‘বীরাঙ্গনা’ মাজেদাকে কেন ভাতা দেওয়া হবে না জানতে রুল

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ ঠাকুরগাঁওয়ের ‘বীরাঙ্গনা’ মাজেদাকে কেন ভাতা দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে তাকে কেন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হবে না তাও জানতে চাওয়া হয়। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের। অন্যদিকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে মাজেদাকে অন্তর্ভুক্ত করে জারি করা গেজেট বাতিলের সিদ্ধান্ত স্থগিত করা হয়েছে। বুধবার (২২ ডিসেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলিরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন মাজেদার আইনজীবী ব্যারিস্টার সাবরিনা জেরিন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন তিনি। তার সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট আব্দুল কায়ুম। এর আগে মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর) মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি এবং বন্ধ হওয়া ভাতা ফেরত পেতে হাইকোর্টে রিট করেন মাজেদা। তিনি ‘বীরাঙ্গনা’ হিসেবে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পেয়ে ২০১৬ সাল থেকে চার বছরের বেশি সময় পেয়েছিলেন সরকারি ভাতা ও সুযোগ-সুবিধা।
ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলার রাউতনগর গ্রামের মৃত তসলিম উদ্দীনের স্ত্রী মাজেদা। তাকে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দিয়ে ২০১৬ সালের ২১ জুলাই গেজেট প্রকাশ করে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়। সেই থেকে তিনি প্রতি মাসে ভাতাসহ অন্যান্য সরকারি সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছিলেন। তবে একই এলাকার মৃত দারাজ উদ্দিনের স্ত্রী আরেক মাজেদার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে যাচাই-বাছাই ও শুনানির পর ২০২০ সালের ২০ অক্টোবর আরেকটি গেজেট জারি করা হয়। সে গেজেটে মৃত দারাজ উদ্দিনের স্ত্রী মাজেদাকে বীরাঙ্গনা স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এরপর বন্ধ হয়ে যায় তসলিম উদ্দীনের স্ত্রী মাজেদার ভাতা ও সরকারি সুযোগ-সুবিধা। মাজেদার আইনজীবী ব্যারিস্টার সাবরিনা জেরিন বলেন, আমার মক্কেল যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে বার বার চিঠি দিয়েও তার স্বীকৃতি ও ভাতা বাতিলের কোনো কারণ জানতে পারেনি। ফলে তার কারণ জানতে ও ভাতা পুনর্বহাল চেয়ে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল বরাবর লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়। নোটিশ পাঠানোর পরও কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় রিট করা হয় হাইকোর্টে। সে রিটে তসলিম উদ্দীনের স্ত্রী মাজেদার মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি এবং তার ভাতা ও সরকারি সুযোগ-সুবিধা পুনর্বহাল চাওয়া হয়। সেই রিটের শুনানি নিয়ে রুল জারিসহ আদেশ দেন আদালত। এই আইনজীবী জানান, ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মুক্তিযুদ্ধের সময় নির্যাতিত নারীদের ‘বীরাঙ্গনা’ স্বীকৃতি দিয়ে তাদের সম্মান জানান। আর ২০১৪ সালের ১০ অক্টোবর বীরাঙ্গনাদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল। পরের বছরের ২৯ জানুয়ারি জাতীয় সংসদে এই প্রস্তাব পাস হয়।