোলন করে বাজারে বিক্রিও করেছেন। ফলে অনেকেই কাঙ্খিত চাল, আটা না পেয়ে খালি হাতে ফিরছেন।
জানা গেছে, করোনা পরবর্তী সময়ে কর্মহীন অসহায় ও দুস্থমানুষের পরিবারে প্রয়োজন মেটাতে গত ২০ জানুয়ারি থেকে কেশবপুরে ওপেন মার্কেট সেল বা ওএমএস কার্যক্রম শুরু হয়। প্রতিকেজি চাল ৩০ টাকা ও আটা ১৮ টাকা মূল্য নির্ধারণ করে সরকার। একাজে কেশবপুর পৌর শহরে ৪ জন ডিলার নিয়োগ দেওয়া হয়। এরা হলেন, শহরের ধানহাটায় অহেদুজ্জামান বিশ্বাস, গমপট্টিতে স্বপন মুখার্জি, সরকারি কলেজের পাশে বিষ্ণুপদ দাস ও কালাবায়সা মোড় এলাকায় জগাই ভদ্র। ডিলাররা প্রতিদিন এক মেট্রিক টন চাল ও এক মেট্রিক টন আটা বিক্রি করতে পারবেন।ডিলাররা শুক্রবার ও সরকারি ছুটির দিন বাদে সপ্তাহের ৬ দিন খাদ্যগুদাম থেকে চাল, আটা উত্তোলন করে মাথাপ্রতি ৫ কেজি হারে বিক্রি করেন। ওএমএস দোকানে স্বল্পমূল্যে চাল, আটা দেয়ার খবরে দুস্থরা শুধু নয় মধ্যবিত্তদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া পড়ে। প্রতিদিন ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত মাত্র ৫ কেজি মোটা চাল আর আটার আশায় ওএমএস দোকানে দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষা করেন তারা। অনেকের এখন কাজ নেই। এ সুযোগে অনেকেই প্রতিদিন কখনো কখনো পরিবারের ২-৩ জন পৃথক পৃথকভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে চাল আটা নিচ্ছে আর বিক্রি করে লাভবান হচ্ছে।
বৃৃহস্পতিবার সকালে গম পট্টির ওএমএস ডিলার স্বপন মুখার্জি দোকানে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা
রামচন্দ্রপুর গ্রামের হাসিনা বানু ও সুজাপুর এলাকার খোদেজা বেগম জানান, পরিবার প্রধানরা ভ্যান চালক। ৬ জনের সংসারে ৫ কেজি চাল একদিনেই শেষ হয়ে যায়। নগদ টাকার অভাবে বেশী চাল কিনতে পারি না। যেদিন চাল তুলতে হয় সেদিন কাজ বন্ধ করে লাইন দিতে হয়। তারা এ কার্যক্রম চলমান থাকার দাবি জানান। বিষ্ণুপদ দাসের দোকানে গিয়ে কথা হয় মজিদপুর দাসপাড়ার লক্ষীরাণী দাস ও শ্রীফলা গ্রামের পরিবারের সেলিনা বেগমের সাথে। তারা জানান, তাদের পরিবার প্রধানরা কৃষিকাজ করলেও বর্তমান মাঠে কাজ কম, নিত্যপণ্যের দামও চড়া। ঘরেও চাল নেই। তাই ওমমএস দোকানে এসেছেন চাল নিতে। ডিলার বিষ্ণুপদ দাস বলেন, আটার ব্যাপক চাহিদাও অনেক। খাদ্য গুদাম থেকে যে চাল আটা দেয়া হয় তা বেলা সাড়ে ১১টার আগেই শেষ হয়ে যায়। অনেকেই চাল, আটা না পেয়ে ফিরে যান।তিনি বলেন কে একবার নিচ্ছে কে দুইবার বা প্রতিদিন নিচ্ছে ওটা দেখার ক্ষমতা ও সময় তাদের নেই। লাইনে দাঁড়ালে সে পাবে। তবে বরাদ্দ আরও বাড়াঢ়ে ভালেঅ হতো, অনেকেই না পেয়ে ফিরে যাচ্ছে। উপজেলা খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা সুনীল মন্ডল বলেন, প্রতিটি ওএমএস দোকানে দীর্ঘ লাইন দিয়ে মানুষ চাল, আটা কিনছেন। প্রতি কেন্দ্রে একজন করে ট্যাগ অফিসার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাদের তদারকিতে ডিলাররা চাল, আটা বিক্রি করছেন। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত ওএমএস কার্যক্রম চলমান থাকবে।