অন্তত একটি জয়ের খোঁজে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে মাঠে নামবে তামিমের দল

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ এমন নয়, দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে আগে কখনই জিতেনি বাংলাদেশ। জিতেছে। ২২ বারের মোকাবিলায় টইগাররা জিতেছে চারবার। দুবার দেশে। আর দুবার বাইরে এবং ২০১৫ সালে ঘরের মাঠে তিন ম্যাচের সিরিজ বিজয়ের (২-১) কৃতিত্বও আছে মাশরাফির বাংলাদেশের। বাকি দুই জয় ধরা দিয়েছে বিশ্বকাপে। ঠিক এক যুগের ব্যবধানে। প্রথমটি ২০০৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের গায়নায়। আর পরেরবার ২০১৯ সালে লন্ডনে।সেটাই কিন্তু এ প্রতিবেদনের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় নয়। আসল কথা হলো, দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে কখনোই প্রোটিয়াদের হারাতে পারেনি টাইগাররা। ৯ বার মুখোমুখি হয়েছ। সেখানে জয় অধরা থেকে গেছে। জেতা বহুদূরে, কোন ম্যাচে এতটুকু লড়াইও করতে পারেনি টাইগাররা। সবচেয়ে কাছাকাছি ব্যবধানে হারই আছে ৬১ রানে (২০০৮ সালের ৭ নভেম্বর পচেফস্ট্রমে)। দেশের মাটিতে টাইগারদের বিপক্ষে ৩ বার ১০ উইকেটের অনায়াস জয় আছে প্রোটিয়াদের। এছাড়া দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে টাইগাররা ১০০ থেকে ২০০ রানের ব্যবধানে (২০০ রান, ১৬৮, ১২৮, ১০৪ রান) হেরেছে ৪ বার। অর্থাৎ পরিসংখ্যানই জানান দিচ্ছে, দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে প্রোটিয়াদের সাথে এখনো কোন ম্যাচ ক্লোজ করা সম্ভব হয়নি। এবার কী সে ধারার ব্যত্যয় ঘটবে? দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে কখনো না জেতার, না পারার আক্ষেপ ঘুচবে টাইগারদের? সে প্রশ্ন সামনে রেখেই শুক্রবার, ১৮ মার্চ জোহানেসবার্গের সেঞ্চুরিয়নে শুরু হচ্ছে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ। বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫ টায় শুরু হবে শুক্রবারের ম্যাচ। টি-স্পোর্টস আর জিটিভি (গাজী টিভি) সিরিজের সবগুলো ম্যাচ সরাসরি সম্প্রচার করবে। আগামী ২০ মার্চ দ্বিতীয় ম্যাচ। আর ২৩ মার্চ তৃতীয় ও শেষ ম্যাচ।
অধিনায়ক তামিম আর দলের প্রধান চালিকাশক্তি সাকিব আল হাসান কায়মনোবাক্যে চান এবার অন্তত একটি ম্যাচ জেতার। দেশ ছাড়ার আগে তারা দু’জনই বলে গেছেন, সিরিজ জেতাটা হবে খুব খুব ভাল লাগার। অনেক সাফল্যের। তা না হলে অন্তত একটি ম্যাচ জিততে পারাও হবে ভাল লাগার। বোঝাই গেছে সেটাই লক্ষ্য টিম বাংলাদেশের। ওদিকে কোচ রাসেল ডোমিঙ্গো বলে ফেলেছেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকায় আগে বাংলাদেশের কোন দল যা পারেনি, এবার তার দল তাই করে দেখাতে চায়। এসব কথায় একটা বার্তা পরিস্কার এবার প্রোটিয়াদের তাদের মাটিতে হারাতে দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ টাইগারা।’ হোক তা ২ বছর আগে, গত বিশ্বকাপে- তারপরও ২০১৯ সালে ওভালের সেই সাকিব-মুশফিকের জোড়া ফিফটিতে পাওয়া ৩৩০ রানের বড় স্কোর গড়ে ২১ রানের জয় অনেক বড় অনুপ্রেরণা। এছাড়া ওয়ানডে ফরম্যাটে ধারাবাহিকতা বজায় রেখে খেলা এবং মাশরাফি ছাড়া বাকি চারপাণ্ডব- তামিম, সাকিব, মুশফিক ও রিয়াদের দলে থাকাটাও টাইগারদের প্লাস পয়েন্ট ধরা হচ্ছে।এর বাইরে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে টেস্ট জয়ের ঘটনাও টাইগারদের উদ্দীপ্ত করছে। অন্য ফরম্যাটে হলেও সে টেস্ট জয়টাকেও ধরা হচ্ছে সাহস, উদ্যম, আত্মবিশ্বাস ও আস্থার বড় রসদ। সর্বোত্তম দাওয়াই। তা ভাবার কারণও আছে। বলার অপেক্ষা রাখে না, ইতিহাস-পরিসংখ্যান পরিস্কার স্বাক্ষী দিচ্ছে টেস্টে বাংলাদেশের সাফল্য খুব কম। দেশের মাটিতে ইংল্যান্ড আর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জয় আর পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ড্র‘র রেকর্ড থাকলেও দেশের বাইরে বিশেষ করে এশিয়ার বাইরে টেস্টে ভাল খেলার নজির খুব কম। যেমন নিউজিল্যান্ডের মাটিতে আগে কখনো যা সম্ভব হয়নি, সর্বশেষ সফরে কিউইদের বিপক্ষে সেই অধরা জয়ের দেখা মিলেছে। তাই জেগেছে সাহস, জন্মেছে আত্মবিশ্বাস, তাহলে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে ওয়ানডেতে জেতা সম্ভব হবে না কেন? এই ফরম্যাটে তো বাংলাদেশ ভাল খেলে। করণীয় কাজগুলো কম বেশি সবার জানা। এখন মাঠে সে সামথ্যের প্রয়োগ দরকার। তামিমের দল কী শুক্রবার তা করতে পারবে? তা দেখতে উন্মুখ গোটা বাংলাদেশ।