আওয়ামী লীগ লুটপাট করতে করতে দেশটাই খেয়ে ফেলেছে : ডা. জাহিদ #এই সরকার থাকতে মুক্তি নেই : অমিত

0

মাসুদ রানা বাবু ॥ যশোর জেলা বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশে কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেছেন, আওয়ামী লীগ লুটপাট করতে করতে দেশটাই খেয়ে ফেলেছে। তাই সমৃদ্ধির বাংলাদেশ আজ দুর্ভিক্ষের দেশে পরিণত হওয়ার উপক্রম হয়েছে। তাদের মেগা প্রকল্পের নামে সর্বগ্রাসী লুটপাট দুর্নীতিতে এমন হয়েছে। আওয়ামী লীগ ১০ টাকার চাল খাওয়ানো আর ঘরে ঘরে চাকরি দেওয়ার মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল। সেই ১০ টাকার চাল আজ প্রায় সেঞ্চুরির কাছাকাছি পৌঁছেছে। ঘরে ঘরে চাকরির পরিবর্তে চারিদিকে বেকারত্বের ছড়াছড়ি চলছে।
চাল, ডাল, তেল, গ্যাসসহ সকল প্রকার দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে বুধবার যশোর জেলা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন আরও বলেন, আওয়ামী লীগ কেবল দুর্নীতি লুটপাট করতে জানে। তারা জনগণের ভাষা বোঝে না। কারণ, তারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়নি। তারা রাতের অন্ধকারে জনগণের ভোট ডাকাতি করে পেশিশক্তি দিয়ে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে আছে। জনগণের প্রতি তাদের ন্যূনতম দায়বদ্ধতা নেই। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির ফলে জনগণের নাভিঃশ্বাস উঠলেও তাতে আওয়ামী লীগের কিছু যায় আসে না। আজ আওয়ামী লীগের এমপি, মন্ত্রীরা জনগণের অর্থ লোপাট করে কানাডায় বেগমপাড়াসহ বিভিন্ন দেশে বাড়ি গাড়ি করছে। সেই লুটপাটের ঘাটতি পূরণ করতে গিয়ে তারা এর দায় চাপাচ্ছে জনগণের ওপর। যে কারণে সকল দ্রব্যমূল্য আজ আকাশছোঁয়া। তিনি বলেন, বিএনপি জনগণের ভাষা বোঝে। জনগণের পক্ষে কথা বলতে গিয়ে বেগম খালেদা জিয়া আজ এই অবৈধ সরকারের রোষানলের শিকার হয়েছেন। গুরুতর অসুস্থ থাকার পরও তাকে উন্নত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। এরপরও তিনি ফ্যাসিস্ট, স্বৈরাচার সরকারের সাথে আপোষ করেননি। খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে আবারও দেশে গণতন্ত্র ও জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে ইনশাআল্লাহ।
ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণের রোষানলে পালানোর পথ খুঁজে পাবে না। তাদের পতন কেবল সময়ের ব্যাপার। জনতার মাঝে যে প্রতিবাদের জোয়ার সৃষ্টি হয়েছে, সে জোয়ারে তারা ভেসে যাবে। কাবুল বিমানবন্দরে যে দৃশ্যপট তৈরি হয়েছিল, জনগণ আওয়ামী লীগকে সে রকম একটি দৃশ্যপটে নিয়ে যাবে। বিক্ষোভ সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, দ্রব্যমূল্য জনগণের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। তাই, আমরা রাজপথে তাদের পক্ষে কথা বলছি। লড়াই সংগ্রাম করছি। জনগণের পক্ষে কথা বলতে গিয়ে আমাদের ৩৫ লাখ নেতা-কর্মী মামলা-হামলাসহ বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। শত শত নেতা-কর্মী গুমের শিকার হয়েছেন এবং কয়েক হাজার নেতা-কর্মী পঙ্গুত্ববরণ করেছেন। তারপরও আমরা রাজপথে আছি, জনগণের যৌক্তিক দাবি আদায়ের লক্ষ্যে যতদিন না এই অবৈধ সরকারকে উৎখাত করতে পারবো ততোদিন এ আন্দোলন অব্যাহত থাকবো।
অপর বিশেষ অতিথি দলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু বলেন, বাজারে যে আগুন লেগেছে সেই আগুন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী কিংবা জনপ্রতিনিধিদের গায়ে লাগে না। কারণ, তারা জনগণের লুটপাটের টাকায় ভালো খান আর জনগণ না খেয়ে ধুঁকে ধুঁকে মরে। তিনি বলেন, ঢেকিতে আঘাত না করলে যেমন চাল বের হয় না, তেমনি সরকারকে আঘাত না করলে তারা কোনদিনই জনগণের দাবি মেনে নেবে না। সভাপতির বক্তৃতায় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগম বলেন, স্বাধীনতার মাসে আমাদের প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হতে হবে এই কর্তৃত্ববাদী জনবিরোধী সরকারকে হটিয়ে জনতার সরকার প্রতিষ্ঠার। দেশ ও জনগণকে বাঁচাতে যে কোন মূল্যে ফ্যাসিস্ট, স্বৈরাচার সরকারকে উৎখাত করতে হবে।
বিক্ষোভ সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন- কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী সদস্য অ্যাড. সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, আবুল হোসেন আজাদ, সাবেক দপ্তর সম্পাদক ও সংসদ সদস্য মফিকুল হাসান তৃপ্তি, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব অ্যাড. মোহম্মদ. ইসহক, আব্দুস সালাম আজাদ, আলহাজ্ব মিজানুর রহমান খান, নগর বিএনপির আহ্বায়ক সাবেক পৌর মেয়র মারুফুল ইসলাম, সদর উপজেলা যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী আজম, যুবদলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক মহসিন মোল্লা, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক ডিজেডএম হাসান বিন হাফিজ সোহাগ, মনিরামপুর থানা বিএনপির আহ্বায়ক সাবেক পৌর মেয়র অ্যাড. শহীদ ইকবাল হোসেন, পৌর আহ্বায়ক খায়রুল ইসলাম, কেশবপুর পৌর বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক মেয়র আব্দুস সামাদ বিশ্বাস, থানা বিএনপির আহ্বায়ক মশিয়ার রহমান, ঝিকরগাছা থানা বিএনপির আহ্বায়ক মোর্তজা এলাহী টিপু, জেলা মহিলা দলের সভানেত্রী রাশিদা রহমান, সাধারণ সম্পাদিকা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফেরদৌসী বেগম, জেলা যুবদলের সভাপতি এম তমাল আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক আনছারুল হক রানা, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি রবিউল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা আমির ফয়সাল, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি রাজিদুর রহমান সাগর, সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান বাপ্পি, জেলা মৎস্যজীবী দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হাসানুজ্জামান বাবলু প্রমুখ।
বিক্ষোভ সমাবেশ পরিচালনা করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য অ্যাড. হাজী আনিছুর রহমান মুকুল ও নগরের যুগ্ম আহবায়ক মুনীর আহমেদ সিদ্দিকী বাচ্চু।