বড় দল হিসেবে বিএনপির বড় দায়িত্ব : জাফরুল্লাহ চৌধুরী

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ বড় দল হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) বড় দায়িত্ব বলে মন্তব্য করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরী। বিএনপির উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা বড় দল, আপনাদের বড় দায়িত্ব আছে। দিন চলে যাচ্ছে, প্রতিটা দিন এখন মূল্যবান। বুধবার দুপুরে ধানমন্ডি গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে মেজর হায়দার বীর উত্তম মিলনায়তনে এক স্মরণসভায় তিনি এ কথা বলেন। মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রথম সেনাপতি ‘এম এ জি ওসমানী’র ৩৮তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে জেনারেল ওসমানী ফাউন্ডেশন এ সভার আয়োজন করে । এ সময় জাফরুল্লাহ চৌধুরী আরো বলেন, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে এই সরকারকে নামাতে হবে। সেক্ষেত্রে আমাদের মূলকাজ হচ্ছে রাস্তায় নামা। আমাদের সবাইকে সম্মিলিতভাবে নামতে হবে। এখানে বিএনপির একটা বড় দায়িত্ব আছে। বিএনপিকে আরেকটু চিন্তা-ভাবনা করে আগাতে হবে। বিএনপির কাছে আবেদন আপনারা সবার সাথে বসেন। সবাইকে নিয়ে কাজ করেন। যেভাবেই হোক সবাইকে নিয়ে রাস্তায় নামেন।
নির্বাচন কমিশন গঠন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সার্চ কমিটি যে ১০টি নাম রাষ্ট্রপতির কাছে জমা দিবেন তা আগেই প্রকাশ করতে হবে। যাতে জনগণ বক্তব্য দিতে পারে। তার দাবি, সামগ্রিক পরিবর্তনের জন্য জাতীয় সরকার বলি কিংবা সর্বদলীয় সরকার বলি, বর্তমান সরকার থাকলে ন্যায্য কিছু হবে না। সভায় নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বৃদ্ধিতে সরকারের সমালোচনা করেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহামুদুর রহমান মান্না। তিনি বলেন, এরা এমন একটা সরকার, যারা রাতকে দিন বলে, দিনকে রাত। দিনের ভোট যারা রাতে করে তারা তো রাতকে দিন বলবেই। এই সরকারকে যেতে হব, যেতেই হবে। চিরদিন থাকতে পারবে না। জেনারেল ওসমানীর জীবনের নানা দিক ও মুক্তিযুদ্ধে তার অবদান তুলে ধরেন কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম। তিনি বলেন, ওসামানী ছিলেন ক্ষণজন্মা পুরুষ। জেনারেল ওসমানী যেনো ইতিহাস থেকে হারিয়ে না যান তার জন্য আজকের মতো উদ্যোগ গ্রহণ কতে হবে এবং ইতিহাসের সঠিক জায়গায়তে ওনাকে স্থান দিতে হবে।
ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু বলেন, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার নূরুল হুদাসহ যারা জনগনের ভোটাধিকার হরণ করেছেন, দিনের ভোট রাতে করেছেন, সে অপরাধের জন্য তাদেরকে গ্রেফতার করে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। এম এ জি ওসমানী জীবনে নীতির সাথে আপোষ করেন নাই। ৭৫ সালে শেখ মুজিবের বাকশাল ও সংসদ থেকে পদত্যাগ করে সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন। তিনি আজীবন ন্যায়ের পথে ছিলেন। জেনারেল ওসমানীর মৃত্যৃবার্ষিকীর প্রসঙ্গে গণ অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর বলেন, আজকের এই দিনটি রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন হওয়া উচিত ছিল। সেনাকুঞ্জে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। সেখানে সভাপতিত্ব করার কথা ছিল সেনাপ্রধানকে। কিন্তু প্রতিহিংসার কারণে এই দিনগুলো রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করা হয় না। তিনি বলেন, আমরা চাই না আমাদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে বাইরের কেউ এসে হস্তক্ষেপ করুক। কিন্তু দেশটা এখন যে সঙ্কটের জায়গায় পড়েছে সেখানে আমাদের উন্নয়ন-সহযোগী দেশগুলোর মাধ্যমে এই সরকারের ওপর একটা চাপ তৈরি করতে হবে। তারা যেনো কর্তৃত্বপরায়ণ সরকারের সাথে কাজ না করে। বরং যারা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য, মানুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করছে, গত ১২ বছর সংগ্রাম করছে, হামলা-নির্যাতনের শিকার হয়েছে, তাদের পাশে যেনো উন্নয়ন-সহযোগী দেশগুলো দাঁড়ায়। সে আবেদন দেশের উন্নয়ন-সহযোগী দেশগুলোর কাছে করতে পারি। জেনারেল ওসমানী ফাউন্ডেশনের সভাপতি মো: জাহিদ এ রেজার সভাপতিত্বে ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের মিডিয়া উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম মিন্টুর সঞ্চালনায় আরো উপস্থিত ছিলেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারী পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট মজিবুর রহমান ও মহিববুল্লা বাহার প্রমুখ।