টেবিল টপারদের উড়িয়ে প্লে অফে এক পা সাকিবদের

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ ঢাকায় দুই দলের প্রথম সাক্ষাতে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের সামনে পাত্তাই পায়নি ফরচুন বরিশাল। হেরেছিল ৬৩ রানের বড় ব্যবধানে। সেই পরাজয়ের প্রতিশোধ সিলেটে এসে নিলো সাকিব আল হাসানের দল। এবার তারা কুমিল্লাকে হারালো ৩২রানের ব্যবধানে। একইসঙ্গে সেরা চারের টিকিট প্রায় নিশ্চিত হয়ে গেছে তাদের। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করা বরিশালের সংগ্রহ ছিল ৫ উইকেটে ১৫৫ রান। জবাবে সাকিব, মুজিব, ব্রাভোদের তোপে ৯ উইকেট হারিয়ে ১২৩ রানে থেমেছে ম্যাচ শুরুর আগে টেবিলের শীর্ষে থাকা কুমিল্লার ইনিংস। আট ম্যাচে ১১ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে ওঠার পাশাপাশি প্লে অফে এক পা দিয়ে রাখলো সাকিবের দল। আজ (সোমবার) সন্ধ্যার ম্যাচে খুলনা টাইটানসের বিপক্ষে স্বাগতিক সিলেট সানরাইজার্স হেরে গেলেই প্রথম দল হিসেবে শতভাগ নিশ্চিত হয়ে যাবে বরিশালের প্লে অফ খেলার টিকিট। অন্যথায় সাকিবদের অপেক্ষা করতে হবে সিলেটের বিপক্ষেই নিজেদের পরের ম্যাচের জন্য, যা হবে মঙ্গলবার সন্ধ্যায়।
বরিশালের করা ১৫৫ রানের জবাবে কুমিল্লার শুরুটা ছিল আশা জাগানিয়া। মুজিব উর রহমানের প্রথম ওভারেই দৃষ্টিনন্দন এক কভার ড্রাইভে চার মারেন লিটন দাস। এ আফগান স্পিনারের পরের ওভারে ব্যাকফুটে গিয়ে দারুণ এক অন ড্রাইভ হাঁকান তিনি। কিন্তু বেশি তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে সাকিবের বলে স্ট্যাম্পিং হয়ে ফেরেন ১৯ রান করা লিটন। এর আগে নিজের প্রথম ওভারে কুমিল্লা অধিনায়ক ইমরুল কায়েসকেও সাজঘরে পাঠিয়েছিলেন বরিশাল অধিনায়ক। ম্যাচের প্রথম ইনিংসে ফিফটির পর দ্বিতীয় ইনিংসে শুরুতেই ২ উইকেট নিয়ে দলের জয়ের ভিতটা গড়ে দেন মূলত সাকিবই। এরপর ৩০ বল খেলে ৩০ রান করেন মুমিনুল। যা তেমন কাজে লাগেনি দলের।
পাশাপাশি মাহমুদুল হাসান জয় (৫), মইন আলি (৬), নাহিদুল ইসলাম (১) ও সুনিল নারিনরা (৩) হতাশ করলে ৭০ রানেই ৭ উইকেট হারিয়ে ফেলে কুমিল্লা। লোয়ার অর্ডারে করিম জানাত ১৩ বলে ১৭, তানভির ইসলাম ১৪ বলে ২১, সুমন খান ৮ ও মোস্তাফিজ ৭ রান করে পরাজয়ের ব্যবধান কমান। শেষ পর্যন্ত ৯ উইকেট হারিয়ে ১২৩ রান করে কুমিল্লা। এর আগে এবারের বিপিএলের অলিখিত নিয়মে পরিণত হওয়া টস জিতে আগে ফিল্ডিংয়ের ধারাবাহিকতা সিলেটেও বজায় রাখেন কুমিল্লার অধিনায়ক ইমরুল কায়েস। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই কুমিল্লার বোলারদের ওপর চড়াও হন নিজের অভিষেকে শূন্য রানে আউট হওয়া মুনিম শাহরিয়ার। নাহিদুল ইসলামের করা প্রথম ওভারের শেষ বলে প্রথম বাউন্ডারি হাঁকান মুনিম। নাহিদুলের পরের ওভারে জোড়া ছক্কা আসে তার ব্যাট থেকে। মাঝে মোস্তাফিজুর রহমানের বলে ক্রিস গেইল মারের নিজের প্রথম বাউন্ডারি। চতুর্থ ওভারে আক্রমণে এসে প্রথম বলেই গেইলের কাছে বাউন্ডারি হজম করেন বাঁহাতি স্পিনার তানভির ইসলাম। তবে প্রতিশোধ নিতে সময় নেননি তানভির। ওভারের চতুর্থ বলে কাট শট খেলতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে সুমন খানের হাতে ধরা পড়েন ১০ রান করা গেইল। অপরপ্রান্তে মুনিম ততক্ষণে করে ফেলেছেন ২২ রান। এরপর সুমনের করা পঞ্চম ওভারে দুই চারের সঙ্গে আরও একটি ছক্কা হাঁকান এ ডানহাতি ওপেনার। পরের ওভারে সাজঘরে ফিরে যান নাজমুল হোসেন শান্ত। চলতি আসরে ধুঁকতে থাকা শান্তর ব্যাট থেকে আসে মাত্র ১ রান। এরপর বেশিক্ষণ থাকা হয়নি মুনিমেরও। সুনিল নারিনের বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ফিফটি দ্বারপ্রান্তে পৌঁছলেও, মইন আলির বোলিংয়ে ইমরুলের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরে যান ৪৬ রান করা মুনিম। তৌহিদ হৃদয়কে নিয়ে চতুর্থ উইকেটে দলকে বড় সংগ্রহের ভিত গড়ে দেন সাকিব আল হাসান। মইনের বলে ইনসাইড আউট শটে এক্সট্রা কভার দিয়ে দৃষ্টিনন্দন এক ছক্কা হাঁকান বরিশাল অধিনায়ক। মোস্তাফিজের বলে দারুণ জায়গা বানিয়ে লং অফ ও লং অন দিয়ে হাঁকান পরপর দুই বাউন্ডারি। এর পরের বলেই এক রান নিয়ে চলতি আসরে নিজের দ্বিতীয় ফিফটি পূরণ করেন সাকিব। তবে পঞ্চাশ করার পর আর থাকতে পারেননি বরিশাল অধিনায়ক। করিম জানাতের বলে মুমিনুল হকের হাতে ধরা পড়ে ফিরে যান সাজঘরে। সাকিব আউট হওয়ার পর শেষের ১৭ বলে মাত্র ১৯ রান করতে পেরেছে বরিশাল। যার বড় দায় তৌহিদের। ইনিংসের নবম ওভার থেকে উইকেটে থেকে ৩৭ বলে মাত্র ৩১ রান করেন এ মিডলঅর্ডার ব্যাটার। এক ছয়ের মারে ১০ রান করেন ডোয়াইন ব্রাভো। কুমিল্লার পক্ষে সর্বোচ্চ ২ উইকেট নেন তানভির। এছাড়া করিম, মইন ও মোস্তাফিজের শিকার ১টি করে উইকেট।