একটি দলের চামচা দিয়ে ইসি গঠন হবে হতাশাজনক: জিএম কাদের

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন নিয়ে চলমান প্রক্রিয়ার মধ্যেই সতর্কতামূলক ইঙ্গিত দিয়েছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের। তিনি বলেন, ইসি গঠনে ‘তালগাছটা আমার’- এমন যেন না হয়। শুরু থেকেই আমরা কমিশন গঠনে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি। শেষ পর্যন্ত যদি একটি দলের চামচা দিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন হয়, তবে তা হবে হতাশাজনক। কমিশনকে ক্ষমতা না দিলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব হবে না। মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জাপা চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয় মিলনায়তনে দলটির ঢাকা মহানগর উত্তরের ২৬টি থানার কমিটি ঘোষণা ও মতবিনিময় সভায় জিএম কাদের এসব কথা বলেন।
নতুন ইসি গঠন আইনকে ‘নতুন মোড়কে পুরোনো জিনিস’ বলে দাবি করে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রমাণ হয়েছে আওয়ামী লীগের কর্মীরাই এখন আর নৌকায় ভোট দিতে চায় না। আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন রাষ্ট্র পরিচালনায় থেকে অনেক জনসমর্থন হারিয়েছে। দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি আর বৈষম্য দেশের মানুষের সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে গেছে। জিএম কাদের বলেন, কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে একটি দেশের নিষেধাজ্ঞার (৭ র‌্যাব কর্মকর্তা ও সংস্থাটির বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার প্রতি ইঙ্গিত করে) কারণে বাংলাদেশের নাম এখন মিয়ানমার ও উত্তর কোরিয়ার পাশে।
অন্যদিকে অনেক জনসমর্থন থাকা সত্ত্বেও বিএনপি এখন ক্ষয়িষ্ণু দলে পরিণত হয়েছে। গণমানুষের কল্যাণে বিএনপির বক্তব্য পরিষ্কার নয়। আওয়ামী লীগের পরিবর্তে বিএনপি ক্ষমতায় এলে দুর্নীতি আর অপরাজনীতি আরও বেড়ে যাবে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি আরও বলেন, এ দুটি দল ১৯৯১ সালের পর থেকে সংসদীয় গণতন্ত্রের নামে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গিয়ে একবার দেশকে দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন করেছিল, কিন্তু দুর্নীতিবিরোধী স্লোগান দিয়ে বিএনপি ক্ষমতায় গিয়ে পরপর চারবার দেশকে দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন করেছে। বিএনপি ক্ষমতায় যাওয়ার পর দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড শুরু হয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় যাওয়ার পর থেকে বিচারবহির্ভূত হত্যা অনেকগুণ বেড়েছে। জাপা চেয়ারম্যান বলেন, দেশের মানুষ বুঝেছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দিয়ে মুক্তি মিলবে না। দেশের মানুষ এ দুটি দলের বিপরীতে জাতীয় পার্টিকে রাষ্ট্রক্ষমতায় দেখতে চায়। আগামী দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগেই দলকে আরও শক্তিশালী করতে নেতাকর্মীদের প্রতি নির্দেশনা দেন জিএম কাদের। এসময় দলের মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, আমরা আর কারও জোটে পা দেবো না। আমরা এককভাবেই ৩০০ আসনে নির্বাচন করতে প্রস্তুতি নিচ্ছি। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ওপর দেশের মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে আছে। এ দুটি দলকে দেশের মানুষ আর চায় না। দেশের মানুষ বিকল্প হিসেবে জাতীয় পার্টিকে রাষ্ট্রক্ষমতায় দেখতে চায়। মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নির্বাচনের জন্য কোনো সমাধান নয়। নির্বাচনের জন্য পূর্ণক্ষমতা দিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করলেই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব। ক্ষমতাহীন কমিশন দিয়ে কখনোই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব হবে না। ঢাকা মহানগর উত্তরের এ প্রতিনিধি সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তর জাপার আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম সেন্টু। এসময় অন্য নেতাকর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন।