প্রতিমন্ত্রীর উপস্থিতিতে দুবার সিদ্ধান্তের পরও যানজটমুক্ত হচ্ছে না যশোর জেনারেল হাসপাতাল

0

বিএম আসাদ ॥ যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালকে যানজটমুক্ত করতে প্রতিমন্ত্রীর উপস্থিতিতে দুবার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। কিন্তু তা কার্যকরে কোন পদপেক্ষ নেয়া হয়নি। ফলে, কোনভাবেই যানজটমুক্ত হচ্ছে না এ হাসপাতাল। কমছে না রোগী ও দর্শনার্থীদের দুর্ভোগ। যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতাল চত্ত্বর এখন শহরে চলাচলকারী লোকজনের গাড়ি পার্কিং স্থানে পরিণত হয়েছে। একটু খোলা জায়গা পেলেই দখল করে নিচ্ছে ইজিবাইক, প্রাইভেটকার, রিকশা ভ্যান, বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স, মোটরসাইকেলসহ নানা রকম বাহন। কেউ রোগী নিয়ে আসার অজুহাতে হাসপাতাল ক্যাম্পাসে অবস্থান করছেন। কেউবা গ্যারেজে টাকা দিয়ে যানবাহন রাখছেন। যানবাহনের কারণে হাসপাতালে চত্ত্বরে অসুস্থ রোগী ও দর্শনার্থীদের চলাচল দায় হয়ে পড়েছে। সাধারণ মানুষের একটু খোলা জায়গায় দাঁড়িয়ে স্বস্তি নেয়ার সুযোগ নেই। দারুণ অস্বস্তিকর পরিবেশ বিরাজ করেছে যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে। সূত্র জানিয়েছে, হাসপাতালের যানজট ও জনদুর্ভোগের প্রধান কারণ ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারীদের গ্যারেজ। নিয়ম হচ্ছে, কর্মচারীরা নিজেদের বাহন রাখার জন্যে গ্যারেজ করতে পারে। সেটি হবে ছোট পরিসর। এমন ছোট পরিসরে একটি চালা ঘর আছে। সেটাকে পুঁজি করে গ্যারেজের আয়তন বাড়ানো হয়েছে বৃহৎ আকারে। যেখানে হাসপাতালে আসা লোকজন রোগী রেখে বিশ্রাম নিতেন সে জায়গাটিও দখল করে ব্যাপক পরিসরে পরিচালনা করা হচ্ছে গ্যারেজ। নামে সাইকেল গ্যারেজ হলেও সব রকম যানবাহন রাখা হয় এ গ্যারেজ। প্রতিদিন ১ হাজার থেকে দু’হাজার গাড়ি পার্কিং করা হয় গ্যারেজে। এ গ্যারেজ হাতে প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা আয় হয়। শহরের মধ্যবর্তী স্থান হওয়ায় সাধারণ মানুষ ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত লোকজন হাসপাতাল গ্যারেজে তাদের গাড়ি রেখে নিশ্চিন্তে কাজ করেন। নিলামের মাধ্যমে গ্যারেজটি লিজ দেয়া হলে, প্রতি বছর মোটা অংকের রাজস্ব আয় হতো। কিন্তু ব্যক্তি স্বার্থের কারণে তা করা হচ্ছে না। হাসপাতালের উন্নয়ন খাতে প্রতিমাসে ২০ হাজার টাকা দিয়ে বাকী টাকা সংশ্লিষ্ট সকলে লুটপাট করে খাচ্ছেন। ফলে, হাসপাতালের প্রবেশ পথের পাশে অবস্থিত বৃহৎ পরিসরে এ গ্যারেজে দৈনন্দিন শত শত সৃষ্টি হচ্ছে ব্যাপক যানজট। এ কারণে অনেকে ক্যাম্পাসের অন্যান্য স্থানেও রাখছেন তাদের যানবাহন। যানজটমুক্ত নির্মল পরিবেশ রক্ষার জন্যে হাসপাতালের সামনে ঘোপ নওয়াপাড়া রোডটি সকাল ৭টা হতে দুপুর ২টা পর্যন্ত একমুখী চলাচলের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল ২০২১ সালের ১২ সেপ্টেম্বর। এদিন হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় সভাপতি হিসেবে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য এ সিদ্ধান্ত নেন। এরপর গত ১০ জানুয়ারি ওই কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্যরে সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় একই সিদ্ধান্ত পুনরায় বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। কিন্তু সিদ্ধান্ত গ্রহণের পাঁচদিন পার হলেও তা কার্যকর হয়নি। ফলে, এবারও যানজট মুক্ত করার সিদ্ধান্তটি ফাইলবন্দি হয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এব্যাপারে তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. আক্তারুজ্জামানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, হাসপাতালের একটি গেট এখন খোলা থাকে। লোক সংখ্যা ও যানবাহন বেড়েছে। সুতরাং যানজটমুক্ত করা অত্যন্ত কষ্টকর। বৃহৎ পরিসরে কর্মচারীদের বাণিজ্যিক গ্যারেজ পরিচালনা ও জনগণের অসুবিধা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে তাদের সাথে বসতে হবে। তারপর দেখা যাক কি উপায় বের করা যায়।