১০৫ কেজি স্বর্ণ উদ্ধার: বিমানের টেকনিশিয়ান সিরাজুলের জামিন স্থগিত

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ১০৫ কেজি স্বর্ণের চালান আটকের ঘটনায় গ্রেফতার বাংলাদেশ বিমানের জুনিয়র টেকনিশিয়ান মো. সিরাজুল ইসলামকে জামিন দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। তার সেই জামিন আদেশ স্থগিত করেছেন চেম্বার আদালত। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. মো বশির উল্লাহ আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদন শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর) আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের চেম্বার আদালত এই আদেশ দেন। আদালতে আজ আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. মো. বশির উল্লাহ। অন্যপক্ষে কোনো আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না। এর আগে গত ১২ ডিসেম্বর হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ বিমানের ওই জুনিয়র টেকনিশিয়ানকে ছয় মাসের জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দেন। ওই আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল করেন রাষ্ট্রপক্ষ। সেটি শুনানি নিয়ে আদালত এই আদেশ দেন। চেম্বার আদালতে জামিন স্থগিত হওয়া আসামির নাম মামলায় ২২ নম্বরে রয়েছে। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. মো. বশির উল্লাহ জানান, ২০১৪ সালের ২৬ এপ্রিল হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দুবাই থেকে আসা বাংলাদেশ বিমানের ৪ নং বোর্ডিং ব্রিজে অবস্থানরত বিজি-০৫২ ফ্লাইট তল্লাসি করে এসব স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়। বিমানটি দুবাই-ঢাকা-সিলেট পথে চলাচল করে। বিমানের সাতটি টয়লেটের কমোডে বিশেষ কায়দায় ১৪টি প্যাকেটে লুকানো ছিল এসব সোনার বার। শুল্ক করাদি ফাঁকি দেওয়ার উদ্দেশ্যে এসব সোনা আনা হয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। ১০৫.৪০ কেজি ওজনের ৯০৪টি বারের বাজারমূল্য প্রায় ৪৭ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এটি দেশে আটক দ্বিতীয় বৃহত্তম স্বর্ণের চালান। স্বর্ণবার আনার ওই কার্যক্রম দি কাস্টমস অ্যাক্ট, ১৯৬৯ এর সেকশন-২ (এস) এ ‘চোরাচালান’ হিসেবে সংজ্ঞায়িত।
পরে এ ঘটনায় বিমান বন্দর থানার ডিউটি অফিসার (এসআই) মোস্তাফিজুর রহমান মামলা করেন। এতে প্রথমে আসামি করা হয় ১২ জনকে। প্রথমে একজনকে আটক করা হলেও তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পরে ১২ জনকে আসামি করা হয়। আর ১০ জনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়। তাদের স্বীকারোক্তির ওপর ভিত্তি করে চিহ্নিত আসামিদের মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ওই মামলায় ২০১৭ সালের ১৯ জানুয়ারি চার্জশিট দাখিল করা হয়। সেখানে মোট ২৫জনকে আসামি করা হয়। মামলায় সাক্ষী রয়েছেন ৫৬ জন। এরপর কয়েক দফা চার্জশিট দেওয়া হয় বলেও জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী। এ ঘটনায় করা মামলায় বিমানের জুনিয়র টেকনিশিয়ান চলতি বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর আত্মসর্মপণ করে জামিন চান। পরে তাকে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর তিনি হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন। গত ১২ ডিসেম্বর তাকে জামিন দেন হাইকোর্ট। এ জামিন স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করা হয়। মঙ্গলবার শুনানি শেষে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত জামিনাদেশ ৬ সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছেন বলে জানান মো. বশির উল্লাহ। এর আগে ওই ঘটনায় গ্রেফতার বিমানকর্মী আনিছ উদ্দিন ভূঁইয়াকে ৫ দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। এ ঘটনায় আনিছের এক বন্ধুর নামও পাওয়া গেছে। বিমানের মেকানিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট ওই ব্যক্তির নাম মাসুদ। তিনিই স্বর্ণের চালান আসার খবর জানিয়ে এসএমএস পাঠিয়েছিলেন। বিমান ও পুলিশের তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।