সপ্তম ধাপেও প্রাণ গেল

0

নির্বাচনী সহিংসতা বন্ধ হয়নি সপ্তম পর্বেও। এবারও নিহত হয়েছে দু’জন। যার একজন শিশু। এবার প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারে বহু আহত হয়েছে। সপ্তম পর্ব পর্যন্ত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ১১৫ জন নিহত হয়েছেন। আহতের সংখ্যা এর কয়েক হাজার। বেসরকারি হিসেবে মৃত্যুর সংখ্যা আরো বেশি। এবারের ইউপি নির্বাচন যে অনেক সহিংস হতে পারে এমন ধারণা আগে থেকেই পাওয়া যাচ্ছিল। সব ধরনের গণমাধ্যমে বারবার সাবধান করা হয়েছে। সহিংসতা রোধে ব্যাপক পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। নির্বাচনের আগেই তালিকা করে সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও অস্ত্র উদ্ধারে বিশেষ অভিযান পরিচালনার প্রয়োজনীয়তার কথা বলা হয়েছিল। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছিল প্রতিটি একার আপডেট। নির্বিঘেœ শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে হলে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান শুরু করা দরকার। কথাটি জোরালোভাবে সবাই বলেছিল। ইসি বলছে, অস্ত্র উদ্ধারে মাঠ পর্যায়ের পুলিশকে নির্দেশও দিয়েছিল পুলিশ সদর দপ্তর। যদি তাই হয়, তাহলে এতো অস্ত্র নির্বাচন কেন্দ্রে এলো কোথা থেকে? নির্বাচনসংশ্লিষ্ট অনেকেই সহিংসতা ও প্রাণহানির জন্য নির্বাচন কমিশনের অবহেলাকেই দায়ী করছেন। তাঁদের মতে, দলীয় প্রতীক নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন সহিংসতা বেড়ে যাওয়া একটি কারণ। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হওয়ার কারণেই সংঘাত বাড়ে। রাজনৈতিক দাপটে আচরণবিধি আর ধোপে টেকে না। নির্বাচন কমিশনের কাছে এ ক্ষেত্রে আরো বেশি কঠোরতা আশা করেছিল মানুষ। দলনিরপেক্ষভাবে নির্বাচন কমিশনের যে ধরনের শক্ত ভূমিকা থাকা প্রয়োজন ছিল, সেটিও খুব একটা দেখা যায়নি। তাই, কমিশনের বিরুদ্ধে বহু অভিযোগ রয়েছে। অনেকেই বলেছেন, মেয়াদের শেষ নির্বাচনটিও এরা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে পারলো না। অযোগ্যতা, অক্ষমতা, দলদাস ইত্যাকার অভিযোগ নিয়েই চলে যেতে হচ্ছে তাদের।
আমরা জানি, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সহিংসতা কম বেশি হয়ই। তবে আগ্নেয়াস্ত্রের প্রকাশ্য ঝনঝনানি খুবই দুঃখজনক। একেবারেই অনাকাক্সিক্ষত ছিল সহিংসতার ঘটনাগুলো। সোয়া শতাধিক মূল্যবান জীবন ঝরে গেছে নির্বাচনী সহিংসতায়। দেশের মানুষ নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও শক্তিশালী ভূমিকা প্রত্যাশা করে। চূড়ান্তভাবে নির্বাচন কমিশনের ওপরই আস্থাশীল থাকতে চায়। সেই প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। মাঠে কর্মরত প্রশাসনও এর দায় এড়াতে পারে না।
আইন শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর সামনে মারামারি খুনোখুনি হবে আর তারা ধরতে পারবেন না তা মানা যায় না। আশা কারি, পরবর্তী ধাপ সহিংসমুক্ত হবে।