যশোরের আলোচিত সেই সংঘবদ্ধ ধর্ষণের মামলাটি ছিল নারীর মিথ্যা অভিযোগ

0

স্টাফ রিপোর্টার॥ ৯ মাস আগে খুলনার ফুলতলা এলাকার এক নারী তাকে যশোর সদরের বাহাদুরপুরে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়েছে এমন অভিযোগ এনে ৩ ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোতয়ালি থানায় মামলা করেছিলেন। কিন্তু তদন্তে তাকে ধর্ষণের কোনো সত্যতা পায়নি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। শুধু তাই নয়, ওই যুবতী অসৎ উদ্দেশ্যে ইতোপূর্বে বিভিন্ন থানায় এ ধরনের কয়েকটি মামলা করেছিলেন বলেও তথ্য পেয়েছে সংস্থাটি। পিবিআইর একটি সূত্র জানায়, ওই যুবতীর আসল বাড়ি খুলনার ফুলতলা থানার খানজাহানপুর এলাকায়। বর্তমানে যশোরের অভয়নগর উপজেলার কাদিরপাড়ায় তার এক পাতানো পিতার বাড়িতে বসবাস করেন। চলতি বছরের ১৩ ফেব্র“য়ারি যুবতী তাকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ এনে ৩ ব্যক্তির বিরুদ্ধে যশোর কোতয়ালি থানায় একটি মামলা (নং-৮৭) করেন। আসামিরা হলেন, খুলনার ফুলতলা থানার তত্ত্বীপুর গ্রামের রসময় কুণ্ডুর ছেলে মানিক কুণ্ডু (৩৭), আলকা এলাকার নব খাঁ’র ছেলে আনোয়ার হোসেন (৩০) ও বাগেরহাটের চিতলমারী থানার হিজলা এলাকার আসমত আলী কাজীর ছেলে রিয়াজুল (৩৫)।
মামলায় ওই যুবতীর উল্লেখ করেছিলেন, ‘তিনি স্বামী পরিত্যক্তা। তার একটি পুত্রসন্তান রয়েছে। অপরদিকে অভিযুক্তরা তার পূর্ব পরিচিত। কয়েক বছর ধরে তাদের সাথে তার কথাবার্তা হতো, সাক্ষাতও হয়। এর মধ্যে মানিক কুণ্ডু তাকে বিভিন্ন সময় চাকরির প্রতিশ্রুতি দেন। গত ১২ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় মানিক কুণ্ডু তাকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে অভয়নগর থেকে যশোরে ডেকে নেন। মণিহার মোড়ে এলে অভিযুক্ত অপর দুই জনের সাথে তার দেখা হয়। এরপর তারা ৪ জনে মিলে একটি হোটেলে নাস্তা করেন। নাস্তা শেষে অভিযুক্ত ৩ জন তাকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে ইজিবাইকে করে বাহাদুরপুরস্থ প্রাণি সম্পদ অফিসের বিপরীতে জনৈক খলিলের নির্মাণাধীন ঘরের ভেতরে নিয়ে যান। সেখানে তারা তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন। এক পর্যায়ে তিনি চিৎকার দিলে অভিযুক্তরা তাকে রেখে পালিয়ে যান। এরপর তিনি ওই ঘর থেকে বের হয়ে একজন পথচারীর সহায়তায় যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন।’ পিবিআই সূত্র জানায়, প্রথম থেকেই তারা গুরুত্বের সাথে মামলাটি তদন্ত করছে। সেই সময় যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের দেয়া রিপোর্টে ভিকটিমকে ধর্ষণের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। সর্বশেষ তারা ঢাকা সিআইডি’র ফরেনসিক রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছিলো। সম্প্রতি সেখান থেকে রিপোর্ট এসেছে। এই রিপোর্টেও ভিকটিমকে ধর্ষণের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। তবে জানা যায়নি কেন ওই নারী উল্লিখিতদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছিলেন। যোগাযোগ করা হলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই ইনসপেক্টর মোনায়েম হোসেন এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। সূত্রটি আরো জানায়, ওই যুবতী অসৎ উদ্দেশ্যে বিভিন্ন থানায় ইতোপূর্বে আরো কয়েকটি সংঘবদ্ধ ধর্ষণের মামলা করেছিলেন বলে তথ্য পাওয়া গেছে। খুলনার লবণচরা থানাতেও এ ধরনের একটি মামলা করা হয়েছিলো।