বেনাপোলের ওপারে পেট্রাপোলে চাঁদাবাজদের কাছে জিম্মি আমদানিকারকরা

0

বেনাপোল (যশোর) সংবাদদাতা॥ বেনাপোল বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে ভারতের পেট্রাপোল কালিতলা পার্কিংয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে জটিলতা তৈরি করে ট্রাক থেকে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। চাঁদার পুরো টাকাটাই পরিশোধ করতে হয় বাংলাদেশি আমদানিকারকদের। বাংলাদেশে একটি আমদানি পণ্য বোঝাই ট্রাক প্রবেশ করতে সময় লাগছে ৩০ থেকে ৩৫ দিন।
অভিযোগ পাওয়া যায়, আমদানি পণ্য বোঝাই ট্রাক থেকে চাঁদা আদায়ের জন্য সেখানে গড়ে উঠেছে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট। ট্রাক থেকে মোটা অঙ্কের চাঁদা আদায় ও পণ্য প্রবেশে দীর্ঘসূত্রিতার কারণে বড়বড় আমদানিকারকরা বেনাপোল বন্দর ছেড়ে চলে গেছেন। সোমবার বিষয়টি নিশ্চিত করে বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার মো. আজিজুর রহমান বলেছেন, ইতিমধ্যে রাজস্ব আদায়ে বড় ধরনের ধস নামতে শুরু করেছে। বেনাপোল বন্দরের ওপারে ভারতের পেট্রাপোল কালিতলা পার্কিংয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছে ৫ হাজার পণ্যবোঝাই ট্রাক। এ কারণে দু দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে বড় ধরনের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।
তিনি বলেন, ভারতীয় কাস্টমস, বন্দর ও সেখানকার ব্যবসায়ীদের সাথে একাধিকবার বিষয়টি সমাধানের জন্য বৈঠক করলেও তা ফলপ্রসূ হয়নি। ভারত বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের ডাইরেক্টর মতিয়ার রহমান জানান, বেনাপোল বন্দরের ওপারে ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে গড়ে উঠেছে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট। বনগাঁও পৌরসভার নেতৃত্বে প্রতিটি পণ্যবোঝাই ট্রাক থেকে প্রতিদিন ২ হাজার টাকা করে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। পণ্যবোঝাই একটি ট্রাক দেশে প্রবেশ করতে ৩০ থেকে ৩৫ দিন সময় লাগছে। এ সময় ওপারে আটকে থাকলে তাকে ৬০ হাজার টাকা পরিশোধ করতে হচ্ছে। চাঁদার পুরো টাকা পরিশোধ করতে হচ্ছে আমদানিকারকদের। আমদানিকারকরা মোটা অঙ্কের আর্থিক লোকসানে পড়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছে।
ভারতের পেট্রাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস স্টাফ ওয়েল ফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চন্দ্র জানান, কালিতলা পার্কিংয়ে দীর্ঘদিন পণ্যবোঝাই ট্রাক আটকে থাকায় মোটা অঙ্কের ডেমারেজ গুনতে হচ্ছে ওপারের (বাংলাদেশের) আমদানিকারকদের এটা সত্য। সিরিয়ালের নামে এসব ট্রাক কালিতলা পার্কিংয়ে ঢোকানো হচ্ছে বনগাঁও পৌর সভার তত্ত্বাবধানে। পেট্রাপোল বন্দরের তত্ত্বাবধানে সিরিয়াল কার্যক্রম সম্পন্ন হলে চাঁদাবাজি বন্ধ হবে এবং দ্রুত পণ্য রপ্তানি করা সম্ভব হবে। বেনাপোল কাস্টম ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরোয়ার্ডিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন জানান, দেশের ৭৫ ভাগ শিল্প প্রতিষ্ঠান ও গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রিজের কাঁচামালের পাশাপাশি বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য আমদানি হয় এ বন্দর দিয়ে। পণ্য আমদানিতে দীর্ঘসূত্রিতার কারণে অনেক আমদানিকারক এ বন্দর ছেড়ে চলে গেছে অন্যত্র।