খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আমরা কিছুই করতে পারিনি: রিজভী

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আমরা কিছুই করতে পারিনি বলে মন্তব্য করেছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। বৃহস্পতিবার (১৮ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৫তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘তিনি (খালেদা জিয়া) আজ হাসপাতালে অসুস্থতার সঙ্গে লড়ছেন। তার রেখে যাওয়া কার্যক্রম আজও আমাদের অনুপ্রাণিত করে। যেভাবে মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী শুরু করেছিলেন, জিয়াউর রহমান ও বেগম জিয়া সেটা ধারণ করেছিলেন। এই পতাকা কখনই মাটিতে নুয়ে পড়বে না। অত্যন্ত বেদনার সঙ্গে বলতে চাই, আমরা কি করেছি বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য? আমরা কি করতে পেরেছি? কিছুই করতে পারিনি। বিএনপির গৌরবময় ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা হাজারও সফলতা ও কৃতিত্বের মধ্যে বেগম জিয়াকে মুক্ত করতে না পারা কলঙ্কজনক একটি ক্ষত। এ ব্যর্থতা আপনার-আমার সবার। এ গ্লানি মোচনের দায়িত্ব আমাদের সবার।’ তিনি বলেন, ‘কী ভয়ঙ্কর নির্যাতন-নিপীড়নের মধ্যে তিনি (খালেদা জিয়া) আজ গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে। সেদিন দলের পক্ষ থেকে অনেকেই বলেছেন, তাকে যে জায়গায় রাখা হয়েছে সেখানে সাধারণ মানুষ থাকতে পারে না। কয়েকদিন আগে তার একটি চোখে অপারেশন হয়, যে চোখে অপারেশন হয়েছে সেই চোখের মধ্যে বালু পড়েছে। কত বড় একটি ভয়ঙ্কর যন্ত্রণা, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের মধ্যে তাকে রাখা হয়েছে। নির্যাতন-নিপীড়নের কারণে আজ তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।’
প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, যে আমাকে হত্যা করতে চেয়েছিল একুশে আগস্টে, আমার পরিবারের যাদের হত্যা করা হয়েছে এর পেছনে তার মদত রয়েছে। বেগম খালেদা জিয়া বা বিএনপি সরকারের এগুলোর পেছনে মদত রয়েছে। এতে স্পষ্ট প্রমাণিত হয় এটি প্রতিহিংসা। এখানে আইন নেই, বিচার নেই, প্রতিহিংসার কারণে আজকের জমিদারের যে শাসন, জমিদারদের যারা খাজনা দিত না তাদের নিজস্ব কারাগারে রাখতেন। আজ শেখ হাসিনা বাংলাদেশের কারাগারগুলোকে তার ব্যক্তিগত ওই ধরনের কারাগার বানিয়েছেন। তিনি তাদের প্রতি অসন্তুষ্ট, তারা কারাগারে থাকবেন। এটা প্রতিনিয়ত তার কথার মধ্যে বেরিয়ে আসছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া কোনো অন্যায় করেননি, তাকে সাজা দেওয়া যায় না। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) সাজা দিয়েছেন জোর করে, তিনি সাজা দিয়েছেন প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে । আর সেই সাজার কারণে এখন বেগম জিয়া অসুস্থ হয়ে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি।’
রিজভী বলেন, ‘জাতীয়তাবাদী রাজনীতির প্রতি মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, জিয়াউর রহমান, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া আজও আমাদের প্রেরণা জোগায়। সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ফারাক্কা মিছিল থেকে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে আমরা দেখেছি আরেকটি ফারাক্কা মিছিল, আমরা দেখেছি টিপাই মুখের জন্য তার সোচ্চার কণ্ঠ, আমরা দেখেছি তিস্তা নদীর পানির জন্য তার সোচ্চার কণ্ঠ, আবার দেখেছি সীমান্ত হত্যার প্রতিবাদে বেগম জিয়ার সোচ্চার কণ্ঠ। যখন এ সরকার নতজানু যখন এ সরকার ক্ষমতার জন্য নিজের আত্মা বিক্রি করে দিয়েছে তখন আমরা দেখেছি বেগম খালেদা জিয়ার সাহসী উচ্চারণ।’ বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমানের সভাপতিত্বে ও কৃষকদলের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা এস কে সাদীর সঞ্চালনায় সভায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, শওকত মাহমুদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, আব্দুস সালাম, শ্রমিক দলের আনোয়ার হোসেন, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাদেক খান, যুবদলের সুলতান সালাউদ্দীন, ছাত্রদলের ইকবাল হোসেন শ্যামল, কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, আমিনুর রহমান আমিন প্রমুখ বক্তব্য দেন।